ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

দায়িত্বে অবহেলায় নবজাতের মৃত্যুর অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

যশোরে দায়িত্ব অবহেলায় নবজাত কন্যার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বুধবার ১৫ মে দুপুরে শহরের রেল রোড আদ্- দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে স্বজনরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগে স্বজনরা জানান, শহরের নীলগঞ্জ সাহা পাড়ার আব্দুল গফফারের স্ত্রী লামিয়া বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে বুধবার সকালে আদ্- দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ১০টার দিকে তার স্বাভাবিক ভেলিভারি সম্পন্ন হয়। এরপর নবজাত কন্যাকে তারা এনসিইউতে নিয়ে যান। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপুর ১টার পর মৃতের স্বজনরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
নবজাতের ফুফু জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি বলেন, লামিয়া গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. শিলা পোদ্দারের রোগী। অথচ ডেলিভারির আগে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। নার্সরা নিজেররাই ভেলিভারি করেছে। ডেলিভারির সময় দুজন নার্স মিলে পেট চেপে বাচ্চা বের করেছে। লামিয়া কষ্টে চিৎকার দিলেও নার্সরা তাকে বকা দিয়ে চুপ থাকতে বলে। তিনি আরো বলেন, নার্সদের কারনেই শিশুটি মারা গেছে।
নবজাতের পিতা আব্দুল গফফার বলেন, চিকিৎসকের উপস্থিতি ছাড়াই নার্স ও আয়া দিয়ে ডেলিভারি করানোর কারনেই তার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারীরা দুর্ব্যবহার করে। অবহেলাজনিত এ মৃত্যর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নার্স বিউটি মন্ডল বলেন, সকালে রোগীকে আনার পর পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়। নবজাতের মাথা সামনে থাকায় স্বাভাবিক ডেলিভারি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চিকিৎসক রিতা দাসও রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন। সাধারণ ডেলিভারির ক্ষেত্রে নার্সরাই সকল কাজ সম্পন্ন করেন। সেই মোতাবেকই ডেলিভারি সম্পন্ন হয়েছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটি হাফসে যাওয়ায় তাকে এনসিইউতে পাঠানো হয়। সেখানেই শিশুটি মারা গেছে। এখানে কোন প্রকার অবহেলা হয়নি।
ডা. রিতা দাস বলেন, সকালে রোগীর পরীক্ষা নীরিক্ষার পর নবজাতের মাথা সামনের দিকে থাকায় স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য স্যালাইন পুশ করা হয়। আমি রোগীকে ভালো অবস্থায় পেয়েছি। তাছাড়া রোগীর স্বজনরা কেউ সিজারিয়ান অপারেশনের কথা আমাদেরকে বলেননি। ফলে আমরা স্বাভাবিক ডেলিভারি করিয়েছি। প্রসূতির বয়স কম ও প্রথম সন্তান হওয়ায় শিশু চাপে হাফসে গেছে।
এনসিইউর ডা. কিশোর কুমার বিশ্বাস বলেন, শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য ভেন্টিলেশনসহ সকল প্রকার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা ছিলো না।
হাসপাতালের ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রোগীকে ভর্তির পর থেকে ডা. রিতা দাস তাকে দেখেছেন। নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে তিনি সকল কাজ করে থাকেন। সেভাবেই ডেলিভারি হয়েছে। নবজাত শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকেও সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ মৃত্যুতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন অবহেলা ছিল না। তিনি আরো বলেন, স্বজনদের সাথে কোন রকম দুর্ব্যবহার করা হয়নি। বরং, তারাই উত্তেজিত হয়ে খারাপ ব্যবহার করেছেন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

দায়িত্বে অবহেলায় নবজাতের মৃত্যুর অভিযোগ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে

