ঘূর্ণিঝড় রিমালের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ার নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়নের নয়টি গ্রামসহ ১৬টি গ্রাম এবং কয়েকটি চর জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে। এতে নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়নের ৯টি ওয়ার্ডের প্রধান সড়ক ও বাজার এবং চর গাসিয়া, ঢালচর, দমারচরসহ বেশ কয়েকটি চরের রাস্তাঘাট ও দোকানপাট প্লাবিত রয়েছে। বেডিবাঁধ না থাকায় অস্বাভাবিক সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে রবিবার (২৬মে) রাতে নিঝুমদ্বীপের পুরো এলাকা ৫ থেকে ৭ ফুট পানিতে প্লাবিত হয়েছে। জোয়ারে ও বাতাসে অধিকাংশ কাঁচাঘর বিধ্বস্ত হওয়ায় নিঝুম দ্বীপের প্রায় ১০ হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েছে।
ঘূর্ণিঝড় রিমাল উপকূল অতিক্রম করলেও সোমবার ভোর রাত থেকে ব্যাপক ঝড়-বৃষ্টি ও দমকা হাওয়া অব্যাহত রয়েছে। এতে নোয়াখালীর দ্বীপ হাতিয়ার সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় ভয়াবহভাবে বিপর্যস্ত হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে গত তিন দিন ধরে বন্ধ রয়েছে হাতিয়ার সাথে নৌ যোগাযোগ ব্যবস্থা।
হাতিয়া আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ঘণ্টায় সেখানে ৭২ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এছাড়াও বাতাসের গতিবেগ ঘণ্টায় ৪৮ নটিকেল মাইল। আকাশে ভারী মেঘের বৃষ্টিতে পরিবেশ পুরো অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে আছে। রাস্তা ঘাট যানবাহনশূন্য এক ভুতুড়ে পরিবেশ বিরাজ করছে।
নিঝুমদ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দিনাজ উদ্দিন জানান, দ্বিতীয় দিনেও পর পর জোয়ারের পানিতে অনেকগুলো ওয়ার্ডের ২০ হাজার ভুক্তভোগী মানুষের বসতঘরের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ বেড়েছে। রান্না করা খুবই কষ্টের হয়ে পড়েছে। ফলে অনেককেই অর্ধাহারে কাটাতে হচ্ছে।
রবিবার দিবাগত রাত ১টা থেকে সোমবার বিকেল সন্ধ্যা পর্যন্ত পুরো দ্বীপের বিদ্যুৎ সরবারাহ বন্ধ রাখা হয়েছে।
হাতিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশীষ চাকমা জানান, জোয়ার ও বৃষ্টিতে হাতিয়ায় এখন পর্যন্ত আট হাজার হেক্টর জমির বোরো ও রবি ফসলাদি নষ্ট হয়েছে। ৩০ হাজার পরিবার ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির শিকার হয়েছে।
প্রিন্ট