ঢাকা , বুধবার, ০৮ মে ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

যশোরে সময় টিভি’র দুই সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল যশোরে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মৃধা ও চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের উপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের দুই সদস্য ক্যামেরা ভাংচুরের চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে। আজ বুধবার দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যশোরের সার্জারি ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে।

 

সময় টিভির যশোরের স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল মৃধা জানান, বেনাপোল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের ছবি সংগ্রহ করতে তিনি ক্যামেরাপারসন আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে করে হাসপাতালে যান। এ সময় আহত ওই দুই ব্যক্তির ছবি নিতে গেলে পুলিশ সদস্য হাফিজ ও রবিউল তাদের বাধা দেন। এমন কি চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদকে গলা টিপে দেয়ালে ঠেসে ধরেন তারা। ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় ওই দুই পুলিশ সদস্য দুই সাংবাদিককে আটকেরও হুমকি দেন। এ সংবাদ জানতে পেরে যশোরের অন্য সাংবাদিক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

 

সাংবাদিকদের উপরে হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেছেন। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।

 

সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান বলেন, পুলিশের এমন কর্মকান্ড স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। সাংবাদিক লাঞ্ছনাকারী দুই পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

প্রেসক্লাব যশোরের দপ্তর সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান বলেন, পুলিশের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও আগামীতে এমন ঘটনা রোধে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশা করি।

 

বিএফইউজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নূর ইসলাম বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমন ঘটনা স্বাধীন মত প্রকাশে বড় ধরনের বাধা। ওই দুই পুলিশ সদস্যের এমন শাস্তি হোক যেন আগামীতে এমন ঘটনা না ঘটে।

 

 

এদিকে, এ ঘটনার পর যশোর ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর রূপন কুমার সরকারসহ পুলিশ কর্মকর্তারা প্রেসক্লাব যশোরে আসেন। তারা জুয়েল মৃধা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমানসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

যশোরে সময় টিভি’র দুই সাংবাদিকের উপর হামলার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার

আপডেট টাইম : ০৯:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩ এপ্রিল ২০২৪

২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল যশোরে পেশাগত দায়িত্বপালনকালে সময় টিভির স্টাফ রিপোর্টার, প্রেসক্লাব যশোরের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক জুয়েল মৃধা ও চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদের উপর হামলা চালিয়েছে পুলিশ। এ সময় পুলিশের দুই সদস্য ক্যামেরা ভাংচুরের চেষ্টা চালায় বলে জানা গেছে। আজ বুধবার দুপুরে ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যশোরের সার্জারি ওয়ার্ডে এই ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত দুই পুলিশ সদস্যকে পুলিশ লাইনসে প্রত্যাহার (ক্লোজ) করা হয়েছে।

 

সময় টিভির যশোরের স্টাফ রিপোর্টার জুয়েল মৃধা জানান, বেনাপোল সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের গুলিতে আহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের ছবি সংগ্রহ করতে তিনি ক্যামেরাপারসন আবুল কালাম আজাদকে সঙ্গে করে হাসপাতালে যান। এ সময় আহত ওই দুই ব্যক্তির ছবি নিতে গেলে পুলিশ সদস্য হাফিজ ও রবিউল তাদের বাধা দেন। এমন কি চিত্র সাংবাদিক আবুল কালাম আজাদকে গলা টিপে দেয়ালে ঠেসে ধরেন তারা। ঠেকাতে গেলে তাকেও লাঞ্ছিত করা হয়। এ সময় ওই দুই পুলিশ সদস্য দুই সাংবাদিককে আটকেরও হুমকি দেন। এ সংবাদ জানতে পেরে যশোরের অন্য সাংবাদিক ও পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান।

 

সাংবাদিকদের উপরে হামলার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ। এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তারা।

 

প্রেসক্লাব যশোরের সাধারণ সম্পাদক এসএম তৌহিদুর রহমান বলেন, সাংবাদিকদের উপর হামলার খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যাই। এরপর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বিষয়টি জানানো হয়। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ওই দুই পুলিশ সদস্যকে প্রত্যাহার করেছেন। আমরা তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেখার অপেক্ষায় রয়েছি।

 

সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সভাপতি আকরামুজ্জামান বলেন, পুলিশের এমন কর্মকান্ড স্বাধীন সাংবাদিকতার পরিপন্থী। সাংবাদিক লাঞ্ছনাকারী দুই পুলিশ সদস্যের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।

 

প্রেসক্লাব যশোরের দপ্তর সম্পাদক ও সাংবাদিক ইউনিয়ন যশোরের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌহিদ জামান বলেন, পুলিশের এমন ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরন স্বাধীন সাংবাদিকতার ওপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। এ ঘটনায় তীব্র নিন্দা ও আগামীতে এমন ঘটনা রোধে ওই দুই পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে আশা করি।

 

বিএফইউজের সাবেক যুগ্ম মহাসচিব নূর ইসলাম বলেন, এমন ন্যাক্কারজনক ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। এমন ঘটনা স্বাধীন মত প্রকাশে বড় ধরনের বাধা। ওই দুই পুলিশ সদস্যের এমন শাস্তি হোক যেন আগামীতে এমন ঘটনা না ঘটে।

 

 

এদিকে, এ ঘটনার পর যশোর ডিবি পুলিশের ইন্সপেক্টর রূপন কুমার সরকারসহ পুলিশ কর্মকর্তারা প্রেসক্লাব যশোরে আসেন। তারা জুয়েল মৃধা, প্রেসক্লাব যশোরের সভাপতি জাহিদ হাসান টুকুন ও সাধারণ সম্পাদক এস এম তৌহিদুর রহমানসহ সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময় করেন এবং উদ্ভূত পরিস্থিতিতে দুঃখ প্রকাশ ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দেন।