চলছে পবিত্র রমজান মাস। রোজা রাখছেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লীরা। রোজা রাখা এমনিতেই একটি কষ্টকর বিষয়। কিন্তু সেই কষ্টকে আরও বহুগুনে বাড়িয়ে দিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ। গত ৩/৪ দিন ধরে নরসিংদী জেলা জুড়ে ভয়ংকর লোডশেডিংয়ে রোজাদারদের জীবন ভয়াবহ হয়ে উঠেছে। নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় সেহরি ও ইফতার এবং নামাজে পোহাতে হচ্ছে ভোগান্তি। প্রচন্ড গরম, লোডশেডিং এবং তার সাথে যোগ হয়েছে মশা। যা বিভৎস্য এক নরক যন্ত্রণা। তাই রোজা রেখেও পল্লী বিদ্যুতের লোকদের গালাগালি করছেন অনেকেই। কাজ করে একটু ফ্যানের বাতাসও জুটছে না সাধারণ মানুষের কপালে।
অন্যদিকে সারাদিন রোজা রেখে ইফতার করে তারাবি নামাজ পড়ে ঘুমাতে গেলেই পড়তে হচ্ছে লোডশেডিং এর শঙ্কায়।নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ না পাওয়ায় ঘুমাতে পারছেন না সময় মত। তাই সেহরির সময় উঠতেও কষ্ট পোহাতে হচ্ছে রোজাদারদের। মা -বোনদের অবস্থা আরো নাজুক। আগুনের পাশে থেকে রান্না করে গরমে অস্থির হয়ে পাচ্ছেন না একটু ফ্যানের বাতাস। যাদের ছোট বাচ্চা রয়েছে তারা সারারাত জেগে হাতপাখার বাতাস করছেন। এক অমানবিক জীবন যাপন করছেন সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষ। অন্যদিকে পল্লী বিদ্যুতের সাথে সম্পৃক্ত ব্যবসায়ীরাও পড়েছেন চরম ভোগান্তিতে। ব্যহত হচ্ছে তাদের চাহিদা মত উৎপাদন। বড় ধরনের লোকসানের সম্মুখীন তারাও।
শহরে এক ঘন্টা পর বিদ্যুৎ এসে থাকছে ২০-৩০ মিনিট। মুহূর্তেই শহর আচ্ছন্ন হচ্ছে এক ভুতুড়ে পরিবেশে। গ্রামের অবস্থা আরো ভয়াবহ। সেখানে বিদ্যুৎ পায় না বরঞ্চ মাঝেমধ্যে আসে। পল্লী বিদ্যুতে সরকার কোটি কোটি টাকা ভর্তুকি দিচ্ছে সাধারণ গ্রাহক নিয়মিত পরিশোধ করছেন অতিরিক্ত বিল। তা সত্ত্বেও বাংলাদেশে পল্লী বিদ্যুতের এই তামাশা যেন নিয়তির এক চরম খেলা! কেন এবং কি কারনে এই বিদ্যুৎ নিরবিচ্ছিন্ন করা যাচ্ছে না তার রহস্য রয়েছে অধরা! ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে সবচেয়ে বেশি লাভবান হচ্ছে ইলেকট্রিক কোম্পানি গুলি। বহুগুনে বেড়েছে চার্জার লাইট, চার্জার ফ্যান, আইপিএস এর চাহিদা। তাই সাধারণ মানুষ মনে করছেন এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে রয়েছে পল্লী বিদ্যুতের গোপন যোগাযোগ। ইলেকট্রিক কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়েই ঘন ঘন লোডশেডিং দিচ্ছেন পল্লী বিদ্যুতের সাথে সংশ্লিষ্টরা।
এসব বিষয় নিয়ে মোবাইলে এবং সাক্ষাতে কথা হয় নরসিংদী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির ২ এর জেনারেল ম্যানেজার শেখ মনোয়ার মোর্শেদের সাথে। তিনি জানান, পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) লি: আমাদের যতটুকু বিদ্যুৎ দিচ্ছেন তা চাহিদা অনুযায়ী কম। তাই লোডশেডিং হচ্ছে। পল্লী বিদ্যুৎ ইচ্ছাকৃত বন্ধ রাখা বা জমিয়ে রাখা সম্ভব না।
পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেড নরসিংদীর নির্বাহী প্রকৌশলী মোবাইলে জানান, এখানে আমার কমবেশি দেওয়ার কোন সুযোগ নাই। আমি জাতীয় ভাবে যতটুকু বরাদ্দ পাচ্ছি পল্লী বিদ্যুৎ কে তাই দেওয়া হচ্ছে। নরসিংদীতে আমাদের চাহিদা সর্বোচ্চ ১৮৭ মেগা ওয়াট পর্যন্ত হয়েছে। আমি পাচ্ছি সর্বোচ্চ ১৩০মেগা ওয়াট। গরমের সাথে চাহিদা কম বেশিও হচ্ছে।জেনারেশন বৃদ্ধি পেলে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। ঈদের আগে এই সমস্যার সমাধান হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
প্রিন্ট