আপডেট টাইম : ১০:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ মে ২০২৪
মোঃ নুরুল ইসলাম, স্টাফ রিপোর্টার :
যশোরে দায়িত্ব অবহেলায় নবজাত কন্যার মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে এক চিকিৎসকের বিরুদ্ধে। বুধবার ১৫ মে দুপুরে শহরের রেল রোড আদ্- দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় ক্ষোভে ফুঁসে ওঠে স্বজনরা। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
অভিযোগে স্বজনরা জানান, শহরের নীলগঞ্জ সাহা পাড়ার আব্দুল গফফারের স্ত্রী লামিয়া বেগমের প্রসব বেদনা উঠলে বুধবার সকালে আদ্- দ্বীন সকিনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সকাল ১০টার দিকে তার স্বাভাবিক ভেলিভারি সম্পন্ন হয়। এরপর নবজাত কন্যাকে তারা এনসিইউতে নিয়ে যান। পরে তাকে মৃত ঘোষণা করেন। দুপুর ১টার পর মৃতের স্বজনরা হাসপাতালে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেন।
নবজাতের ফুফু জান্নাতুল ফেরদৌস আঁখি বলেন, লামিয়া গাইনি বিশেষজ্ঞ ডা. শিলা পোদ্দারের রোগী। অথচ ডেলিভারির আগে তাকে কিছুই জানানো হয়নি। নার্সরা নিজেররাই ভেলিভারি করেছে। ডেলিভারির সময় দুজন নার্স মিলে পেট চেপে বাচ্চা বের করেছে। লামিয়া কষ্টে চিৎকার দিলেও নার্সরা তাকে বকা দিয়ে চুপ থাকতে বলে। তিনি আরো বলেন, নার্সদের কারনেই শিশুটি মারা গেছে।
নবজাতের পিতা আব্দুল গফফার বলেন, চিকিৎসকের উপস্থিতি ছাড়াই নার্স ও আয়া দিয়ে ডেলিভারি করানোর কারনেই তার সন্তানের মৃত্যু হয়েছে। এর প্রতিবাদ করলে হাসপাতালের চিকিৎসক, নার্সসহ অন্যান্য কর্মচারীরা দুর্ব্যবহার করে। অবহেলাজনিত এ মৃত্যর ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি দাবি করেন তিনি।
অপরদিকে দায়িত্বরত নার্স ও চিকিৎসকসহ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। নার্স বিউটি মন্ডল বলেন, সকালে রোগীকে আনার পর পরীক্ষা নীরিক্ষা করা হয়। নবজাতের মাথা সামনে থাকায় স্বাভাবিক ডেলিভারি সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। চিকিৎসক রিতা দাসও রোগীকে পরীক্ষা নিরীক্ষা করে দেখেন। সাধারণ ডেলিভারির ক্ষেত্রে নার্সরাই সকল কাজ সম্পন্ন করেন। সেই মোতাবেকই ডেলিভারি সম্পন্ন হয়েছে। ভূমিষ্ঠ হওয়ার পর শিশুটি হাফসে যাওয়ায় তাকে এনসিইউতে পাঠানো হয়। সেখানেই শিশুটি মারা গেছে। এখানে কোন প্রকার অবহেলা হয়নি।
ডা. রিতা দাস বলেন, সকালে রোগীর পরীক্ষা নীরিক্ষার পর নবজাতের মাথা সামনের দিকে থাকায় স্বাভাবিক ডেলিভারির জন্য স্যালাইন পুশ করা হয়। আমি রোগীকে ভালো অবস্থায় পেয়েছি। তাছাড়া রোগীর স্বজনরা কেউ সিজারিয়ান অপারেশনের কথা আমাদেরকে বলেননি। ফলে আমরা স্বাভাবিক ডেলিভারি করিয়েছি। প্রসূতির বয়স কম ও প্রথম সন্তান হওয়ায় শিশু চাপে হাফসে গেছে।
এনসিইউর ডা. কিশোর কুমার বিশ্বাস বলেন, শিশুটিকে বাঁচানোর জন্য ভেন্টিলেশনসহ সকল প্রকার পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। তাদের পক্ষ থেকে কোনো অবহেলা ছিলো না।
হাসপাতালের ম্যানেজার মুজাহিদুল ইসলাম বলেন, রোগীকে ভর্তির পর থেকে ডা. রিতা দাস তাকে দেখেছেন। নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে তিনি সকল কাজ করে থাকেন। সেভাবেই ডেলিভারি হয়েছে। নবজাত শিশু অসুস্থ হয়ে পড়ায় তাকেও সর্বোচ্চ চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। এ মৃত্যুতে হাসপাতালের পক্ষ থেকে কোন অবহেলা ছিল না। তিনি আরো বলেন, স্বজনদের সাথে কোন রকম দুর্ব্যবহার করা হয়নি। বরং, তারাই উত্তেজিত হয়ে খারাপ ব্যবহার করেছেন।

প্রিন্ট