ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

শিক্ষার্থীদের গুলি করার হুমকি

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে মুখোমুখি অবস্থানে ছাত্রলীগ ও অধ্যক্ষ। দুর্নীতি সহ নানা ঘটনায় অস্থির ক্যাম্পাস, ভাঙচুর-আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের দাবি, দেয়া হয়েছে গুলি করার হুমকিও। পড়ালেখায় অনেক টাকা খরচের তীব্র অভিযোগও রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

 

বুধবার (৫ জুন) সকালে ১১টার সময় এসব ঘটনা ঘটলে দৌলতপুর থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

 

তবে এ ঘটনায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি হয়নি। বিকাল চারটার দিকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, পুলিশ কর্মকর্তা ও শিক্ষকেরা।

 

দৌলতপুর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নান্টু মিঞা সহ উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, কলেজ শাখা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। আমরা কলেজ ক্যাম্পাসে কর্মসূচি, ক্যান্টিন তৈরি এবং শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে নেয়া অতিরিক্ত ভর্তি ফি সহ বিভিন্ন ফির বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করার জন্য ক্যাম্পাসে জড়ো হই।

 

আলাপচারিতার এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের সহযোগী রাজুসহ দু’তিনজন এসে আমাদের কোনো কার্যক্রম চালাতে দেয়া হবে না বলে জানায়। পাশাপাশি উচ্চবাচ্য করতে থাকে। এ সময় কথোপকথনের সময় তারা গুলি করারও হুমকি দেয়।

 

শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী হয়ে উঠলে তারা দৌড়ে ওপরে উঠে যায়। এ সময় দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লা আমান এবং সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন সহ উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলো।

 

খবর পেয়ে সিনিয়র নেতারাও ক্যাম্পাসে আসেন দুএকজন। অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তার একান্ত অনুগত কর্মচারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা অধ্যক্ষের একটি বিলাসবহুল গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করে।

 

সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট নেতারা অধ্যক্ষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়, শিক্ষার্থীরা জানায় তার কাছে পৌঁছাতে না পারায় দাবি দাওয়া উপস্থাপন করা যায়নি। বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা বিকাল পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করে।

 

বিভিন্ন সময় সাংগঠনিক আন্দোলনের স্লোগান দেয়। এসব ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দরজা তালাবদ্ধ রেখে অধ্যক্ষ ছিলেন তার নিজ কক্ষে, সাথে ছিলো নিবন্ধিত পিস্তল।

 

দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমান অভিযোগ করে বলেন, এখানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে পুঁজি করে রীতিমতো ব্যাপক বাণিজ্য চলে। ছাত্রলীগকে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে উদ্যোগী হওয়া ছাত্রলীগের নতুন ইউনিটকে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।

 

কলেজ ক্যাম্পাসে অস্ত্রের ব্যবহার শিক্ষার্থীরা মানে না। নিজের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠা করতে কলেজে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য সুমন স্যার (অধ্যক্ষ) উঠে পড়ে লেগেছে। কলেজটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের নানা অভিযোগ এবং নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর উদ্দেশ্যে কলেজ ইউনিট, উপজেলা ইউনিটকে জানালে আজ শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজের মাঠে গাছের ছায়ায় কথা বলার জন্য আমরা একত্রিত হই।

 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে দৌলতপুরের সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের তৎপরতা চলবে বলে জানায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন।

 

যে গাড়িটি ভাঙা হয়েছে তার চালক রকি শেখ জানান, শিক্ষার্থীরা, ছাত্রলীগের কর্মীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের দরজায় তালা মারা থাকায় প্রবেশ করতে না পেরে, বিক্ষুব্ধ হয়ে বাইরে থাকা গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন বলেন, দৌলতপুর কলেজ খুলনা বিভাগের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃত স্বীকৃত একমাত্র ‘মডেল কলেজ’। এটি নষ্ট করতে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা উঠে পড়ে লেগেছে। আজ সকালে আমি নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি কলেজে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে।

 

পরে কলেজে এসে পুলিশকে ফোন করে ডাকি এবং কলেজের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়া বহিরাগতদের বেরিয়ে যেতে। পুরো সময়টা আমি আমার অফিস কক্ষে বসে সিসি টিভিতে পর্যবেক্ষণ করি। আমার সাথে কারো কোনো বাকবিতন্ডা বা কথাবার্তা হয়নি।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসীন আল মুরাদ (ভেড়ামারা সার্কেল) এর মধ্যস্ততায় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এর আগেই বেরিয়ে যান সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা।

 

পুলিশ কর্মকর্তা মহসীন আল মুরাদ জানান, এখানে হট্টগোলের সম্ভাবনা আছে খবর পেয়ে আগেই দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পরে আমরাও আসি। আমরা আসার আগেই এখানে কিছু বিশৃঙ্খল ঘটনাও ঘটে গেছে, দু’পক্ষের বাকবিতন্ডা হয়েছে। আমরা সব পর্যবেক্ষণ করেছি।

