কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে রাতে ঘুমন্ত অবস্থায় নানাবাড়ি থেকে হারিয়ে যাওয়া শিশুর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। আজ বুধবার বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে প্রায় ৭০০ মিটার দূরে একটি পাটখেতের পাশ থেকে তার নিথর দেহ উদ্ধার করা হয়। লাশের সুরতহাল শেষে ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
এর আগে গত সোমবার রাত আনুমানিক ১০টার দিকে কুমারখালী উপজেলার বাগুলাট ইউনিয়নের আদাবাড়িয়া গ্রামে নানা মোহন মণ্ডলের ঘর থেকে ঘুমন্ত অবস্থায় ইসরাফিল শেখ নামের আড়াই বছর বয়সী ওই শিশুকে কে বা কারা নিয়ে যায়।
ঘটনাস্থল থেকে কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকিবুল ইসলাম বলেন, বিকেলে এক কিশোর ছাগল চরাতে গিয়ে শিশুটির লাশ পড়ে থাকতে দেখে। পরে স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছ থেকে খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে। পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেছেন। লাশটি ফুলে গেছে। ময়নাতদন্তের পর মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
শিশু ইসরাফিল উপজেলার চাঁদপুর ইউনিয়নের আনন্দনগর গ্রামের কৃষক জিয়াউর রহমান ও গৃহিণী রেহেনা খাতুনের ছেলে। তিন কন্যাসন্তানের পর একমাত্র ছেলেসন্তান পেয়ে খুশি হয়েছিলেন স্বজনেরা। এর মধ্যে আজ শিশুটির লাশ উদ্ধার হলো।
স্বজন ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, সোমবার বেলা ১১টার দিকে ছেলে ইসরাফিলকে নিয়ে বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন রেহেনা। রাতে শিশু ইসরাফিল, মা রেহেনা ও নানি রেনু খাতুন দরজায় খিল না লাগিয়ে ঘুমিয়েছিলেন। হঠাৎ রাত ১০টার দিকে ঘুম ভেঙে রেহেনা দেখেন, ছেলে নেই। তখন তাঁর চিৎকার-চেঁচামেচিতে স্বজন ও প্রতিবেশীরা ছুটে আসেন এবং সম্ভাব্য স্থানে খোঁজাখুঁজি শুরু করেন। গতকাল মঙ্গলবার এলাকায় মাইক দিয়ে প্রচারও করা হয়।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, আজ বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ি থেকে ৭০০ মিটার দূরে পাটখেতের পাশে স্থানীয় এক কিশোর শিশুটির লাশ পড়ে থাকতে দেখে। এরপর সে দৌড়ে গিয়ে এলাকার কয়েকজনকে জানায়। খবর পেয়ে কুমারখালী থানার ওসিসহ পুলিশ সদস্যরা ঘটনাস্থলে যায়। শিশুটির পরিবারের সদস্যরা লাশ শনাক্ত করেন। তবে শিশুটির মা–বাবা সেখানে ছিলেন না। শিশুটির সন্ধানে তাঁরা পাশের ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলায় এক কবিরাজের কাছে গিয়েছিলেন বলে জানা গেছে। ছেলের লাশ পাওয়ার খবর পেয়ে তাঁরা রওনা দিয়েছেন। লাশ উদ্ধারের খবর জানাজানির পর গ্রামবাসী মাঠে ভিড় করেন। তাঁরা এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন।
কুমারখালী থানার ওসি আকিবুল ইসলাম বলেন, বাচ্চা হারানোর ঘটনায় থানায় চুরির অভিযোগে মামলা হয়েছিল। তবে কাউকে আটক বা গ্রেপ্তার করা যায়নি। পুলিশ বিষয়টি গভীরভাবে তদন্ত করছে। জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করতে ইতিমধ্যে পুলিশের একাধিক দল মাঠে কাজ করছে।
প্রিন্ট