ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

জলদস্যুর কবলে পণ্যবাহী বাংলাদেশী জাহাজ

হয়তো আর ঘরে ফেরা হবে না বাগাতিপাড়ার জয়ের

সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া পণ্যবাহী বাংলাদেশী জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রদের মধ্যে রয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ (২৫)। ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে আটকা পড়ার খবরে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা। এরই মধ্যে শেষ বারের মতো পরিবারের (চাচাতো ভাই শারুফ হোসেন) সঙ্গে কথা বলে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

 

জয় উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সালাইনগর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে। ওই জাহাজের অর্ডিনারি সি-ম্যান (সাধারণ নাবিক) হিসেবে কর্মরত আছেন। সর্বশেষ যোগাযোগে তিনি জানান, দস্যুরা তাদের মোবাইল কেড়ে নিচ্ছে। আর কথা নাও হতে পারে কিন্তু এসব তার মা-বাবাকে যেন না জানানো হয়।

 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জলদস্যুদের হাতে আটকের পরে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জয় বিষয়টি তার চাচাতো ভাই মারুফ আলীকে জানান এবং মা-বাবা দুশ্চিন্তা করবেন ভেবে তাদের জানাতে নিষেধ করেন। এরপর কয়েক দফা যোগাযোগ করে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন।

 

সর্বশেষ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় জয় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় তিনি জানান, জলদস্যুরা তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে নিচ্ছে। তাই এরপরে আর হয়তো যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। হয়তো কোনোদিন বাড়িতেও ফেরা হবে না তার এ কথা বলে ফোন কেটে দেয়া হয়। তারপর থেকেই জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানায় তার পরিবার।

 

নাবিক জয় মাহমুদের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, বাড়ির বাইরে থাকায় ফোনে প্রথম ছেলের আটকের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে বাসায় এলে বিষয়টি নিশ্চিত হন। হঠাৎ ছেলের জলদস্যুদের হাতে আটকের খবরে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে তিনি জয় মাহমুদসহ আটক বাংলাদেশী নাবীকদের দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফেরতেরও দাবি জানান।

 

জানাযায়, কে.এস.আর.এম. গ্রুপের মালিকানাধীন এস.আর. শিপিংয়ের জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এবং দেড়টার দিকে মালিকপক্ষকে বার্তা পাঠায়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

 

খবর পেয়ে জয়ের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভার.) হেলাল উদ্দিন।

 

অন্যদিকে, এমভি আব্দুল্লাহ এবং ২৩ নাবিকের মুক্তিপণ বাবদ ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে জলদস্যুরা। এনিয়ে জাহাজটির মালিকপক্ষ দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

জলদস্যুর কবলে পণ্যবাহী বাংলাদেশী জাহাজ

হয়তো আর ঘরে ফেরা হবে না বাগাতিপাড়ার জয়ের

আপডেট টাইম : ০৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৩ মার্চ ২০২৪

সোমালিয়ান জলদস্যুদের কবলে পড়া পণ্যবাহী বাংলাদেশী জাহাজের ২৩ নাবিক ও ক্রদের মধ্যে রয়েছেন নাটোরের বাগাতিপাড়ার জয় মাহমুদ (২৫)। ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের হাতে আটকা পড়ার খবরে দুশ্চিন্তায় পড়েছে পরিবার ও আত্মীয়স্বজনরা। এরই মধ্যে শেষ বারের মতো পরিবারের (চাচাতো ভাই শারুফ হোসেন) সঙ্গে কথা বলে বিদায় নিয়েছেন তিনি।

 

জয় উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের সালাইনগর গ্রামের জিয়াউর রহমানের ছেলে। ওই জাহাজের অর্ডিনারি সি-ম্যান (সাধারণ নাবিক) হিসেবে কর্মরত আছেন। সর্বশেষ যোগাযোগে তিনি জানান, দস্যুরা তাদের মোবাইল কেড়ে নিচ্ছে। আর কথা নাও হতে পারে কিন্তু এসব তার মা-বাবাকে যেন না জানানো হয়।

 

পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জলদস্যুদের হাতে আটকের পরে মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুরে জয় বিষয়টি তার চাচাতো ভাই মারুফ আলীকে জানান এবং মা-বাবা দুশ্চিন্তা করবেন ভেবে তাদের জানাতে নিষেধ করেন। এরপর কয়েক দফা যোগাযোগ করে তাদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত করেন।

 

সর্বশেষ মঙ্গলবার (১২ মার্চ) সন্ধ্যায় জয় তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন। সে সময় তিনি জানান, জলদস্যুরা তাদের মোবাইল ফোন নিয়ে নিচ্ছে। তাই এরপরে আর হয়তো যোগাযোগ করা সম্ভব হবে না। হয়তো কোনোদিন বাড়িতেও ফেরা হবে না তার এ কথা বলে ফোন কেটে দেয়া হয়। তারপর থেকেই জয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে বলে জানায় তার পরিবার।

 

নাবিক জয় মাহমুদের বাবা জিয়াউর রহমান বলেন, বাড়ির বাইরে থাকায় ফোনে প্রথম ছেলের আটকের বিষয়ে জানতে পারেন। পরে বাসায় এলে বিষয়টি নিশ্চিত হন। হঠাৎ ছেলের জলদস্যুদের হাতে আটকের খবরে দুশ্চিন্তায় রয়েছেন বলে জানান তিনি। সেই সঙ্গে তিনি জয় মাহমুদসহ আটক বাংলাদেশী নাবীকদের দ্রুত উদ্ধার করে দেশে ফেরতেরও দাবি জানান।

 

জানাযায়, কে.এস.আর.এম. গ্রুপের মালিকানাধীন এস.আর. শিপিংয়ের জাহাজটি মঙ্গলবার (১২ মার্চ) দুপুর ১টার দিকে জলদস্যুদের কবলে পড়ে এবং দেড়টার দিকে মালিকপক্ষকে বার্তা পাঠায়। জাহাজটি মোজাম্বিক থেকে কয়লা নিয়ে সংযুক্ত আরব আমিরাতে যাওয়ার পথে ভারত মহাসাগরে জলদস্যুদের কবলে পড়ে।

 

খবর পেয়ে জয়ের বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়ে পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান (ভার.) হেলাল উদ্দিন।

 

অন্যদিকে, এমভি আব্দুল্লাহ এবং ২৩ নাবিকের মুক্তিপণ বাবদ ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বা ৫০ লাখ ডলার দাবি করেছে জলদস্যুরা। এনিয়ে জাহাজটির মালিকপক্ষ দস্যুদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে বলে খবর পাওয়া গেছে।