ফরিদপুরের সালথায় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে ওলিয়ার শেখ (৫৫) নামের এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (২০ এপ্রিল) দিবাগত রাত ৯ টার দিকে সাধুহাঁটি গ্রামে বাঁশ ঝাড়ের পাশে ওই ব্যক্তিকে কুপিয়ে মারাত্বক জখম করা হয়।
স্থানীয়দের সহায়তায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়। নিহত ওলিয়ার উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের সাধুহাঁটি নামক এলাকার মৃত আদম শেখের ছেলে। পেশায় সে একজন কৃষক বলে জানা গেছে।
যদুনন্দী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খায়ের মুন্সি বলেন, জমিজমা সংক্রান্ত ব্যাপার নিয়ে কয়েকদিন আগে থেকেই স্থানীয় ওলিয়ার শেখ ও ইসহাক শেখের মধ্যে বিরোধ চলছিল। এরই জের ধরে ওলিয়ার শেখকে গতকাল রাতে কিছু দুর্বৃত্তরা কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে জানতে পেরেছি।
তিনি জানান, ওলিয়ার উপজেলার রুপাপাত কালিনগর বাজার থেকে আনুমানিক রাত ৯ টার সময় বাড়ি ফিরছিলেন। পথের মধ্যে উজিরপুরের সাধুহাঁটি নামক এলাকায় পৌঁছালে ওঁৎ পেতে থাকা কিছু দুর্বৃত্তরা তাকে ধাঁরালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে।
পরে এলাকাবাসী উদ্ধার করে তাকে ফরিদপুরের হাসপাতালে নেওয়ার পথে রাত আনুমানিক ১০.৩০ টার দিকে তার মৃত্যু হয়।
নিহতের স্ত্রী আলেয়া বেগম জানান, তার স্বামী রাত ৯ টার দিকে সাধুহাঁটি বাজার থেকে বাড়িতে ফিরছিলেন বাড়ি থেকে আনুমানিক একশত গজ দূরে বাঁশ ঝাড়ের কাছ থেকে আওয়াজ আসছিলো আমাকে বাঁচাও, আমাকে বাঁচাও বলে।
পরে আমিও আমার সন্তানরা ছুটে যাই গিয়ে দেখি সে পড়ে আছে মাথার নিচে ধারালো অস্ত্রের কোপ, পেটেও কোপ মেরে নাড়িভূড়ি বের করে দিয়েছে। কে মেরেছে জিজ্ঞাসা করলে বললো ইছাক শেখ ও তার ছেলেরাসহ ৫ থেকে ৬ হবে দলে। তারা এলোপাতাড়ি কুপিয়ে পালিয়ে যায়।
স্থানীয়রা জানান, এলাকার মধ্যে ইছাক শেখ ও ওলিয়ারের সাথে জমি নিয়ে সংঘাত চললেও তা সমাধান না করে পেঁচিয়ে রেখেছেন কিছু সার্থন্মেশী মহল । তার মধ্যে দু্- এক জনের নামও বেরিয়ে আসছে।
এলাকার নেতৃত্ব দেয় ইসমাইল হোসেন, ইউনুস মোল্যা ও কুরবান আলী এরা বিষয়টি মিমাংসা করবেন বলে কালক্ষেপন করছিলেন। তার মধ্যে এই হত্যা কান্ডের ঘটনা ঘটেছে।
অপরদিকে অভিযুক্ত ইছাক শেখ এর স্ত্রী হাচিনা বেগম জানান ওলিয়ারের সাথে আমার স্বামীর কোন দন্দ ছিলো না। কে বা কাহার এই ঘটনা ঘটিয়েছে জানি না। আমার স্বামী ও সন্তানেরা নির্দোষ। তারা গত রাতে বাড়ির বের হয়নি, ইফতার শেষে তারাফি নাজাম পড়তে বাড়ির পাশের মসজিদে ছিলো।
স্থানীয় অনেকের সাথে কথা বলে জানা গেছে, এই এলাকা নির্জন এলাকা অল্পবসতি বাগান ও ঝোপঝাড় বেশি অপরাধের প্রবনতা বেশি । এই ঘটনার সাথে মিল রেখে এর আগেও দুটি হত্যা কান্ড ঘটেছে এই এলাকায়।
তারা হলেন, কাদের চকিদার নামের এক ব্যক্তিকে রাতের বেলায় আজ থেকে ৫/৬ বছর আগে হত্যা করা হয়েছিলো। অপরদিকে ১০ বছর আগে যদুনন্দী ইউনিয়ন যুবলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত আলী খাঁন কে ও হত্যা করা হয়েছিলো এই একই এলাকায় একই সময়।
স্থানীরা ধারনা করতে পারেন না যে, সামন্য বিষয় নিয়ে হত্যাকান্ডের মতো ঘটনা ঘটে যেতে পারে। সামান্য বিষয় নিয়ে কেন এই হত্যাকান্ড ধারনা করতে হিমশিম খাচ্ছে স্থানীয় অনেকেই। তবে তাদের ধারনা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঠিক তদন্তে বেরিয়ে আসবে হত্যার মূল ঘটনা।
সালথা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুব্রত গোলদার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, স্থানীয় জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে এ ঘটনা ঘটেছে বলে জানতে পেরেছি। এব্যাপারে নিহতের পরিবার থেকে এখনও থানায় কোনো অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট