১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামীণ ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ ভবনে অবস্থিত আটটি অফিস দখল করে নেওয়া হয় বলে গত বৃহস্পতিবার সংবাদ সম্মেলনে জানান ড. ইউনূস। তিনি বলেন, ব্যবসার মুনাফার টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় হয়নি।
তবে গতকালের সংবাদ সম্মেলনে গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান এ কে এম সাইফুল মজিদ দাবি করেন, ড. ইউনূস ব্যবসার মুনাফা দিয়ে গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণসহ অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠান করেননি। এসব প্রতিষ্ঠান মুনাফার জন্য নয়। তিনি গ্রামীণ ব্যাংকের টাকায় এসব প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন। ড. ইউনূস গ্রামীণ ব্যাংকের পূর্ণকালীন কর্মকর্তা ছিলেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান বলেন, গ্রামীণ টেলিকম, গ্রামীণ কল্যাণ, গ্রামীণ ফান্ডসহ প্রায় ৫১টি প্রতিষ্ঠানের সবগুলোই কিন্তু গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে অনুমোদন হয়েছে, কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান পর্ষদ সভাকে অবহিত করেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের মেমোরেন্ডাম অব অ্যাসোসিয়েশন, আর্টিকেলস অব অ্যাসোসিয়েশনে থাকা ধারার ক্ষমতাবলে তারা সাতটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদ পরিবর্তনের চিঠি পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে তিনটির চেয়ারম্যান পরিবর্তন করেছেন, কয়েকটিতে পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান ছিলেন ড. ইউনূস এবং পরিচালক হিসেবে রয়েছেন তারই বাছাই করা অল্প কিছু লোক, যাদের তিনি এতগুলো প্রতিষ্ঠানের দায়িত্ব দিয়ে রেখেছেন।
গ্রামীণ ব্যাংকের চেয়ারম্যান জানান, গত সোমবার গ্রামীণ ব্যাংকের ১৫৫তম বোর্ড সভায় সাতটি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান ও নির্দিষ্টসংখ্যক পরিচালক মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, যা সম্পূর্ণ গ্রামীণ ব্যাংকের সৃষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর আইন মেনে করা হয়েছে। এখানে কোনো বেআইনি বা নিয়মবহির্ভূত পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
গ্রামীণ ব্যাংক ড. ইউনূসের আটটি প্রতিষ্ঠান দখল করেছে বলে যে অভিযোগ করা হয়েছে, সেটি সঠিক নয় বলে উল্লেখ করেন সাইফুল মজিদ। তিনি বলেন, গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের ৪২তম সভায় কোম্পানি আইনের আলোকে ১৯৯৬ সালে গ্রামীণ ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের অনুমোদনক্রমে গ্রামীণ কল্যাণ গঠিত হয়। বিভিন্ন দাতা সংস্থার কাছ থেকে ঋণদানের জন্য গ্রামীণ ব্যাংককে অনুদান হিসেবে দেওয়া ৪৪৭ কোটি টাকা গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করা হয়। এ ছাড়া গ্রামীণ ব্যাংকের সোশ্যাল অ্যাডভান্সমেন্ট ফান্ড (এসএএফ) থেকেও ৪৪ কোটি টাকা গ্রামীণ কল্যাণে স্থানান্তর করা হয়।
১৯৯৪ সালে গ্রামীণ ব্যাাংকের পরিচালনা পর্ষদের সিদ্ধান্তে গ্রামীণ টেলিকম নামে ‘নট ফর প্রফিট’ কোম্পানির প্রতিষ্ঠা করা হয়। গ্রামীণ ব্যাংকের এসএএফ ফান্ড থেকে ১১ শতাংশ সুদে ২৪ কোটি ৭৭ লাখ টাকা গ্রামীণ টেলিকমে দেওয়া হয়। একই সঙ্গে গ্রামীণ টেলিকমের অর্জিত লভ্যাংশের অন্তত ৫০ শতাংশ এসএএফে দেওয়ার বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হয়। কিন্তু গ্রামীণ টেলিকম এ পর্যন্ত গ্রামীণ ব্যাংককে সুদ ও লভ্যাংশ বাবদ কোনো টাকা দেয়নি বলে জানান সাইফুল মজিদ। তিনি বলেন, গ্রামীণ টেলিকমের আর্টিকেল অব অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে গ্রামীণ টেলিকমের পর্ষদ চেয়ারম্যান নিয়োগ দেবে গ্রামীণ ব্যাংক।