ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী অঞ্জনা মাস্টার্স পাস করে বেকার , সংগীতে ও রয়েছে তার দারুণ প্রতিভা !

কুষ্টিয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক মেয়ে। অন্ধত্বকে জয় করে তিনি অর্জন করেছেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। অভাবের সংসারে জন্ম নেওয়া এই অঞ্জনা আজ সবার অনুপ্রেরণা। টিউশন করে সংসারের হালধরা অঞ্জনার স্বপ্ন ভালো একটা চাকরির। সংগীত সাধনাতেও পিছিয়ে নেই এই প্রতিবন্ধী।
কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মান্দারী হালদারের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট অঞ্জনা হালদার। কিন্তু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ায় অঞ্জনার বাবা-মায়ের যেন আপসোসের সীমা ছিল না। তারা নানা রকমের কটুক্তি করতেন অঞ্জনাকে নিয়ে। তবুও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই সন্তানকে অতি আদরে বড় করে তোলেন বাবা-মা।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় অঞ্জনাকে ভর্তি করা হয় স্কুলে। অনেক অসহযোগিতা আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি।
অঞ্জনা বলেন, ‘আমি যখন স্থানীয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন পরিচিতরা যেমন নানা রকম টিপ্পনী কাটত, তেমনি শিক্ষকরাও কথা শোনাতে ছাড়তেন না। সে সময় এক শিক্ষক বলেছিলেন, আমি কলমে লিখে দিতে পারি, এই মেয়ে কোনো দিন এসএসসি পাস করতে পারবে না।
অঞ্জনা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শেষ ধাপ অর্থাৎ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে নিয়েছেন কঠোর অধ্যাবসায়ে। পাশাপাশি তিনি সংগীত চর্চাও করেন পরম যতেœ। এরই মধ্যে সংগীতে স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
অঞ্জনা বলেন, ‘জন্ম থেকেই দারিদ্র্যতার সঙ্গে নিরন্তর লড়াই আমার। কিছু দিন আগে সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী চা দোকানি বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
এ কারণে সংসারে অভাব-অনটন আরও বেড়েছে। কয়েকটি টিউশন করে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছি। তবে অনেকেই আমার কাছে ছেলেমেয়েদের পড়াতে চান না। গান শেখাতেও চান না।
অঞ্জনার প্রত্যাশা যোগ্যতানুযায়ী একটি সরকারি চাকরির। চাকরি পেলে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চান তিনি।
অঞ্জনার বাবা মান্দারী হালদার বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছি। তবে মেয়ে এখনো একটি ভাল চাকরি না পাওয়ায় দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছি। আমার মেয়ের দিকে তাকিয়ে হলেও একটা সরকারি চাকরি চাই।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

পত্রিকার সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে হত্যাচেষ্টা মামলায় কুষ্টিয়ার সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ায় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী অঞ্জনা মাস্টার্স পাস করে বেকার , সংগীতে ও রয়েছে তার দারুণ প্রতিভা !

আপডেট টাইম : ০৫:২২ অপরাহ্ন, রবিবার, ৩০ মে ২০২১
ইসমাইল হোসেন বাবু, কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধিঃ :
কুষ্টিয়ার দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এক মেয়ে। অন্ধত্বকে জয় করে তিনি অর্জন করেছেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। অভাবের সংসারে জন্ম নেওয়া এই অঞ্জনা আজ সবার অনুপ্রেরণা। টিউশন করে সংসারের হালধরা অঞ্জনার স্বপ্ন ভালো একটা চাকরির। সংগীত সাধনাতেও পিছিয়ে নেই এই প্রতিবন্ধী।
কুষ্টিয়া শহরের আমলাপাড়া এলাকার বাসিন্দা মান্দারী হালদারের চার সন্তানের মধ্যে সবার ছোট অঞ্জনা হালদার। কিন্তু দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হয়ে জন্ম নেওয়ায় অঞ্জনার বাবা-মায়ের যেন আপসোসের সীমা ছিল না। তারা নানা রকমের কটুক্তি করতেন অঞ্জনাকে নিয়ে। তবুও দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী এই সন্তানকে অতি আদরে বড় করে তোলেন বাবা-মা।
বয়স বাড়ার সাথে সাথে পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় অঞ্জনাকে ভর্তি করা হয় স্কুলে। অনেক অসহযোগিতা আর তুচ্ছ-তাচ্ছিল্যতার মধ্যেও শেষ পর্যন্ত স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেছেন তিনি।
অঞ্জনা বলেন, ‘আমি যখন স্থানীয় প্রতিবন্ধী বিদ্যালয়ে ভর্তি হই, তখন পরিচিতরা যেমন নানা রকম টিপ্পনী কাটত, তেমনি শিক্ষকরাও কথা শোনাতে ছাড়তেন না। সে সময় এক শিক্ষক বলেছিলেন, আমি কলমে লিখে দিতে পারি, এই মেয়ে কোনো দিন এসএসসি পাস করতে পারবে না।
অঞ্জনা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার শেষ ধাপ অর্থাৎ স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করে নিয়েছেন কঠোর অধ্যাবসায়ে। পাশাপাশি তিনি সংগীত চর্চাও করেন পরম যতেœ। এরই মধ্যে সংগীতে স্বীকৃতিও পেয়েছেন।
অঞ্জনা বলেন, ‘জন্ম থেকেই দারিদ্র্যতার সঙ্গে নিরন্তর লড়াই আমার। কিছু দিন আগে সংসারের একমাত্র উপার্জনকারী চা দোকানি বাবা সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন।
এ কারণে সংসারে অভাব-অনটন আরও বেড়েছে। কয়েকটি টিউশন করে সংসারের হাল ধরার চেষ্টা করছি। তবে অনেকেই আমার কাছে ছেলেমেয়েদের পড়াতে চান না। গান শেখাতেও চান না।
অঞ্জনার প্রত্যাশা যোগ্যতানুযায়ী একটি সরকারি চাকরির। চাকরি পেলে নিজের পায়ে দাঁড়ানোর পাশাপাশি পরিবারের মুখে হাসি ফোটাতে চান তিনি।
অঞ্জনার বাবা মান্দারী হালদার বলেন, ‘অনেক কষ্ট করে মেয়েকে পড়ালেখা করিয়েছি। তবে মেয়ে এখনো একটি ভাল চাকরি না পাওয়ায় দিন দিন হতাশ হয়ে পড়ছি। আমার মেয়ের দিকে তাকিয়ে হলেও একটা সরকারি চাকরি চাই।


প্রিন্ট