ব্যক্তিশ্রেণীর করদাতাদের বার্ষিক আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় দুই মাস বাড়ানো হয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত রিটার্ন জমা দিতে পারবেন তারা। গতকাল জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) এক আদেশে এ সময় বাড়ানোর কথা জানানো হয়।
চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, ব্যবসায়ী ও আয়কর আইনজীবীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। এনবিআরের দ্বিতীয় সচিব মো. মহিদুল ইসলাম চৌধুরী স্বাক্ষরিত আদেশে বলা হয়, স্বাভাবিক ব্যক্তি করদাতা ও অন্য করদাতাদের জন্য রিটার্ন জমার নির্ধারিত তারিখ ৩০ নভেম্বর থেকে বাড়িয়ে আগামী বছরের ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত করা হয়েছে। এছাড়া কোম্পানি করদাতাদের জন্য নির্ধারিত করদিবস আগামী বছরের ১৫ জানুয়ারি থেকে বাড়িয়ে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত নির্ধারণ করা হয়েছে।
এর আগে আয়কর রিটার্ন জমা দেয়ার সময় আরো এক মাস বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ (এফবিসিসিআই) ও ঢাকা ট্যাক্সেস বারসহ কয়েকটি মহল থেকে এনবিআরের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাড়ানোর দাবিতে ২১ নভেম্বর এনবিআর চেয়ারম্যানকে চিঠি দেয় এফবিসিসিআই। সংগঠনটি বলছে, নতুন আয়কর আইন-২০২৩ প্রতিপালন ও আয়কর পরিপত্র বিলম্বে প্রকাশের কারণে এবার করদাতারা প্রস্তুতি নেয়ার তেমন সময় পাননি। সেই সঙ্গে রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনের কারণে অনেক করদাতার পক্ষে ৩০ নভেম্বরের মধ্যে আয়কর রিটার্ন দাখিল করা সম্ভব হবে না।
ঢাকা ট্যাক্সেস বার অ্যাসোসিয়েশনও সময় বাড়ানোর আহ্বান জানিয়ে এনবিআরে চিঠি দেয়। এতে বলা হয়, চলমান হরতাল-অবরোধ, আয়কর আইন-২০২৩ সম্পর্কে করদাতা ও আইনজীবীদের পরিপূর্ণ জ্ঞানের অভাব, ২০২৩-২৪ করবর্ষের পরিপত্র বিলম্বে প্রাপ্তি এবং দেশের অর্থনৈতিক প্রতিকূল পরিস্থিতির কারণে আয়কর রিটার্ন দাখিলের নির্ধারিত সময় বাড়ানো প্রয়োজন।
উল্লেখ্য, চলতি অর্থবছরে দেশে ৪০ লাখ রিটার্ন জমার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে এনবিআর। তবে এখন পর্যন্ত এর অর্ধেকও জমা পড়েনি। অবরোধের প্রভাব এবং চলমান বৈশ্বিক অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে এনবিআরের কর অঞ্চলগুলোয় রিটার্ন জমার পরিমাণ কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। তবে রিটার্ন কমলেও রাজস্ব আয় বেড়েছে বলে দাবি আয়কর কর্মকর্তাদের। দেশে বর্তমানে ৯৪ লাখের বেশি কর শনাক্তকারী নম্বরধারী (টিআইএন) করদাতা রয়েছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ৩৫ লাখ ২৯ হাজার টিআইএন-ধারী রিটার্ন দাখিল করেছিলেন।
প্রিন্ট