ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৭ জুলাই ২০২৫, ২ শ্রাবণ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo বেনাপোলে যুবদলের যৌথ কর্মীসভা Logo পাংশা সরকারী কলেজে জুলাই শহিদ দিবস পালিত Logo কৃষি বিজ্ঞানী ড. আলী আফজাল ফুটবল টুর্নামেন্টে সেমিফাইনালে মহম্মদপুর Logo কুষ্টিয়া চাঁদা তোলা নিয়ে বিএনপি-জামায়াত সংঘর্ষ Logo কিছু কিছু দল বাংলাদেশকে মৃত্যুপুরী বানাচ্ছেঃ -মোমিন মেহেদী Logo মধুখালীতে কাঁচা মরিচের দাম হঠাৎ কম হওয়ায় কৃষকেরা হতাশ Logo কালুখালী থেকে কুষ্টিয়া আদালতে হাজিরা দিতে গিয়ে হামলার শিকার Logo ফরিদপুর সিভিল সার্জন অফিসের উদ্যোগে ‌‌ আলোচনা সভা ‌ দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত Logo কুষ্টিয়া সীমান্তে পৃথক অভিযানে বিদেশি পিস্তল ও শর্টগানসহ আটক ২ Logo জাতীয় নাগরিক পার্টি এনসিপির ‌ প্রেস ব্রিফিং অনুষ্ঠিত 
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কুষ্টিয়া হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন শাশুড়ি-ননদ, স্বজনদের দাবি হত্যা

কুমারখালীতে এক গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছেন শাশুড়ি ও ননদ। থানা চত্বরে স্বজনদের আহাজারি। যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার পর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রেখেছে পুলিশ।

নিহত গৃহবধূর নাম বিনা খাতুন (২২)। তিনি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামের মাঠপাড়া এলাকার আমিন হোসেনের স্ত্রী ও যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের বিল্লাল শেখের মেয়ে। স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে শাশুড়ি শিল্পী খাতুন (৪৫) ও ননদ মুক্তা খাতুন (২৫) মিলে ওই গৃহবধূকে মারধরের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছেন। হত্যার পর হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে নন্দলালপুর গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের কলা ব্যবসায়ী ছেলে আমিনের সঙ্গে বিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য বিনাকে মারধর করতে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠে। মারধর সইতে না পেরে বিয়ের পর প্রায় এক বছর বাবার বাড়িতে থাকেন বিনা। এ নিয়ে একাধিকবার শালিসও হয়েছে। একপর্যায়ে এক ছেলে সন্তানের (৭ মাস) জন্ম হলে ২৫ হাজার টাকা যৌতুকসহ সন্তানটিকে নিয়ে গত শুক্রবার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে যান বিনা। এরপর আজ দুপুরে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।

বিকেলে কুমারখালী থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার বারান্দায় একটি বেঞ্চে প্যাকেটে মোড়ানো একটি লাশ। থানার বাইরে স্বজনেরা আহাজারি করছেন। নিহত নারীর বাবা বিল্লাল শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি ও ননদ ১০ লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেলের জন্য তার মেয়েকে নির্যাতন করতেন। তিনি গরিব মানুষ, টাকা দিতে পারেননি। মেয়ে নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় এক বছর তার বাড়িতেই ছিল। শুক্রবার ২৫ হাজার টাকা দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। এরপরও শাশুড়ি ও ননদ মিলে হত্যা করে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়েছেন। তিনি থানায় মামলা করবেন।

বিনার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড পাকা বাড়িতে সুনসান নীরবতা। দরজায় তালা ঝুলছে। দরজার পাশে ইটের দেয়াল একটুখানি ভাঙা। ঘরের ভেতরে ওড়নার কয়েক টুকরা কাটা অংশ পড়ে আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, বেলা ১১টার দিকে গৃহবধূ বিনাকে বাড়ির বাইরে বসে কাঁদতে দেখেন। কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে বিনা বলেন, ‘শাশুড়ি-ননদ মারধর করেছে।’ আরেক নারী জানান, দুপুরে ভ্যানে করে বিনাকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যান শাশুড়ি ও ননদ। কিন্তু তারা আর ফিরে আসেননি।

কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক দিবাকর হালদার বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি থানায় এনে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে হাসপাতালে শ্বশুরবাড়ির কাউকে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

বেনাপোলে যুবদলের যৌথ কর্মীসভা

error: Content is protected !!