 

তথ্য-উপাত্ত নিয়েছি, উভয় পক্ষেরই কমবেশি অভিযোগ রয়েছে, জানিয়েছি তাদের পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ দেয়ার থাকলে আমাদের কাছে এসে জমা দিতে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়াগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মন্ত্রনালয়ে জানাতে পরামর্শ দিয়েছি। এই অভিযোগ গুলো প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাজ করার জন্য না।

 

অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারও। দৌলতপুর কলেজে পড়ালেখায় বেশি টাকা খরচের কথা এ অঞ্চলে বেশ প্রচলিত অভিযোগ। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।

 

 

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলেজের ভূগোল বিষয়ে প্রদর্শক জহুরুল আলমের দিকে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জহুরুল আলম একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন দৌলতপুর থানায় (জিডি নাম্বার ৩৭৪)।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষের গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগ

শিক্ষার্থীদের গুলি করার হুমকি

আপডেট টাইম : ০৬:৫৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুন ২০২৪

কুষ্টিয়ার দৌলতপুর কলেজে মুখোমুখি অবস্থানে ছাত্রলীগ ও অধ্যক্ষ। দুর্নীতি সহ নানা ঘটনায় অস্থির ক্যাম্পাস, ভাঙচুর-আন্দোলন। শিক্ষার্থীদের দাবি, দেয়া হয়েছে গুলি করার হুমকিও। পড়ালেখায় অনেক টাকা খরচের তীব্র অভিযোগও রয়েছে শিক্ষার্থীদের।

 

বুধবার (৫ জুন) সকালে ১১টার সময় এসব ঘটনা ঘটলে দৌলতপুর থানা পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।

 

তবে এ ঘটনায় প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত কোনো অভিযোগ বা সাধারণ ডায়েরি হয়নি। বিকাল চারটার দিকে ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থী, পুলিশ কর্মকর্তা ও শিক্ষকেরা।

 

দৌলতপুর কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি নান্টু মিঞা সহ উপস্থিত শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে, কলেজ শাখা ও উপজেলা ছাত্রলীগের নতুন কমিটি হয়েছে। আমরা কলেজ ক্যাম্পাসে কর্মসূচি, ক্যান্টিন তৈরি এবং শিক্ষার্থীদের কাছে থেকে নেয়া অতিরিক্ত ভর্তি ফি সহ বিভিন্ন ফির বিষয়গুলো নিয়ে আলাপ করার জন্য ক্যাম্পাসে জড়ো হই।

 

আলাপচারিতার এক পর্যায়ে অধ্যক্ষের সহযোগী রাজুসহ দু’তিনজন এসে আমাদের কোনো কার্যক্রম চালাতে দেয়া হবে না বলে জানায়। পাশাপাশি উচ্চবাচ্য করতে থাকে। এ সময় কথোপকথনের সময় তারা গুলি করারও হুমকি দেয়।

 

শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদী হয়ে উঠলে তারা দৌড়ে ওপরে উঠে যায়। এ সময় দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমানুল্লা আমান এবং সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন সহ উপজেলা ও কলেজ ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলো।

 

খবর পেয়ে সিনিয়র নেতারাও ক্যাম্পাসে আসেন দুএকজন। অধ্যক্ষের নেতৃত্বে তার একান্ত অনুগত কর্মচারীরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর চড়াও হলে শিক্ষার্থীরা বিক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে, কলেজ ক্যাম্পাসে থাকা অধ্যক্ষের একটি বিলাসবহুল গাড়ির কাঁচ ভাঙচুর করে।

 

সিসি টিভি ফুটেজে দেখা যায়, ছাত্রলীগ সংশ্লিষ্ট নেতারা অধ্যক্ষের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়, শিক্ষার্থীরা জানায় তার কাছে পৌঁছাতে না পারায় দাবি দাওয়া উপস্থাপন করা যায়নি। বিক্ষুব্ধ সাধারণ শিক্ষার্থী ও ছাত্রলীগ কর্মীরা বিকাল পর্যন্ত কলেজ ক্যাম্পাসে অবস্থান করে।

 

বিভিন্ন সময় সাংগঠনিক আন্দোলনের স্লোগান দেয়। এসব ঘটনার সময় ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলো আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। দরজা তালাবদ্ধ রেখে অধ্যক্ষ ছিলেন তার নিজ কক্ষে, সাথে ছিলো নিবন্ধিত পিস্তল।

 

দৌলতপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আমান অভিযোগ করে বলেন, এখানে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাকে পুঁজি করে রীতিমতো ব্যাপক বাণিজ্য চলে। ছাত্রলীগকে স্বীকৃতি দেয়া হয় না। সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থে কাজ করতে উদ্যোগী হওয়া ছাত্রলীগের নতুন ইউনিটকে নানা ভাবে ভয়ভীতি প্রদর্শন করা হয়।

