রাজশাহীর বাগমারা আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রচার-প্রচারণা ও গণসংযোগে এগিয়ে রয়েছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আলহাজ্ব জাকিরুল ইসলাম সান্টু। এবার তার বিরুদ্ধে তেমন কোনো শক্ত প্রতিদন্দী নাই। ফলে তিনি প্রায় ফাঁকা মাঠে গোল দিচ্ছেন বলে মনে করছেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীসহ সাধারণ ভোটারগণ।
জানা গেছে, আগামী ২১মে বাগমারা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। বাগমারা উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে তিনজন প্রার্থী রয়েছেন তারা সবাই আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত। তবে সান্টুর পক্ষে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা ভোটের মাঠে সক্রিয় থাকলেও অপর দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী নির্বাচনের মাঠে দলের নেতাকর্মীদের পাশে পাচ্ছেন না। সবার তোড়জোড় একজনকে নিয়ে। তিনি হলেন জাকিরুল ইসলাম সান্টু (ঘোড়া)। তাকে জেতাতে স্থানীয় আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা একট্টা।
সাবেক এই উপজেলা চেয়ারম্যান এবারো দলীয় নেতা-কর্মীদের কাছ থেকে পুর্ণ সমর্থন পাচ্ছেন। নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে অপর দুই প্রার্থী হলেন উপজেলা কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবু (আনারস) এবং জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা আক্তার (মোটরসাইকেল)। তাদের মধ্যে আবদুর রাজ্জাক সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের এবং নাছিমা আক্তার বর্তমান সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালামের অনুসারী বলে পরিচিত।
কিন্তু নির্বাচনের মাঠে দলের দায়িত্বশীল কাউকে পাশে পাচ্ছেন না এই দুই প্রার্থী। বাগমারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ গোলাম সারওয়ার আবুল বলেন, তারা সভা করে জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে দলীয় সমর্থন দিয়েছেন। তাকে জেতানোর জন্য সবাই ঐক্যবদ্ধ রয়েছেন।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা আওয়ামী লীগের বড় অংশ (বর্তমান সাংসদ) অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের নেতৃত্বাধীন) জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে সরাসরি সমর্থন দিয়ে মাঠে রয়েছেন।
অপর দিকে আবদুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবুর দাবি, তিনি সাবেক সংসদ সদস্য ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এনামুল হকের অনুসারী। তার পক্ষে অনুসারীদের সমর্থন রয়েছে বলেও তিনি দাবী করেছেন। জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাছিমা আক্তার বর্তমান সাংসদ আবুল কালাম আজাদের অনুসারী হওয়ার পরও তার পক্ষে তেমন কোনো নেতা-কর্মীকে প্রকাশ্যে প্রচারণায় মাঠে দেখা যাচ্ছে না। গত বুধবার বিকেলে নির্বাচনী এক সমাবেশে সাংসদ অধ্যক্ষ আবুল কালাম আজাদের স্ত্রী তাহেরপুর পৌরসভার মেয়র খন্দকার শায়লা পারভিন জাকিরুল ইসলাম সান্টুর পক্ষে ভোট চেয়ে নিজের অবস্থান পরিষ্কার করেছেন।
সংসদ সদস্যদের কোনো প্রার্থীকে সমর্থন না দেওয়ার নির্দেশনা থাকায় আবুল কালাম আজাদ মাঠে নামছেন না। তার স্ত্রীর সরাসরি প্রচারণায় অংশ নেওয়াকে এমপির ছায়া সমর্থন হিসেবে দেখছেন ভোটারগণ। জাকিরুল ইসলাম সান্টুর পক্ষে দলের স্থানীয় অন্যান্য নেতাকর্মীরা নিয়মিত প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন। অপরদিকে কৃষক লীগের কয়েকজন নেতা-কর্মীকে নিয়ে নিজের মতো প্রচারণা চালাচ্ছেন আবদুর রাজ্জাক ওরফে আর্ট বাবু। তিনি সাবেক সাংসদ ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের অনুসারী। যদিও আগে আবদুর রাজ্জাক বাবু বলেছিলেন, তিনি সাবেক সাংসদ এনামুল হকের অনুসারী।
এ প্রসঙ্গে এনামুল হকের অনুসারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বলেন, তাদের কোনো প্রার্থী নেই। ভোটারগণ তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেবেন।
এদিকে জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক কয়েকজন নারী কর্মীকে সঙ্গে নিয়ে প্রচারণা চালাচ্ছেন। আওয়ামী লীগ ও মহিলা আওয়ামী লীগের তেমন কোনো নেতাকে তার সঙ্গে দেখা যায়নি। এ ছাড়া জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মর্জিনা পারভীন বাগমারায় নির্বাচনী প্রচারনায় এসে তিনি জাকিরুল ইসলাম সান্টুকে ভোট দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। বাগমারায় ভোটের মাঠের প্রচারনা ও ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে মনে হচ্ছে ফাঁকা মাঠেই গোল দিচ্ছে জাকিরুল ইসলাম সান্টু। মাঠ পর্যায়ের দলীয় নেতাকর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে সান্টুর পক্ষেই কাজ করে যাচ্ছে। অন্য দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী তাদের দলীয় নেতাকর্মীদের সংঘবদ্ধ করতে না পারায় ফাঁকা মাঠেই গোল দিচ্ছে জাকিরুল ইসলাম সান্টু বলে সাধারণ ভোটারেগণ মনে করেছেন।
প্রিন্ট