রাজশাহীর তানোরের সীমান্তবর্তী মান্দায় রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজে ভয়াবহ অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে এই রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজ করা হচ্ছে। উপজেলা সদর থেকে বিজয়পুর মোড় পর্যন্ত ২ দশমিক ২৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যে রাস্তা প্রশস্তকরণে ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৬৭ লাখ টাকা । মেসার্স নিরা-মুন্নী নামের ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজের কার্যাদেশ পেয়েছেন। কিন্তু এলজিইডির জনৈক কর্মকর্তা কার্যাদেশ কিনে নিয়ে সাব-ঠিকাদারদের দিয়ে কাজ করছেন। ফলে কতিপয় কর্মকর্তার অলিখিত নির্দেশনায় রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজে ভয়াবহ অনিয়ম করা হচ্ছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। তারা বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগের কতিপয় কর্মকর্তার জড়িত থাকার ঘটনায় জনমনে চরম অসন্তোষের সৃষ্টি করেছে।
স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, রাস্তাটির দু’পার্শ্বে মোট ৪ দশমিক ৮ মিটার প্রশস্ত করার কথা। কিন্তু প্রশস্ত কাজের সাব বেইজ ও ডাবব্লু বিএম-এ বালির পরিবর্তে ভরাট বালু দিতে দেখা গেছে। সাব বেইজে অর্ধেক বালু ও সমপরিমাণ এক নম্বর ইটের খোয়া দেওয়ার নিয়ম থাকলেও তা দেওয়া হচ্ছে না। খোয়ার পরিবর্তে সিংহভাগ ভরাট বালু ও মাটি ব্যবহার করার অভিযোগ তুলেছেন স্থানীয়রা। এমনকি জিরো পয়েন্ট-৫ বালু ধরা থাকলেও কর্তাদের ইচ্ছায় ব্যবহার করা হচ্ছে ভরাট বালু। এই রাস্তার পাশে ৫০ মিটার প্যালাসাইটিং কাজেও ১২ মিলিমিটার রডের পরিবর্তে ৮ মিলি রড ব্যবহার করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্যালাসাইটিং গাঁথনীতে নিস্নমানের ইট ও সিমেন্টের ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেছেন পথচারীরা।
স্থানীয় অধিবাসীদের অভিযোগ, নিয়ম মেনে কোনো কাজ করা হচ্ছে না। রাস্তা রোলিংয়ের আগে পরে কোনো পানি ব্যবহার করা হচ্ছে না। সাব-বেইজে স্বল্প পরিমান খোয়া এবং অধিক পরিমান ভরাট বালি ব্যবহার করে কাজ করে যাচ্ছেন। অভিযোগ করেও কোন কাজ হচ্ছে না। রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজে খোয়ার পরিবর্তে ব্লাকটপ ব্যবহার করে কাজ করে যাচ্ছেন। অনিয়মকে নিয়মে পরিণত করে চালিয়ে যাচ্ছেন এলজিইডির কর্তারা। রাস্তায় কোন পানি ব্যবহার করা হচ্ছে না। রাস্তাটি পূর্বের রাস্তার চেয়ে নিচু রাস্তায় পরিণত হয়েছে। ব্লাকটপ কেটে রাস্তা প্রশস্তকরণ কাজে ব্যবহার করছেন।
- আরও পড়ুনঃ হয়তো আর ঘরে ফেরা হবে না বাগাতিপাড়ার জয়ের
স্থানীয়রা আরো অভিযোগ করে বলেন, রাস্তাটি মেসার্স নিরা মুন্নী নামে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান পাওয়ার পর অধিক লাভে তা বিক্রি করে দিয়েছেন। কাজটি ক্রয় করেছেন কয়েকজন সাব-ঠিকাদারসহ এক এলজিইডির সহকারি প্রকৌশলী। যার কারণে ইচ্চামত কাজ করে যাচ্ছেন তারা। এবিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা এলজিইডি প্রকৌশলী শাইদুর রহমান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, নিয়ম মেনে সঠিক ভাবে কাজ করা হচ্ছে। তবে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের কোনো বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।
প্রিন্ট