ঢাকা , শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

লাভলুর প্রমেটানে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, এখন সুখের সংসার ভারতের সঞ্জনার

ভারতের নদীয়া জেলার চরমেঘনা এলাকার মেয়ে সঞ্জনা (২৩) ও বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্ত এলাকার ছেলে লাভলু হোসেন (২৫)। ২০১৯ সালে দুই দেশের সীমানা লাগোয়া পদ্মার শাখা (মাথাভাঙা) নদীতে গোসল করতে গিয়ে পরিচয় হয় তাদের। তারপর গড়ে ওঠে প্রেম।তিন মাসের প্রেম নানা বাধা পেরিয়ে শুভ পরিণয়ে রূপ নেয়। দুই সন্তান নিয়ে  (১৫ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং) ৫ বছর পার হয়ে গেলো তাদের সুখের সংসার।

এলাকাবাসী ও লাভলুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীর মেয়ে সঞ্জনার বাবা প্রথমে এই সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ভালোবাসার টানে সঞ্জনা নদী সাঁতরে এই দেশে চলে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তাদের বিয়ে হয়।

লাভলু বলেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সঞ্জনার নাম রাখা হয় ফাতেমা খাতুন। আমাদের বিয়ে হলেও সঞ্জনার পরিবার প্রথমে তা মেনে নেয়নি। পরে মেনে নিলেও পাসপোর্ট না থাকায় সঞ্জনা তার বাবার বাড়ি যেতে পারে না। তবে তার নাগরিকত্ব জটিলতা প্রায় কেটে গেছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই তার পাসপোর্ট করা সম্ভব হবে।

সঞ্জনা বলেন, পাঁচ বছর আগে নদীর ঘাটে গোসল করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় আমাদের। তখন দশম শ্রেণিতে পড়তাম। একদিন স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্যার সময় ভরা নদী সাঁতরে চলে আসি লাভলুর বাড়িতে। পরে আইনি সব জটিলতা সামলে বিয়ে হয় আমাদের। ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা অনেক সুখে আছি।

লাভলুর বাবা ইদ্রিস আলি বলেন, সব বাধা পেরিয়ে ছেলের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি সঞ্জনাকে নিজের মেয়ের মতো করেই দেখি। ভালোভাবে তারা সংসার করছে। তারা ভালো আছে।

স্থানীয় প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, শুরুতে আইনি জটিলতা ছিল। পরে তা ঠিক হয়েছে। তারা এখন সুখে সংসার করছে। আমরাও সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদা দিয়েছি। তাদের বিপদ আপদে আমরা সব সময় পাশে আছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সরকার আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রেম এমন এক জিনিস যা পরিবার, ধর্ম, কাঁটাতারের বেড়া কোনো বাধাই মানে না। তাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। শত বাধা উপেক্ষা করে তাদের প্রেম বিয়েতে রূপ নিয়েছে। জয় হোক সব ভালোবাসার।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

লাভলুর প্রমেটানে নদী সাঁতরে বাংলাদেশে, এখন সুখের সংসার ভারতের সঞ্জনার

আপডেট টাইম : ০৪:২১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ফেব্রুয়ারী ২০২৪
জিয়াউর রহমান, দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি :

ভারতের নদীয়া জেলার চরমেঘনা এলাকার মেয়ে সঞ্জনা (২৩) ও বাংলাদেশের কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার জামালপুর সীমান্ত এলাকার ছেলে লাভলু হোসেন (২৫)। ২০১৯ সালে দুই দেশের সীমানা লাগোয়া পদ্মার শাখা (মাথাভাঙা) নদীতে গোসল করতে গিয়ে পরিচয় হয় তাদের। তারপর গড়ে ওঠে প্রেম।তিন মাসের প্রেম নানা বাধা পেরিয়ে শুভ পরিণয়ে রূপ নেয়। দুই সন্তান নিয়ে  (১৫ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ইং) ৫ বছর পার হয়ে গেলো তাদের সুখের সংসার।

এলাকাবাসী ও লাভলুর পরিবার সূত্রে জানা গেছে, সনাতন ধর্মাবলম্বীর মেয়ে সঞ্জনার বাবা প্রথমে এই সম্পর্ক কোনোভাবেই মেনে নিতে রাজি হননি। একপর্যায়ে ভালোবাসার টানে সঞ্জনা নদী সাঁতরে এই দেশে চলে এসে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। পরে তাদের বিয়ে হয়।

লাভলু বলেন, ইসলাম ধর্ম গ্রহণের পর সঞ্জনার নাম রাখা হয় ফাতেমা খাতুন। আমাদের বিয়ে হলেও সঞ্জনার পরিবার প্রথমে তা মেনে নেয়নি। পরে মেনে নিলেও পাসপোর্ট না থাকায় সঞ্জনা তার বাবার বাড়ি যেতে পারে না। তবে তার নাগরিকত্ব জটিলতা প্রায় কেটে গেছে। আশা করি কিছুদিনের মধ্যেই তার পাসপোর্ট করা সম্ভব হবে।

সঞ্জনা বলেন, পাঁচ বছর আগে নদীর ঘাটে গোসল করতে গিয়ে প্রেমের সম্পর্ক তৈরি হয় আমাদের। তখন দশম শ্রেণিতে পড়তাম। একদিন স্কুল ফাঁকি দিয়ে বন্যার সময় ভরা নদী সাঁতরে চলে আসি লাভলুর বাড়িতে। পরে আইনি সব জটিলতা সামলে বিয়ে হয় আমাদের। ছেলে-মেয়ে নিয়ে আমরা অনেক সুখে আছি।

লাভলুর বাবা ইদ্রিস আলি বলেন, সব বাধা পেরিয়ে ছেলের ভালোবাসাকে প্রাধান্য দিয়েছি। আমি সঞ্জনাকে নিজের মেয়ের মতো করেই দেখি। ভালোভাবে তারা সংসার করছে। তারা ভালো আছে।

স্থানীয় প্রাগপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আশরাফুজ্জামান মুকুল বলেন, শুরুতে আইনি জটিলতা ছিল। পরে তা ঠিক হয়েছে। তারা এখন সুখে সংসার করছে। আমরাও সামাজিকভাবে তাদের মর্যাদা দিয়েছি। তাদের বিপদ আপদে আমরা সব সময় পাশে আছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে দৌলতপুর কলেজের বাংলা বিভাগের শিক্ষক ও উপজেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক সরকার আমিরুল ইসলাম বলেন, প্রেম এমন এক জিনিস যা পরিবার, ধর্ম, কাঁটাতারের বেড়া কোনো বাধাই মানে না। তাদের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছে। শত বাধা উপেক্ষা করে তাদের প্রেম বিয়েতে রূপ নিয়েছে। জয় হোক সব ভালোবাসার।


প্রিন্ট