নরসিংদী জেলায় মাধবদীতে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নুরালাপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এই প্রতিষ্ঠানে এক সময় শিক্ষার্থী ছিল দেড় হাজারেরও উপরে। কিন্তু বিগত কয়েক বছরে শিক্ষার্থী কমে বর্তমানে ৬ শতর নিচে পৌঁছেছে। পরিচালনা পরিষদের একতরফা, স্বেচ্ছাচারিতা সিদ্ধান্তের কারণে দিনে দিনে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে প্রতিষ্ঠানটি। দীর্ঘদিন ধরে এই প্রতিষ্ঠানের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন আইনুল হক নামক এক ব্যবসায়ী। তাই শিক্ষা ছেড়ে ব্যবসার দিকে মনোযোগ তার বেশি।
আগামী ২ ডিসেম্বর পরিচালনা পরিষদের নির্বাচনের দিন ধার্য করেছে প্রতিষ্ঠানটি। আর এই নির্বাচনের জন্য অভিভাবক প্রতিনিধিদের কাছ থেকে জনপ্রতি হাতিয়ে নেওয়া হয়েছে বিশ হাজার টাকা করে। ৬ জন অভিভাবক প্রতিনিধি নমিনেশন ফর্ম কিনেছেন বলে জানান। তাদের কাছ থেকে সর্বমোট এক লক্ষ বিশ হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে এই বিদ্যালয়টি।
এই বিষয়টি নিয়ে নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছেন দুইজন অভিভাবক প্রতিনিধি।গত ২৬ নভেম্বর ইউসুফ আলী ও কুদ্দুস ভূঁইয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে।অভিযোগ থেকে জানা যায়, মোটা অংকের টাকা নেয়ায় অনেকেই ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। আবার যারা প্রার্থী হয়েছেন তাদের মধ্যেও চাপা অসন্তুষ্টি ও ক্ষোভ বিরাজ করছে। তাই তারা এই বিষয়টি সমাধানের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক অভিভাবক জানান, আইনুল হক এই প্রতিষ্ঠানকে বাপ দাদার সম্পত্তিতে রূপান্তরিত করেছে, দীর্ঘ আট বছর ধরে তিনি এখানে সভাপতি প্রতিটি শিক্ষক নিয়োগে বাণিজ্য করেছেন তিনি, নিয়মবর্হিভূতভাবে তার আপন ভাগিনা সোহেলকে শিক্ষক বানিয়েছেন। কাতার ফাউন্ডেশনের দেওয়া প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা প্রধান শিক্ষক এবং তিনি মিলে আত্মসাৎ করেছেন বলে বিশেষ সূত্রে জানান। তার নিজস্ব লোক ব্যতীত যাতে কেউ প্রার্থী না হতে পারে এজন্যই তিনি অতিরিক্ত টাকা (বিশ হাজার) ফর্মের জন্য নিয়েছেন। কোন প্রতিষ্ঠানেই এত টাকা ধরে না, এটা সম্পূর্ণ অমানবিক ও অগ্রহণযোগ্য।
এ বিষয়ে কথা হয় নরসিংদী সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আসমা সুলতানা নাসরীনের সাথে তিনি অভিযোগ পাওয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আমি বিষয়টি তদন্ত করছি তদন্ত সাপেক্ষে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মোবাইলে ফোনে কথা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান শিক্ষক ফেরদৌস কামালের সাথে, তিনি বিশ হাজার টাকা নেওয়ার বিষয়টি সম্পূর্ণ অস্বীকার করেন।
কিন্তু অভিযোগকারীরা টাকা আদায়ের রিসিটসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কাছে জমা দিয়েছেন। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষ দ্রুত একটি কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন এমনটাই প্রত্যাশা অভিযোগকারী ও সচেতন মহলের।
প্রিন্ট