কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে রাস্তা থেকে তুলে বাসায় নিয়ে নির্যাতনের ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের বহিষ্কারসহ জড়িতদের বিচার দাবিতে বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছেন দলটির নেতাকর্মীরা। আজ শুক্রবার (২২ মার্চ) বেলা ১১টায় খোকসা বাসস্টান্ডে এসব কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।
গতকাল বৃস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোকসা থানা উপজেলার শমসপুর বাজারের রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে সদর খানের বাড়িতে নির্যাতনের করা হয় বলে দাবি ভুক্তভোগী আলমগীর হোসেনের। তাকে রাস্তা থেকে তুলে নেওয়ার সিসিটিভি ফুটেজ ইতোমধ্যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় আহত আলমগীর হোসেনকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
সিসি টিভির ফুটেজে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার (২১ মার্চ) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে খোকসার শমসপুর বাজারের পাশের রাস্তা থেকে কয়েকজন মিলে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আলমগীর হোসেনকে জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন।
আলমগীর হোসেন অভিযোগ করে বলেন, জোর করে তাকে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সদর উদ্দিন খানের শমসপুরের বাড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে সদর খান তাকে বেতের লাঠি দিয়ে পিটিয়েছেন। সদর খানের ভাই রহিম খানের পক্ষে উপজেলা নির্বাচনে ভোট করতে অস্বীকার করলে তার বুকের উপর পা দিয়ে চাপা দেন এবং মুখে অস্ত্র ঢুকিয়ে নির্যাতন করেন।
বৃহস্পতিবার বিকেলেই সদর খান, তার ভাই রহিম খান ও রহিম খানের ছেলেসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ জানান আলমগীর হোসেনের ছেলে সজিব হোসেন।
বিষয়টি জানা-জানি হলে ক্ষোভে ফুসে ওঠেন দলটির তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। আজ শুক্রবার বেলা ১১টায় খোকসা বাসস্ট্যান্ডে সদর উদ্দিন খান ও রহিম খানের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা এবং দল থেকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ ও বিশাল মানববন্ধন করেছেন তারা।
এর আগে উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা চেয়ারম্যান বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে বিভিন্ন স্লোগান দিয়ে কয়েক হাজার নেতাকর্মী বাসস্ট্যান্ডে আসেন। কয়েকবার দল ও দলের প্রতীকের বিরুদ্ধে অবস্থান নেওয়াসহ নানা কারণে বিতর্কিত জেলার সভাপতি সদর উদ্দিন খানের দল থেকে বহিষ্কারসহ দৃষ্ঠান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন তারা।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বাবুল আক্তার বলেন, ‘গত জাতীয় নির্বাচনেও খোকসা কুমারখালী আসনে নৌকার বিপক্ষে ভোট করেছেন সদর খান। তার বিরুদ্ধে গেলেই দলীয় নেতাকর্মীদের ওপর নির্যাতন চালান তিনি। এবার দলীয় ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।’
এ ঘটনার মামলায় সদর উদ্দিন খানকে আসামি না করতে থানা থেকে চাপ দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগীর স্বজনরা। এ বিষয়ে কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পলাশ কান্তি নাথ বলেন, ‘অভিযোগের তদন্ত চলছে। কোনো ব্যক্তির নাম বাদ দেওয়া কিংবা যোগ করার কোনো ব্যাপার নেই। তদন্তে যাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া যাবে, তাদের বিরুদ্ধেই মামলা নেওয়া হবে।’
জেলার শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে নিজ দলেরই নেতাকে নির্যাতনের অভিযোগে রাজনৈতিক অঙ্গনে চলছে আলোচনা-সমালোচনার ঝড়।
প্রিন্ট