কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে একটি গ্রামের প্রায় ২৫০ জন গ্রাহকের ভূতুড়ে বিদ্যুৎ বিলে চরমভাবে ক্ষুব্ধ হয়ে ক্ষোভে ফুঁসে উঠেছেন তারা। উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের সীমান্ত সংলগ্ন ধর্মদহ গ্রামের গ্রাহকদের মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিল কারো দ্বিগুণ, কারো তিনগুণ আবার কারো পাঁচ-ছয় গুণেরও বেশি লাগামহীন ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল আসায় তারা ক্ষুব্ধ হয়ে তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন।
গ্রাহকদের অভিযোগ, মিটার রিডার বাড়ি বাড়ি না গিয়ে মিটার না দেখে অফিসে বসেই ইচ্ছামত ভৌতিক বিল তৈরি করে গ্রাহকদের কাছে সরবরাহ করেছেন।ধর্মদহ গ্রামের আব্দুস সামাদ অভিযোগ করে বলেন, তার দুটি আবাসিক মিটার রয়েছে।
ফেব্রুয়ারি মাসে একটি মিটারে ৩১৭ টাকা, অপরটিতে ১৩৫ বিল এসেছিল। কিন্তু মার্চে দুটি মিটারে একটিতে ৮১০ টাকা অপরটিতে ৫১০ টাকা বিল এসেছে।একই গ্রামের মাসিকুল ইসলামের অভিযোগ, ফেব্রুয়ারি মাসে (আবাসিক) তার বিদ্যুৎ বিল এসেছিল ২৬৭ টাকা, মার্চ এসেছে ৬৫৮ টাকা।আরেক বিদ্যুৎ গ্রাহক মজিবর রহমান বলেন, তার দুটি দোকানে পৃথক বাণিজ্যিক মিটার আছে।
একটিতে গত ফেব্রুয়ারি মাসে ৪১৬ টাকা বিল পরিশোধ করেছি। কিন্তু মার্চ মাসে তা প্রায় নয়গুণ বাড়িয়ে ৩ হাজার ৬৫৭ টাকা বিল দেয়া হয়েছে। অপর মিটারে ফেব্রুয়ারির ১৯৪ টাকা বিল পরিশোধ করেছি। কিন্তু মার্চ মাসে বিল এসেছে ৬৫১ টাকা।এছাড়াও জামাল হোসেন নামে অপর এক গ্রাহক অভিযোগ করেন, ফেব্রুয়ারি মাসে ৪০০ টাকা বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেছি। কিন্তু মার্চ মাসে বিদ্যুৎ বিল এসছে ১ হাজার ১০০ টাকা। একই অভিযোগ ধর্মদহ গ্রামের শত শত বিদ্যুৎ গ্রাহকের।
তাদের দাবি এ ধরণের ভৌতিক বিলের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শান্তির ব্যবস্থা করা হোক এবং ভৌতিক বিদ্যুৎ বিল থেকে সাধারণ গ্রাহকদের বাঁচানো হোক।ভৌতিক বিদ্যুৎ বিলের বিষয়ে প্রাগপুর বিদ্যুতের সাব-জোনাল অফিসের মিটার রিডার দায়েম উদ্দিন বলেন, শীতের পরপরই রমজান মাস ও প্রচণ্ড গরমে গ্রাহকরা বিদ্যুৎ বেশি ব্যবহার করেছে। ফলে মার্চ মাসে সব গ্রাহকের বিদ্যুৎ বিল বেশি এসেছে।
বাড়ি গিয়ে মিটার দেখে রিডিং না লেখার অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি প্রতি মাসেই বাড়ি বাড়ি গিয়ে মিটার রিডিং করে থাকি।কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির প্রাগপুর সাব-জোনাল অফিসের এজিএম মো. মনিরুল ইসলাম বলেন, উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নের ধর্মদহ গ্রাম থেকে এ ধরনের বেশ কিছু অভিযোগ আমার কাছে এসেছে। তবে গত দুই মাসে মিটার রিডার দায়েম উদ্দিন সরোজমিনে গিয়ে রিডিং নেয়নি।
মার্চ মাসের রিডিং এপ্রিলের ৯ তারিখে নেয়ার কথা থাকলেও একসাথে ৪৭ দিনের রিডিং করেছে এপ্রিল মাসের ২২ তারিখে। ফলে দেড় মাসেরও বেশি সময়ের বিল এসেছে। যার কারণে বিদ্যুৎ বিল বেশি এসেছে। তবে মিটার রিডার দায়েম উদ্দিনের বিরুদ্ধে গ্রামের লোকজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছে।
সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যাবস্থা গ্রহণের জন্য আমি কুষ্টিয়া পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার বরাবর তা পাঠিয়েছি।বিদ্যুৎ গ্রাহকদের দাবি ভৌতিক বিল না করে ন্যায্য বিল করে প্রতারণা থেকে সাধারণ গ্রাহকদের বাঁচানো
প্রিন্ট