ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলায় অপহরণের ১৫ দিন পর একটি পুকুর থেকে হৃদয় হোসেন (১৭) নামের এক কলেজছাত্রের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেপ্তার হৃদয় হোসেনের বন্ধু শাওন মোল্লার (১৯) তথ্যের ভিত্তিতে শনিবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে উপজেলার ঘোষাইল গ্রামের একটি পুকুর থেকে লাশ উদ্ধার করা হয়।
নিহত হৃদয় হোসেন উপজেলার ঘোষাইল এলাকার সৌদিপ্রবাসী নজরুল ইসলামের ছেলে। সে শিকারিপাড়া তোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র ছিল। গ্রেপ্তার শাওন মোল্লা একই এলাকার সাইদুল মোল্লার ছেলে।
নিহত হৃদয়ের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ১৪ নভেম্বর বিকেলে হৃদয় ঘুরতে যাওয়ার কথা বলে বাসা থেকে বের হয়। রাত ১০টা বেজে গেলেও হৃদয় বাসায় না ফেরায় তার মা ফোন দিয়ে তার মুঠোফোন বন্ধ পান। বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে সন্ধান না পাওয়ায় পরদিন ১৫ নভেম্বর নবাবগঞ্জ থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন হৃদয়ের মা ময়না বেগম। ২২ নভেম্বর হৃদয়ের মুঠোফোন থেকে তার মায়ের মুঠোফোনে কল করে পাঁচ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। বিষয়টি কাউকে জানালে হৃদয়কে হত্যার হুমকিও দেওয়া হয়। হৃদয়ের মা অপহরণকারীদের ১০ হাজার টাকা বিকাশ করে পাঠান। তিনি পুলিশকেও বিষয়টি জানান।
২৭ নভেম্বর পুনরায় টাকা পাঠাতে বললে ময়না বেগম বিষয়টি পুলিশকে জানান। তখন পুলিশের পরামর্শে ময়না বেগম টাকা পাঠান। তখন তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় বিকাশ নম্বরটি ট্র্যাক করে উপজেলার বারুয়াখালী বাজারের একটি দোকানের সন্ধান পায় পুলিশ।
সন্ধ্যায় দোকান থেকে টাকা তুলতে এলে শাওন মোল্লা নামের এক যুবককে আটক করে পুলিশ। পরে শাওনের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ঘোষাইল গ্রামের মহিন ব্যাপারীর পরিত্যক্ত পুকুরের কচুরিপানার নিচ থেকে হৃদয়ের গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।
ময়না বেগম বলেন, ‘পাঁচ লাখ টাকা দিতে না পারায় ওরা আমার ছেলেকে হত্যা করে। আমি আমার ছেলের হত্যাকাণ্ডের দ্রুত বিচার চাই। যারা আমার ছেলেকে হত্যা করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’
নবাবগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সিরাজুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় নিহত হৃদয়ের মা মায়না বেগম দুজনকে আসামি করে থানায় একটি মামলা করেছেন। শাওন মোল্লাকে আটক করে আদালতে পাঠানো হলে তিনি এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। এ ঘটনায় জড়িত অপর আসামিকে গ্রেপ্তার করতে অভিযান চলছে।
প্রিন্ট