ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে এক ইউপি মেম্বার কর্তৃক ধর্ষনের ফলে এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী গৃহবধূ কন্যা সন্তান প্রসব করেছে। জন্মগ্রহণের পর ১৩ দিন কেটে গেলেও সদ্যোজাত শিশুটি পায়নি বাবার স্নেহ। হয়তো বড় হয়েও পাবে না বাবার স্নেহ-ভালোবাসা, এমনকি পিতৃপরিচয়।
অভিযুক্ত ওই জনপ্রতিনিধি হলেন উপজেলার ময়না ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান ইউপি সদস্য (মেম্বার) মো. জাহাঙ্গীর শিকদার (৩৫)। তিনি ওই ইউনিয়নের মুড়াইল গ্রামের ইব্রাহীম শিকদারের ছেলে।
ইউপি মেম্বার জাহাঙ্গীর কর্তৃক ধর্ষনের ফলে স্ত্রী অন্ত:স্বত্ত্বা হওয়ার কারণে স্ত্রীকে তার বাবার বাড়ি রেখে এসেছেন স্বামী। এমনকি স্ত্রীর সাথে আর যোগাযোগও রাখছেন না। এতে বুদ্ধি ও মানসিকভাবে পিছিয়ে পড়া মেয়েটির হতভাগা বাবা-মা এখন চরম বেকায়দায় পড়েছেন প্রতিবন্ধী মেয়ে আর তার অবাঞ্ছিত শিশু কন্যাকে নিয়ে। এমনিতেই অভাবের সংসার, তারপর কি পরিচয়ে বড় হবে এই শিশু- এনিয়ে দুশ্চিন্তায়, উৎকণ্ঠায় ঘুম নেই সদ্যোজাত শিশুর নানা-নানির। তাদের আশঙ্কা, মেয়েকে আর ঘরে তুলে নেবে না তার স্বামী। আর সদ্যোজাত শিশুটিও পাবে না তার বাবার পরিচয়।
জানা গেছে, উপজেলার গুনবহা ইউনিয়নের রেনিনগর গ্রামের এক বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ের ৬/৭ বছর আগে বিয়ে হয় পাশের ময়না ইউনিয়নে। ওই মেয়েটির স্বামী পরের বাড়িতে কিংবা অন্যের ক্ষেতে খামারে কাজ করে সংসার চালান। মাঝে মধ্যে ইউপি সদস্য মো. জাহাঙ্গীর শিকদার তার বাড়িতে কাজের জন্য ওই গৃহবধূকে (বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী মেয়ে) নিয়ে যেতেন। এক পর্যায়ে সহজ সরলতার সুযোগে ভয়-ভীতি দেখিয়ে গৃহবধূকে প্রায়শ: ধর্ষণ করতেন। দীর্ঘদিন ধরে ধর্ষণের ফলে গৃহবধূ অন্ত:স্বত্ত্বা হয়ে পড়েন। এক পর্যায়ে গৃহবধূ তাকে ধর্ষনের কথা তার স্বামীকে খুলে বলেন। এরপর স্বামী অভিযুক্ত ইউপি সদস্যকে (মেম্বার) আসামী করে ফরিদপুর আদালতে মামলা করেন।
প্রসঙ্গত ওই গৃহবধূর স্বামীর আগের স্ত্রীর তিন সন্তান থাকায় তিনি আর সন্তান না নিতে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি গ্রহণ করেছেন।
এক প্রশ্নের জবাবে অভিযুক্ত ইউপি মেম্বার জাহাঙ্গীর শিকদার বলেন, চিন্তা করে লাভ আছে? আল্লাহ যা রাখছে কপালে তাই হবে। ডিএনএ টেস্টে যা হয় হবে। আদালত যে সিদ্ধান্ত নেবে তাই মেনে নেব। আদালতে আমার জেল হয় ফাঁসি হয় হবে। আইনতো আমি কম-বেশি বুঝি। নাহলে আমি মেম্বার হইছি কেমনে? হাজত খেটে আইছি আমার মান-সম্মানতো সবই গেছে।
গৃহবধূর স্বামী বলেন, আমি আমার স্ত্রীর দায়িত্ব নেব। কিন্তু পরের বাচ্চার দায়িত্ব নেব না। যে আমার স্ত্রীর সর্বনাশ করেছে আমি তার কঠিন শাস্তি চাই।
এ ব্যাপারে ময়না ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হক মৃধা বলেন, ওরে (জাহাঙ্গীর) বাঁচাতেও যাব না, ওরে মারতেও যাব না। পাপ করলে পাপের প্রায়শ্চিত্ত করতে হবে।
প্রিন্ট