যার বিরুদ্ধে মূল অভিযোগ তিনি হলেন পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) কক্সবাজার কার্যালয়ে কর্মরত এসআই মো. শামিম মিয়া। গত ১৮ ডিসেম্বর কক্সবাজারের চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে তার বিরুদ্ধে মামলাটি করা হয়। আদালত অভিযোগ আমলে নিয়ে তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপারকে নির্দেশনা দিয়েছে। এসআই শামিম ছাড়াও মামলায় আসামি করা হয়েছে জেলার মহেশখালী উপজেলার গোরকঘাটা এলাকার উজ্জ্বল কুমারকে।
মামলার আবেদনে ভুক্তভোগী নারী উল্লেখ করেন, মহেশখালী পৌরসভার গোরকঘাটা এলাকার উজ্জ্বল কুমার নামে এক যুবক প্রলোভনে ফেলে ধর্ষণ করায় তিনি বাদী হয়ে কক্সবাজার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১-এ ২০২২ সালের ২৭ এপ্রিল ধর্ষণ মামলা করেন। এরপর আসামি উজ্জ্বল কুমার ওই বছরের ২৬ জুন চকরিয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হয়রানির উদ্দেশ্যে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগে সাজানো মামলা করেন। এই মামলা তদন্তের জন্য পিবিআই কক্সবাজার কার্যালয়ের এসআই শামিম মিয়াকে দায়িত্ব দেওয়া হয়।
মামলার আবেদনে ভুক্তভোগী নারী আরও উল্লেখ করেন, দায়িত্ব পেয়ে এসআই শামিম মিয়া তদন্তকালীন সময়ে তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব এবং ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি করেন। পরে গত ৯ আগস্ট কক্সবাজারের একটি বাসায় ডেকে নিয়ে ১ লাখ টাকা ঘুষ দাবি এবং শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাব দেন। তার দাবি পূরণ না হলে মামলার প্রতিবেদন বিরুদ্ধে দেওয়ার হুমকি দেন ওই পুলিশ কর্মকর্তা। তার প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় গত বছর ১৫ এপ্রিল মামলার বাদী নারীর বিরুদ্ধে আদালতে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেন এসআই শামিম। এরপর গত ৩ নভেম্বর ভোরে ওই নারীর ইমো নম্বরে ভিডিও কল করেন। সে সময় আপত্তিকর বার্তাও পাঠান তিনি।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই শামিম বলেন, ‘ওই নারীর বিরুদ্ধে করা একটি মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলাম। মামলা তদন্তে করতে গিয়ে ওই নারীর বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়ে আদালতে প্রতিবেদন জমা দিই। এরপর বিভিন্ন সময় ওই নারীর সঙ্গে ইমো নম্বরে কথা হয়। বিভিন্ন সময় গভীর রাতেও ওই নারীর সঙ্গে মেসেঞ্জারে কথা হয়েছে। মেসেঞ্জারে ভুলে ওই নারীর সঙ্গে কিছু অশ্লীল বাক্যবিনিময় হয়েছে।’
এ বিষয়ে জানতে পিবিআই কক্সবাজার কার্যালয়ের পরিদর্শক তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ‘এ ঘটনার ব্যাপারে কিছুই জানি না।’
ভুক্তভোগী নারীর করা মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চকরিয়া-পেকুয়া সার্কেলের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার রকিব উর রাজা বলেন, নির্বাচনী ব্যস্ততার কারণে মামলার আসামিদের নোটিস দিয়ে ডাকা হয়নি। দুয়েক দিনের মধ্যে তার কার্যালয়ে হাজির হওয়ার জন্য মামলার আসামিদের ঠিকানায় নোটিস পাঠানো হবে।