ঢাকা , সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে কবিরাজের লাশ উদ্ধার Logo পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণাকারী গ্রেফতার Logo শালিখার আড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে মুগ্ধ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা Logo ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ Logo ফরিদপুরের ধর্ষণ মামলার আসামী সোহেল গ্রেপ্তার Logo পাংশায় শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সভায় নতুন কমিটি Logo কুষ্টিয়ায় উলামা সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত Logo নির্বাচন ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারেরা জন্ম নেয়ঃ -আব্দুস সালাম Logo ভেড়ামারায় মাজারে মাদকবিরোধী অভিযান, ভক্তদের হাতে লাঞ্ছিত ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরায় ডাক্তার দম্পতির ভুল চিকিৎসায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যু

মাগুরা শহরের হাজী আব্দুল হামিদ সড়কের লাইফ কেয়ার নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রপচারে শায়লা রহমান সেতু (২৫), নামে একজন প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি মাগুরা শহরের তাঁতিপাড়া এলাকার অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ফিরোজের মেয়ে এবং জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী। তার শ্বশুর বাড়ি কুমিল্লায়। স্বামী আহাম্মদ রায়হান একজন প্রকৌশলী।
নিহত শায়লা রহমানের বাবা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে শায়লাকে তিনি বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করেন। ওই রাতে সাড়ে দশটায় ডাক্তার জাফরিন আকতার মেয়ের শরীরে অস্ত্রপচার চালান। শায়লা রহমান একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু সন্তান জন্মের পর থেকেই শায়লা রহমানের শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। পাশাপাশি চিৎকার করে ঘন ঘন জ্ঞান হারাতে থাকেন। অপারেশনের পর রক্ত বন্ধ না হওয়ায় রাত তিনটায় ডাক্তার জাফরিন আক্তারের স্বামী মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সার্জারি কলসালটেন্ট ডাক্তার শফিউর রহমানকে জানালে তিনি এসে পুনরায় সেতুকে অপারেশন করেন। এরপরেও রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে ০৫ এপ্রিল সকাল ছয়টায় তড়িঘড়ি করে লাইফ কেয়ার ক্লিনিক থেকে সদর হাসপাতালে রোগীকে হস্তান্তর করেন।
সদর হাসপাতালে অন্যান্য ডাক্তারের সহায়তায় পুনরায় সেতুকে আবার সার্জারি করা হয় এবং দীর্ঘ ৫ ঘন্টা অপারেশন থিয়েটার মধ্যে রাখা হয়। সেখানে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি হলে এবং এক পর্যায়ে শরীরে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে ডাক্তার শফিউর রহমান তাকে দ্রুত ঢাকা পপুলার হাসপাতালে ভ্যান্টিলেশনে নেবার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী শায়লা রহমানকে আশঙ্কাজনক  অবস্থায় ঢাকা ধানমন্ডী পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার সেতুকে পরীক্ষার নীরিক্ষা করে আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। ওই রাতেই সেতুর মৃত্যু হয়।
অস্ত্রপচারের পরবর্তী সময়ে শায়লা রহমানের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হবার কারণে সাত ব্যাগ O+ রক্ত দিতে হয়।
শায়লা রহমান সেতুর বাবা অ্যাভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা পপুলার হসপিটালের ডাক্তার এই মৃত্যুর জন্য ভুল অপারেশনকে দায়ী করেছেন। অপারেশনের সময় আমার মেয়ের প্রস্রাবের নাড়ী কেটে ফেলা হয়েছে এবং ফুসফুস ছিড়ে ফেলা হয়েছে। ভুল অস্ত্রপচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শায়লা রহমানে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তার।  তিনি এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার শফিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটি প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণজনিত (পিপিএইচ-পোস্ট পার্টাম হেমারেজ) মৃত্যু বলে দাবী করেন। মাগুরা জেলা সিভিল সার্জন শামীম কবির বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

