বাংলাদেশ দূতাবাস লিসবন যথাযোগ্য মর্যাদা ও আনন্দমুখর পরিবেশে ৫২ তম মহান বিজয় দিবস উদযাপন করেছে। বিজয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গনে দিনব্যাপী ব্যানার, পোস্টার, বেলুন, ফেস্টুন এবং রঙিন আলোকসজ্জায় দূতাবাসকে বর্নিল সাজে সজ্জিত করে দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
১৬ ডিসেম্বর সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ দূতাবাসের সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে দিনের কর্মসূচির সূচনা করেন। দুপুর ২ টায় বিজয় দিবস উদযাপনের দ্বিতীয় পর্বে, দূতাবাসের কর্মকর্তা, কর্মচারী ও তাদের পরিবারবর্গ, প্রবাসী বাংলাদেশী নেতৃবৃন্দ, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক, সাংস্কৃতিক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিতিতে দূতাবাসে স্থাপিত জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের প্রতিকৃতিতে রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ পুষ্পস্তবক অর্পণের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় পর্বের অনুষ্ঠানের সূচনা করেন। এর পর প্রবাসী বাংলাদেশী বিভিন্ন সংগঠনের নেতা ও কর্মীগণও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালের প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন।
বিজয় দিবস উপলক্ষে দূতাবাস প্রাঙ্গণে আয়োজন করা হয় বিজয় মেলার। মেলার স্টল সমূহে প্রবাসী বাংলাদেশী নারী উদ্যোক্তাগন বিভিন্ন রকমের পিঠা, খাদ্য-সামগ্রী ও হস্তশিল্পের প্রদর্শন করেন। উক্ত মেলাটি রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ উদ্বোধন করেন, এবং প্রবাসী বাংলাদেশী ছাড়াও বিজয় দিবসে আগাত বিদেশী নাগরিকবৃন্দ নিয়ে বিজয় মেলার স্টলসমূহ পরিদর্শন করেন তিনি।
বিজয় দিবসের আলোচনা সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের স্মরণে এক মিনিট নিরবতা পালনের মধ্যে দিয়ে শুরু হয়। তারপর, মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, পররাষ্ট্র মন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রেরিত বাণী পাঠ করা হয়।
মহান বিজয় দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে আলোচনায় বক্তাগণ বাঙালীদের জীবনে মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন। রাষ্ট্রদূত রেজিনা আহমেদ তাঁর সমাপনী বক্তব্যে, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, মুক্তিযুদ্ধের ৩০ লক্ষ শহীদ, বীরাঙ্গনা এবং জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা প্রকাশ করেন। তিনি সকল প্রবাসীদের আহবান জানান যে, বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনারবাংলা বিনির্মাণে দেশে বিদেশে সকলকে যার যার জায়গা থেকে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টাই বাংলাদেশকে বিশ্বের দরবারে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে সহায়তা করবে। তিনি সকলকে বৈধভাবে রিমিটেন্স প্রেরণের জন্যও অনুরোধ জানান।
আলোচনা পর্বের শেষে, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তাঁর পরিবারবর্গ, জাতীয় চার নেতা এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মোৎসর্গকারী সকল শহিদদের আত্মার মাগফেরাত এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য মোনাজাত করা হয়।
বিজয় দিবস উদযাপন উপলক্ষে দূতাবাসে প্রবাসী শিল্পীদের অংশগ্রহণে এক মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উক্ত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রবাসী শিল্পীগণের অংশগ্রহণে গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশিত হয় যা দর্শকদের বিমোহিত করে। তাছাড়া বিজয় দিবসে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গান, কবিতা ও নৃত্য পরিবেশনা দর্শকের মাঝে মুক্তি সংগ্রামের আবহ সৃষ্টি করে।পরিশেষে, রাষ্ট্রদূত জনাব রেজিনা আহমেদ ক্রীড়া প্রতিযোগিতা এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলের হাতে পুরস্কার তুলে দেন।
প্রিন্ট