কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা পল্লীতে অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ১০০ বিঘা জমির পানবরজের প্রায় দেড় কোটি পিলি পান পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। যার ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ১৪ কোটি টাকা বলে জানিয়েছে ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষীরা।
বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে আগুনের লেলিহান শিখায় জ্বলছিলো একরের পর এক পান বরজ, ফসলি জমি ও বসত বাড়ি। পান চাষিদের আর্তনাদ। চোঁখের সামনে চাষীদের লাখ লাখ টাকার পান বরজ আগুনে পুড়ে ছাঁই হয়ে যায় মূর্হূতের মধ্যে। আগুনের তীব্রতা ও অত্যাধীক বাতাস থাকায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আগুন নিভাতে চরম হিমশিম খাই তারা। পরে মোট ৪টি ফায়ার সার্ভিস ইউনিট ৭ গ্রামে গিয়ে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানি দিয়ে প্রায় ৬ ঘন্টা পর আগুন নিভাতে সক্ষম হয়।
রোববার ১০ মার্চ বেলা সাড়ে ১১টার সময় উপজেলার বাহাদুরপুর ইউনিয়নের পদ্মার তীরে রায়টা পাথর ঘাট সন্নিকটে পুরাতন পাড়া পান চাষী সিরাজের পান বরজে প্রথমে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। পরে একই গ্রামের নতুন পাড়া গ্রামের মিলনের পান বরজে হঠাৎ করে আগুনের লেলিহান ছড়িয়ে পরে। মাধপপুর, আড়কান্দি,কাজি পাড়া, মালি পাড়া, গোসাই পাড়াসহ মোট সাতটি গ্রামের পান বরজে আগুন ছড়িয়ে পরে। পান বরজ গুলো খুবই কাছা কাছি হওয়ায় আগুনের লেলিহান শিখায় ছড়ি গিয়ে পুড়তে থাকে শুকনো খড়কুট পান বরজ গুলো।
আগুনের তীব্রতা এতোই বেশি যে এক কিলোমিটার দূরে ও বাতাসে ছাই উড়ে গিয়ে আগুন ধরতে থাকে। এমন খবরের ভিত্তিতে ফায়ার সার্ভিসের ৪টি ইউনিট ভেড়ামারা,মিরপুর,দৌলতপুর ও পরে পার্শ্ববতী উপজেলা ঈশ্বরদী থেকে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা পানবরজের আগুন নিভায়। তাদেও ঐকান্তিক নিরলস প্রচেষ্টায় বিকেল সাড়ে ৪টার সময় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
বাহাদুরপুর ইউপি চেয়ারম্যান সোহেল রানা পবন সাংবাদিকদের জানান, ১০ মার্চ রবিবার বেলা সাড়ে ১১টার সময় রায়টা পাথর ঘাট এলাকার মাঠে আকস্মিক ভাবে একের পর এক পান বরজে আগুন লাগতে শুনে ঘটনা স্থলে গিয়ে হতভম্ব হয়ে পরি। এমন আগুন লাগা আমার বয়সে দেখিনি। দেখছি মুহূর্তের মধ্যে বাহাদুরপুরের ৬/৭টা গ্রামে আশপাশের পান বরজে ছড়িয়ে পরে আগুনের লেলিহান।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্থ পান চাষী ওহায়েদ মেম্বর,সাফিকুল ও আরজ আলী জানান,পান বরজে হঠাৎ অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত ঘটে। মূহুর্তের মধ্যেই বাতাসে এই আগুনে আশেপাশের অন্যান্য পান বরজে ছড়িয়ে পড়ে। ধারনা করা হচ্ছে ১০০বিঘা জমির প্রায় দেড় কোটি পিলি পানের বরজ পুড়ে ছাই হয়ে গেছে।
এ ব্যাপারে ভেড়ামারা ফায়ার সার্ভিসের ষ্টেশন অফিসার শরীফুল ইসলাম জানান,সংবাদ শুনে দ্রুত ঘটনাস্থলে য়ায়। সেখানে আগুন নিয়ন্ত্রন করতে ৪টি ইফনিট কাজ করে। প্রায় ৬ঘন্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। পানের বরজে কেউ শত্রুতা করে আগুন ধরিয়ে দিতে পারে। বিশাল এলাকাজুড়ে পান বরজে অগ্নিকাণ্ডে পান চাষীদেও ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
পান বরজের এক মালিক কামাল হোসেন জানান, আমার সঙ্গে কারোর কোন শত্রুতা নেই। কে বা কাহারা আমার পানের বরজে আগুন দিয়েছে আমি জানি না। আমি আল্লাহর কাছে বিচার দিয়েছি।
ভেড়ামারা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জহুরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
প্রিন্ট