যশোর জেলায় গ্রাম আদালত কার্যক্রমের অগ্রগতি পর্যালোচনা ও করণীয় শীর্ষক অর্ধ- বার্ষিক সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। দাতা সংস্থা ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ও ইউএনডিপি এবং সরকারের যৌথ অর্থায়নে স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের আওতায় স্থানীয় সরকার বিভাগ কর্তৃক বাস্তবায়িত বাংলাদেশে গ্রাম সক্রিয়করণ তৃতীয় পর্যায় প্রকল্পের মাধ্যমে ইউনিয়ন পরিষদের গ্রাম আদালতকে সক্রিয় করার লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন যশোর রোববার বিকেলে এই সভার আয়োজন করে। জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথির বক্তবে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আবরাউল হাছান মজুমদার বলেন, ‘গ্রাম আদালতে দায়ের হওয়া মামলা সংশ্লিষ্ট আইন অনুযায়ী আপোস- মীমাংসার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করা যায়। মামলা মোকদ্দমা ছাড়াই আদালতের বাইরে নিজেদের মধ্যে বসে আলাপ- আলোচনার ভিত্তিতে সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে গ্রাম আদালত। এটি বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির একটি ক্ষেত্র তৈরি করেছে।’
তিনি আরো বলেন, ‘গ্রাম আদালত পরিচালনায় ইউনিয়ন সচিবরা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করেন। এক্ষেত্রে নিজের দায়িত্ব যথার্থভাবে পালনের পাশাপাশি ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠায়ও তাদের ভূমিকা রাখতে হবে। অন্যায়ের শিকার মানুষের শেষ আশ্রয়স্থল হলো আদালত। তাই আদালতের শরণাপন্ন মানুষেরা যাতে ন্যায় বিচার পান সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
সমন্বয় সভায় সভাপতিত্ব করেন জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের স্থানীয় সরকার বিভাগের উপ- পরিচালক মোঃ রফিকুল হাসান। বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট কমলেশ মজুমদার, মণিরামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জাকির হোসেন, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি বাবু মনতোষ বসু, যশোরের কাগজের যুগ্ম সম্পাদক সালমান হাসান রাজিব প্রমুখ। প্রকল্পের লক্ষ্য ,উদ্দেশ্য ও কার্যক্রম এবং প্রকল্পের অগ্রগতির তথ্য উপস্থাপন করেন প্রকল্পের যশোর জেলার ডিস্ট্রিক ম্যানেজার অ্যাড. মহিতোষ কুমার রায়।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন যশোরের আট উপজেলার নির্বাহী কর্মকতা ও সদর, মণিরামপুর, অভয়নগর এবং বাঘারপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদের সচিববৃন্দ।
সভায় বলা হয়, প্রকল্প শুরুর পর চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে মে ২০২৪ পর্যন্ত যশোর জেলায় গ্রাম আদালতে মামলা দায়ের হয় ৩৩৮টি। সরাসরি ইউনিয়ন পরিষদে দায়ের হয় ২৪৪ টি এবং জেলা আদালত থেকে পাঠানো হয় ৯৪টি। এর মধ্যে দেওয়ানি ১২৮টি ও ফৌজদারি ২১০টি। দায়েরকৃত মামলার মধ্যে আবেদনকারী পুরুষ ২৬০ ও নারী ৭৮ জন। নিষ্পত্তিকৃত মামলার সংখ্যা ২৬৬টি বাতিল বা খারিজ হওয় মামলা ৪৮টি। মোট ক্ষতিপূরণ আদায় ২০ লাখ ১৮ হাজার ৪৭০ টাকা।