কুষ্টিয়া হাসপাতালে লাশ রেখে পালালেন শাশুড়ি-ননদ, স্বজনদের দাবি হত্যা

আপডেট টাইম : ১১:৩৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
ইসমাইল হোসেন বাবু, স্টাফ রিপোর্টার :
কুমারখালীতে এক গৃহবধূর লাশ হাসপাতালে ফেলে পালিয়েছেন শাশুড়ি ও ননদ। থানা চত্বরে স্বজনদের আহাজারি। যৌতুক না পেয়ে এক গৃহবধূকে নির্যাতন করে হত্যার পর কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে লাশ ফেলে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ উঠেছে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে। আজ বুধবার বেলা দুইটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ উদ্ধার করে থানায় এনে রেখেছে পুলিশ।

নিহত গৃহবধূর নাম বিনা খাতুন (২২)। তিনি উপজেলার নন্দলালপুর ইউনিয়নের নন্দলালপুর গ্রামের মাঠপাড়া এলাকার আমিন হোসেনের স্ত্রী ও যদুবয়রা ইউনিয়নের উত্তর চাঁদপুর গ্রামের বিল্লাল শেখের মেয়ে। স্বজনদের অভিযোগ, যৌতুকের টাকা না পেয়ে শাশুড়ি শিল্পী খাতুন (৪৫) ও ননদ মুক্তা খাতুন (২৫) মিলে ওই গৃহবধূকে মারধরের পর শ্বাস রোধ করে হত্যা করেছেন। হত্যার পর হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যান।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে পারিবারিকভাবে নন্দলালপুর গ্রামের মোফাজ্জেল হোসেনের কলা ব্যবসায়ী ছেলে আমিনের সঙ্গে বিনা খাতুনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন যৌতুকের জন্য বিনাকে মারধর করতে থাকেন বলে অভিযোগ ওঠে। মারধর সইতে না পেরে বিয়ের পর প্রায় এক বছর বাবার বাড়িতে থাকেন বিনা। এ নিয়ে একাধিকবার শালিসও হয়েছে। একপর্যায়ে এক ছেলে সন্তানের (৭ মাস) জন্ম হলে ২৫ হাজার টাকা যৌতুকসহ সন্তানটিকে নিয়ে গত শুক্রবার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুরবাড়িতে যান বিনা। এরপর আজ দুপুরে তাকে শ্বাস রোধ করে হত্যা করে শাশুড়ি ও ননদের বিরুদ্ধে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ ওঠে।

বিকেলে কুমারখালী থানায় গিয়ে দেখা যায়, থানার বারান্দায় একটি বেঞ্চে প্যাকেটে মোড়ানো একটি লাশ। থানার বাইরে স্বজনেরা আহাজারি করছেন। নিহত নারীর বাবা বিল্লাল শেখ বলেন, বিয়ের পর থেকেই শাশুড়ি ও ননদ ১০ লাখ টাকা ও একটি মোটরসাইকেলের জন্য তার মেয়েকে নির্যাতন করতেন। তিনি গরিব মানুষ, টাকা দিতে পারেননি। মেয়ে নির্যাতন সইতে না পেরে প্রায় এক বছর তার বাড়িতেই ছিল। শুক্রবার ২৫ হাজার টাকা দিয়ে শ্বশুরবাড়িতে পাঠিয়েছিলেন। এরপরও শাশুড়ি ও ননদ মিলে হত্যা করে হাসপাতালে লাশ রেখে পালিয়েছেন। তিনি থানায় মামলা করবেন।

বিনার শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, টিনশেড পাকা বাড়িতে সুনসান নীরবতা। দরজায় তালা ঝুলছে। দরজার পাশে ইটের দেয়াল একটুখানি ভাঙা। ঘরের ভেতরে ওড়নার কয়েক টুকরা কাটা অংশ পড়ে আছে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রতিবেশী বলেন, বেলা ১১টার দিকে গৃহবধূ বিনাকে বাড়ির বাইরে বসে কাঁদতে দেখেন। কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলে বিনা বলেন, ‘শাশুড়ি-ননদ মারধর করেছে।’ আরেক নারী জানান, দুপুরে ভ্যানে করে বিনাকে হাসপাতালের দিকে নিয়ে যান শাশুড়ি ও ননদ। কিন্তু তারা আর ফিরে আসেননি।

কুমারখালী থানার উপ-পরিদর্শক দিবাকর হালদার বলেন, খবর পেয়ে হাসপাতাল থেকে লাশ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের জন্য লাশটি থানায় এনে রাখা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে প্রকৃত ঘটনা জানা যাবে। তবে হাসপাতালে শ্বশুরবাড়ির কাউকে পাওয়া যায়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট