ঢাকা , সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে কবিরাজের লাশ উদ্ধার Logo পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণাকারী গ্রেফতার Logo শালিখার আড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে মুগ্ধ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা Logo ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ Logo ফরিদপুরের ধর্ষণ মামলার আসামী সোহেল গ্রেপ্তার Logo পাংশায় শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সভায় নতুন কমিটি Logo কুষ্টিয়ায় উলামা সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত Logo নির্বাচন ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারেরা জন্ম নেয়ঃ -আব্দুস সালাম Logo ভেড়ামারায় মাজারে মাদকবিরোধী অভিযান, ভক্তদের হাতে লাঞ্ছিত ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বাবা জিডি করার একদিন পর মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী উদ্ধার

হেফাজত নেতা মামুনুল হক। -ফাইল ছবি

হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল সোমবার ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান তাঁর মেয়েকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে কলাবাগান থানায় জিডি করেন। ওই জিডির ভিত্তিতেই আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসিলার একটি বাসা থেকে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে ডিবি।

আজ দুপুরে ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান ঝর্ণাকে উদ্ধার করার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝর্ণাকে উদ্ধার করে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। বিকেলে তাঁকে তাঁর বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

গতকাল কলাবাগান থানায় করা জিডিতে ওলিয়ার রহমান বলেন, মামুনুল হকের অপকৌশলে ঝর্ণার সুখের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। সেই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে জীবনের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঝর্ণা ঢাকায় আসে। উত্তর ধানমন্ডির একটি বাসায় ঝর্ণা বসবাস করছিলেন বলে তাঁকে জানানো হয়।

জিডিতে আরও বলা হয়, ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর মেয়েকে ইসলামি শরিয়তের বিধান মোতাবেক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন মামুনুল হক। ওই ঘটনার পর তিনি তাঁর মেয়ের ঢাকার ঠিকানায় হাজির হয়ে তাঁকে পাননি। ওলিয়ার রহমানের মনে বিশ্বাস জন্মে, মামুনুল হকের লোকজন তাঁর মেয়েকে অপকৌশল করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছেন।

ওলিয়ার রহমান জিডিতে অভিযোগ করেন, দুদিন আগে ঝর্ণা ফোনের মাধ্যমে তাঁর নাতিকে (ঝর্ণার বড় ছেলে) জানান, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। তাঁর ওপর চাপ যাচ্ছে। তাঁকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে বলেন। যেকোনো সময় তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। তিনি ঢাকায় মামুনুল হকের বোনের বাসায় আছেন। ঢাকায় কোথায় আছেন, জানতে চাইলে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জিডিতে ওলিয়ার রহমান আরও বলেন, তিনি এই ঘটনা তাঁর নাতির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তিনিসহ আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন, চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন।

জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মামুনুল হকের লোকজন যেকোনো মুহূর্তে তাঁর মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে অসৎ অভিপ্রায়ে আটকে তাঁকে হত্যার পর লাশ গুম করতে পারে বলে তাঁদের সন্দেহ হচ্ছে। এমন অবস্থায় তাঁর মেয়েকে জরুরিভাবে উদ্ধার করা আবশ্যক বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।

ওলিয়ার রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সাবেক সেনাসদস্য। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে সম্প্রতি দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।

মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, পাশাপাশি ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব এবং জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।

হেফাজতের বহুল আলোচিত নেতা মামুনুল হককে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন রিমান্ডে আছেন। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। ওই নারীকে তিনি তাঁর ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ হিসেবে দাবি করেন। পরে মামুনুল হকের একাধিক বিয়ের খবর বেরিয়ে আসে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

বাবা জিডি করার একদিন পর মামুনুল হকের কথিত দ্বিতীয় স্ত্রী উদ্ধার

আপডেট টাইম : ০৫:২৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৭ এপ্রিল ২০২১
ডেস্ক রিপোর্টঃ :

হেফাজতে ইসলামের নেতা মামুনুল হকের ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ জান্নাত আরা ঝর্ণাকে উদ্ধার করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা বিভাগ (ডিবি)। গতকাল সোমবার ঝর্ণার বাবা ওলিয়ার রহমান তাঁর মেয়েকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে কলাবাগান থানায় জিডি করেন। ওই জিডির ভিত্তিতেই আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর বসিলার একটি বাসা থেকে ঝর্ণাকে উদ্ধার করে ডিবি।

আজ দুপুরে ডিবির মতিঝিল বিভাগের উপকমিশনার মো. আসাদুজ্জামান ঝর্ণাকে উদ্ধার করার বিষয়টি গণমাধ্যমকে নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঝর্ণাকে উদ্ধার করে রাজধানীর মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে আনা হয়। বিকেলে তাঁকে তাঁর বাবার জিম্মায় দেওয়া হয়েছে।

গতকাল কলাবাগান থানায় করা জিডিতে ওলিয়ার রহমান বলেন, মামুনুল হকের অপকৌশলে ঝর্ণার সুখের প্রথম সংসার ভেঙে যায়। সেই সংসারে দুটি সন্তান রয়েছে। একপর্যায়ে জীবনের তাগিদে কাজের সন্ধানে ঝর্ণা ঢাকায় আসে। উত্তর ধানমন্ডির একটি বাসায় ঝর্ণা বসবাস করছিলেন বলে তাঁকে জানানো হয়।

জিডিতে আরও বলা হয়, ৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের ঘটনার পর তিনি জানতে পারেন, তাঁর মেয়েকে ইসলামি শরিয়তের বিধান মোতাবেক বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনে বাধ্য করেন মামুনুল হক। ওই ঘটনার পর তিনি তাঁর মেয়ের ঢাকার ঠিকানায় হাজির হয়ে তাঁকে পাননি। ওলিয়ার রহমানের মনে বিশ্বাস জন্মে, মামুনুল হকের লোকজন তাঁর মেয়েকে অপকৌশল করে ও ভয়ভীতি দেখিয়ে অজ্ঞাত স্থানে আটকে রেখেছেন।

ওলিয়ার রহমান জিডিতে অভিযোগ করেন, দুদিন আগে ঝর্ণা ফোনের মাধ্যমে তাঁর নাতিকে (ঝর্ণার বড় ছেলে) জানান, তিনি গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। তাঁর ওপর চাপ যাচ্ছে। তাঁকে জরুরিভিত্তিতে উদ্ধার করতে বলেন। যেকোনো সময় তাঁকে মেরে ফেলা হতে পারে। তিনি ঢাকায় মামুনুল হকের বোনের বাসায় আছেন। ঢাকায় কোথায় আছেন, জানতে চাইলে ফোনের অপর প্রান্ত থেকে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। জিডিতে ওলিয়ার রহমান আরও বলেন, তিনি এই ঘটনা তাঁর নাতির কাছ থেকে জানতে পেরেছেন। এ বিষয়ে তিনিসহ আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন, চিন্তিত অবস্থায় দিন পার করছেন।

জিডিতে অভিযোগ করা হয়, মামুনুল হকের লোকজন যেকোনো মুহূর্তে তাঁর মেয়েকে অজ্ঞাত স্থানে অসৎ অভিপ্রায়ে আটকে তাঁকে হত্যার পর লাশ গুম করতে পারে বলে তাঁদের সন্দেহ হচ্ছে। এমন অবস্থায় তাঁর মেয়েকে জরুরিভাবে উদ্ধার করা আবশ্যক বলে জিডিতে উল্লেখ করেন তিনি।

ওলিয়ার রহমান একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি সাবেক সেনাসদস্য। তিনি ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গার গোপালপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ছিলেন। তাঁকে সম্প্রতি দল থেকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ।

মামুনুল হক হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব, পাশাপাশি ঢাকা মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক। এ ছাড়া তিনি বাংলাদেশ খেলাফত মজলিশের মহাসচিব এবং জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসার শিক্ষক।

হেফাজতের বহুল আলোচিত নেতা মামুনুল হককে ১৮ এপ্রিল ঢাকার মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়া মাদ্রাসা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি এখন রিমান্ডে আছেন। মামুনুল হকের বিরুদ্ধে ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জে নতুন-পুরোনো মিলিয়ে অন্তত ১৮টি মামলা রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

৩ এপ্রিল নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ের রয়্যাল রিসোর্টে এক নারীসহ ঘেরাও হন মামুনুল হক। ওই নারীকে তিনি তাঁর ‘দ্বিতীয় স্ত্রী’ হিসেবে দাবি করেন। পরে মামুনুল হকের একাধিক বিয়ের খবর বেরিয়ে আসে।


প্রিন্ট