 

কলেজ ক্যাম্পাসে অস্ত্রের ব্যবহার শিক্ষার্থীরা মানে না। নিজের স্বেচ্ছাচারিতা প্রতিষ্ঠা করতে কলেজে ছাত্র রাজনীতি বন্ধ করার জন্য সুমন স্যার (অধ্যক্ষ) উঠে পড়ে লেগেছে। কলেজটির সাধারণ শিক্ষার্থীদের দীর্ঘদিনের নানা অভিযোগ এবং নতুনভাবে কার্যক্রম শুরুর উদ্দেশ্যে কলেজ ইউনিট, উপজেলা ইউনিটকে জানালে আজ শিক্ষার্থীদের সাথে কলেজের মাঠে গাছের ছায়ায় কথা বলার জন্য আমরা একত্রিত হই।

 

সাধারণ শিক্ষার্থীদের ন্যায্য দাবি আদায়ে দৌলতপুরের সকল ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের তৎপরতা চলবে বলে জানায় উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক বিপ্লব হোসেন।

 

যে গাড়িটি ভাঙা হয়েছে তার চালক রকি শেখ জানান, শিক্ষার্থীরা, ছাত্রলীগের কর্মীরা কলেজের প্রশাসনিক ভবনের দরজায় তালা মারা থাকায় প্রবেশ করতে না পেরে, বিক্ষুব্ধ হয়ে বাইরে থাকা গাড়িতে ভাঙচুর চালিয়েছে।

 

এ প্রসঙ্গে দৌলতপুর কলেজের অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমন বলেন, দৌলতপুর কলেজ খুলনা বিভাগের মধ্যে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃত স্বীকৃত একমাত্র ‘মডেল কলেজ’। এটি নষ্ট করতে আমার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা উঠে পড়ে লেগেছে। আজ সকালে আমি নিরাপত্তাকর্মীদের মাধ্যমে জানতে পারি কলেজে বহিরাগতরা প্রবেশ করেছে।

 

পরে কলেজে এসে পুলিশকে ফোন করে ডাকি এবং কলেজের মাইকে ঘোষণা দেয়া হয় কলেজের শিক্ষার্থীরা ছাড়া বহিরাগতদের বেরিয়ে যেতে। পুরো সময়টা আমি আমার অফিস কক্ষে বসে সিসি টিভিতে পর্যবেক্ষণ করি। আমার সাথে কারো কোনো বাকবিতন্ডা বা কথাবার্তা হয়নি।

 

সরেজমিনে দেখা যায়, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মহসীন আল মুরাদ (ভেড়ামারা সার্কেল) এর মধ্যস্ততায় ও স্থানীয় শীর্ষ নেতাদের নির্দেশে আন্দোলনরত ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন। এর আগেই বেরিয়ে যান সাধারণ শিক্ষার্থীদের একাংশ। পরে পুলিশের উপস্থিতিতেই ক্যাম্পাস ত্যাগ করেন অধ্যক্ষসহ শিক্ষক-কর্মচারীরা।

 

পুলিশ কর্মকর্তা মহসীন আল মুরাদ জানান, এখানে হট্টগোলের সম্ভাবনা আছে খবর পেয়ে আগেই দৌলতপুর থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে চলে আসে। পরে আমরাও আসি। আমরা আসার আগেই এখানে কিছু বিশৃঙ্খল ঘটনাও ঘটে গেছে, দু’পক্ষের বাকবিতন্ডা হয়েছে। আমরা সব পর্যবেক্ষণ করেছি।

 

তথ্য-উপাত্ত নিয়েছি, উভয় পক্ষেরই কমবেশি অভিযোগ রয়েছে, জানিয়েছি তাদের পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ দেয়ার থাকলে আমাদের কাছে এসে জমা দিতে। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়াগুলো সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও মন্ত্রনালয়ে জানাতে পরামর্শ দিয়েছি। এই অভিযোগ গুলো প্রাথমিক ভাবে আমাদের কাজ করার জন্য না।

 

অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান দৌলতপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং প্রথম শ্রেণীর ঠিকাদারও। দৌলতপুর কলেজে পড়ালেখায় বেশি টাকা খরচের কথা এ অঞ্চলে বেশ প্রচলিত অভিযোগ। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন সময় দুর্নীতির অভিযোগে সংবাদ মাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হয়েছে।

 

 

উল্লেখ্য, এর আগে ২০১৭ সালের ৯ সেপ্টেম্বর কলেজের ভূগোল বিষয়ে প্রদর্শক জহুরুল আলমের দিকে অস্ত্র প্রদর্শন করে ভয়ভীতি দেখানোর সুনির্দিষ্ট অভিযোগও রয়েছে অধ্যক্ষ ছাদিকুজ্জামান খান সুমনের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে জহুরুল আলম একটি সাধারণ ডায়েরি করেছিলেন দৌলতপুর থানায় (জিডি নাম্বার ৩৭৪)।