মাগুরায় ডাক্তার দম্পতির ভুল চিকিৎসায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রীর মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৭:২৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ৭ এপ্রিল ২০২৪
রনি আহমেদ রাজু, মাগুরা জেলা প্রতিনিধি :
মাগুরা শহরের হাজী আব্দুল হামিদ সড়কের লাইফ কেয়ার নামের একটি প্রাইভেট ক্লিনিকে চিকিৎসকের ভুল অস্ত্রপচারে শায়লা রহমান সেতু (২৫), নামে একজন প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। তিনি মাগুরা শহরের তাঁতিপাড়া এলাকার অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান ফিরোজের মেয়ে এবং জাহাঙ্গীনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের ছাত্রী। তার শ্বশুর বাড়ি কুমিল্লায়। স্বামী আহাম্মদ রায়হান একজন প্রকৌশলী।
নিহত শায়লা রহমানের বাবা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমান অভিযোগ করে বলেন, তার মেয়ে শায়লাকে তিনি বৃহস্পতিবার রাতে লাইফ কেয়ার ক্লিনিকে ভর্তি করেন। ওই রাতে সাড়ে দশটায় ডাক্তার জাফরিন আকতার মেয়ের শরীরে অস্ত্রপচার চালান। শায়লা রহমান একটি পুত্র সন্তান জন্ম দেন। কিন্তু সন্তান জন্মের পর থেকেই শায়লা রহমানের শরীরে নানা জটিলতা দেখা দেয়। পাশাপাশি চিৎকার করে ঘন ঘন জ্ঞান হারাতে থাকেন। অপারেশনের পর রক্ত বন্ধ না হওয়ায় রাত তিনটায় ডাক্তার জাফরিন আক্তারের স্বামী মাগুরা ২৫০ শয্যা হাসপাতালের সার্জারি কলসালটেন্ট ডাক্তার শফিউর রহমানকে জানালে তিনি এসে পুনরায় সেতুকে অপারেশন করেন। এরপরেও রোগীর অবস্থার উন্নতি না হলে ০৫ এপ্রিল সকাল ছয়টায় তড়িঘড়ি করে লাইফ কেয়ার ক্লিনিক থেকে সদর হাসপাতালে রোগীকে হস্তান্তর করেন।
সদর হাসপাতালে অন্যান্য ডাক্তারের সহায়তায় পুনরায় সেতুকে আবার সার্জারি করা হয় এবং দীর্ঘ ৫ ঘন্টা অপারেশন থিয়েটার মধ্যে রাখা হয়। সেখানে রোগীর অবস্থা আরো অবনতি হলে এবং এক পর্যায়ে শরীরে অক্সিজেন সংকট দেখা দিলে ডাক্তার শফিউর রহমান তাকে দ্রুত ঢাকা পপুলার হাসপাতালে ভ্যান্টিলেশনে নেবার পরামর্শ দেন। সে অনুযায়ী শায়লা রহমানকে আশঙ্কাজনক  অবস্থায় ঢাকা ধানমন্ডী পপুলার হাসপাতালে ভর্তি করা হলে কর্তব্যরত ডাক্তার সেতুকে পরীক্ষার নীরিক্ষা করে আইসিইউ ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। ওই রাতেই সেতুর মৃত্যু হয়।
অস্ত্রপচারের পরবর্তী সময়ে শায়লা রহমানের অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হবার কারণে সাত ব্যাগ O+ রক্ত দিতে হয়।
শায়লা রহমান সেতুর বাবা অ্যাভোকেট মিজানুর রহমান বলেন, ঢাকা পপুলার হসপিটালের ডাক্তার এই মৃত্যুর জন্য ভুল অপারেশনকে দায়ী করেছেন। অপারেশনের সময় আমার মেয়ের প্রস্রাবের নাড়ী কেটে ফেলা হয়েছে এবং ফুসফুস ছিড়ে ফেলা হয়েছে। ভুল অস্ত্রপচারের ফলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে শায়লা রহমানে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি তার।  তিনি এ ব্যাপারে চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন বলে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত ডাক্তার শফিউর রহমানের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি এটি প্রসব পরবর্তী রক্তক্ষরণজনিত (পিপিএইচ-পোস্ট পার্টাম হেমারেজ) মৃত্যু বলে দাবী করেন। মাগুরা জেলা সিভিল সার্জন শামীম কবির বলেন, এ বিষয়ে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

প্রিন্ট