রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী মোহনপুর উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় অর্ধশতাধিক স্পটে অবৈধ পুকুর খনন, পুনঃখনন ও মাটি বাণিজ্য করে সরকারি পাকা-কাঁচা রাস্তা নষ্ট ও পরিবেশ দুষণের অভিযোগ উঠেছে।স্থানীয়দের অভিযোগ প্রশাসনের একশ্রেণীর কর্মকর্তাকে আর্থিক সুবিধা দিয়ে এসব পুকুর খনন, পুনঃখনন ও মাটি বাণিজ্য করা হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, খোলা ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে পুকুর খননের কাদামাটি পরিবহণ করায় নষ্ট হচ্ছে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সরকারি কাচা-পাকা রাস্তাঘাট। মাটিবাহী গাড়ির বেপরোয়া গতির কারণে ধুলোবালিতে অতিষ্ঠ পথচারিরা। এছাড়া প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। অবাধে পুকুর খননে ক্রমাগত কমছে কৃষি জমির পরিমাণ, বিনষ্ট হচ্ছে পরিবেশের ভারসাম্য।
অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতাদের ছত্রছায়ায় একশ্রেণির এক্সকেভেটর (ভেকু) ব্যবসায়ীরা চুক্তিভিত্তিকভাবে রাতারাতি কৃষি জমি গিলে খাচ্ছে। আর সমাজের কিছু অসাধু ব্যক্তির পকেট ভরতে গিয়ে রাস্তাঘাট নষ্ট হয়ে সরকারের কোটি কোটি টাকা নিমিষেই বানের জলে ভেসে যাচ্ছে। কৃষি ও পরিবেশবিদরা বলছেন, অবাধে পুকুর খননে উপজেলায় কৃষি জমির পরিমাণ প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছে। অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে খাল-বিলের জীবকুল ও প্রাণিকুল। উপজেলার কেশরহাট পৌর এলাকার মগরাবিল, ধুরইল নাপিতপাড়া, বেলনা, বহালার বিল, ভিমনগর, বাগবাজার ও নয়নগর ইত্যাদি এলাকায় চলছে অবৈধ পুকুর খননের মহোৎসব।
এদিকে খোলা ড্রাম ট্রাক ও ট্রাক্টরে পুকুর খননের মাটি এনে বিভিন্ন জায়গা ভরাট করা হচ্ছে। মাটিবাহী গাড়ির কাদামাটিতে পাকা সড়কে কাদামাটি পড়ে নষ্ট হচ্ছে। সেই কাদামাটি সরানোর কাজে শ্রমিকদের নিয়োজিত রেখেছেন ভেকু ব্যবসায়ীরা। কোদাল দিয়ে মাটি সরাতে গিয়ে পাকা সড়কের পাথর ও উপরের প্রলেপ বিটুমিন উঠিয়ে ফেলা হচ্ছে। মোহনপুর উপজেলার ভিমনগর গ্রামের বাসিন্দা বকুল হোসেন, আফজাল হোসেন ও আফসার আলী বলেন, ভেকুর বিকট শব্দ ও ধুলাবালিতে বসবাস করা কঠিন হয়ে পড়েছে।
এবিষয়ে উপজেলা প্রকৌশলী বলেন, রাস্তার বিটুমিনের শত্রু হচ্ছে কাদামাটি। নিয়ম না মেনে যত্রতত্রভাবে পুকুর খনন ও পুকুরের কাদামাটিতে রাস্তাঘাট দ্রুত নষ্ট হচ্ছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বলেন, তিনি কোনো লিখিত অভিযোগ পাননি,তবে এবিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
প্রিন্ট