ঢাকা , বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

বোয়ালমারীতে লকডাউনে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা 

করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে নেয়া হয়েছে লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তরা। লকডাউনের অজুহাতে বাজারে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম। অপরদিকে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও ব্যাংক ও এনজিও-র ঋণের কিস্তি আদায় চালু থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষেরা।
গত বছর সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সরকারি-বেসরকারি কিছু সাহায্য-সহযোগিতা পেলেও এবার লকডাউনে কোন সাহায্য বা সহযোগিতা এখন পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে জোটেনি। তাই এই সব নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ঘরবন্দি থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অর্থনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার নেই। ফলে তারা খাবার জোগাড় করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে সরকার ঘোষিত সাত দিনের কঠোর লকডাউন শেষে আবার সাত দিনের শুরু হয়েছে।  লকডাউনের কারণে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্যেরও ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলায় বড় একটি অংশ নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা ক্ষুদ্র বা মাঝারি ধরনের ব্যবসা করেন নয়তো জনবিক্রি করে সংসার চালান। এর বাইরে তাদের আয়ের কোন পথ নেই।
বোয়ালমারী  বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী অসীম শীল বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে খাচ্ছি। চলমান লকডাউনে গত কয়েকদিন ধরে দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় দোকান ভাড়া ও সংসার চালাতে কোনো উপায়ান্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
চা বিক্রেতা অশোক বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে এখন আমরা চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি।
শফি নামে অপর এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরও প্রায় একই সময়ে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ হয়েছিল। এতে অনেক লোকসান হয়েছে। এ বছর ভেবেছিলাম ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু এ বছরও রমজানে লকডাউনের কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন, ব্যবসা বন্ধ থাকলেও ব্যাংক লোনের কিস্তি ঠিকই দিতে হচ্ছে। জীবিকার থেকে জীবন মূল্যবান হলেও অর্থ সংকটের কারণে সৃষ্ট মানসিক অস্থিরতাও কম ভয়ংকর নয়।
এদিকে, বুধবার (২১ এপ্রিল) বোয়ালমারী  বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারে আলু, উচ্ছে, ঢেড়ঁস, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পন্যের দামও লকডাউনের অজুহাতে বেড়ে গেছে। লকডাউনের আগে আলুর কেজি ছিল ১৫ টাকা, তা এখন বেড়ে ২০ টাকা; শসার কেজি ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা; বেগুন ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য সবজির দামও বাড়তি।
উপজেলার ঠাকুরপুর বাজারের এক দুধ বিক্রেতা বলেন, বড় বিপদে আছি। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে কিভাবে যে সংসার চলবে ভাবলেই দিশেহারা হয়ে পড়ছি।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

বোয়ালমারীতে লকডাউনে মধ্যম ও নিম্ন আয়ের মানুষ দিশেহারা 

আপডেট টাইম : ০১:০৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ এপ্রিল ২০২১
বোয়ালমারী (ফরিদপুর) প্রতিনিধিঃ :
করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে সারা দেশে নেয়া হয়েছে লকডাউনের মতো কঠোর পদক্ষেপ। এতে চরম আর্থিক সংকটে পড়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তরা। লকডাউনের অজুহাতে বাজারে বেড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় সবজির দাম। অপরদিকে ব্যবসা বাণিজ্য বন্ধ থাকলেও ব্যাংক ও এনজিও-র ঋণের কিস্তি আদায় চালু থাকায় দিশাহারা হয়ে পড়েছে নিম্ন ও নির্দিষ্ট আয়ের মানুষেরা।
গত বছর সরকারি এবং বেসরকারি উদ্যোগে নিম্ন আয়ের মানুষেরা সরকারি-বেসরকারি কিছু সাহায্য-সহযোগিতা পেলেও এবার লকডাউনে কোন সাহায্য বা সহযোগিতা এখন পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে জোটেনি। তাই এই সব নিম্ন ও মধ্য আয়ের মানুষ ঘরবন্দি থেকে মানবেতর জীবন যাপন করছে। অর্থনৈতিক কাজকর্ম বন্ধ থাকায় তাদের আয়-রোজগার নেই। ফলে তারা খাবার জোগাড় করতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছে।
এদিকে সরকার ঘোষিত সাত দিনের কঠোর লকডাউন শেষে আবার সাত দিনের শুরু হয়েছে।  লকডাউনের কারণে স্থানীয় বাজারে দ্রব্যমূল্যেরও ঊর্ধ্বগতি লক্ষ্য করা গেছে।
বোয়ালমারী উপজেলায় বড় একটি অংশ নিম্ন আয়ের মানুষ। তারা ক্ষুদ্র বা মাঝারি ধরনের ব্যবসা করেন নয়তো জনবিক্রি করে সংসার চালান। এর বাইরে তাদের আয়ের কোন পথ নেই।
বোয়ালমারী  বাজারের সেলুন ব্যবসায়ী অসীম শীল বলেন, এনজিও থেকে লোন নিয়ে ব্যবসা করে পরিবার নিয়ে খাচ্ছি। চলমান লকডাউনে গত কয়েকদিন ধরে দোকান পাট বন্ধ রয়েছে। আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় দোকান ভাড়া ও সংসার চালাতে কোনো উপায়ান্তর না দেখে দিশেহারা হয়ে পড়েছি।
চা বিক্রেতা অশোক বলেন, করোনা পরিস্থিতির কারণে কঠিন অনিশ্চয়তায় পড়ে এখন আমরা চোখেমুখে অন্ধকার দেখছি।
শফি নামে অপর এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বলেন, গত বছরও প্রায় একই সময়ে লকডাউনে দোকানপাট বন্ধ হয়েছিল। এতে অনেক লোকসান হয়েছে। এ বছর ভেবেছিলাম ব্যবসা করে কিছুটা হলেও লোকসান পুষিয়ে নিতে পারবো। কিন্তু এ বছরও রমজানে লকডাউনের কারণে ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জনৈক ব্যক্তি বলেন, ব্যবসা বন্ধ থাকলেও ব্যাংক লোনের কিস্তি ঠিকই দিতে হচ্ছে। জীবিকার থেকে জীবন মূল্যবান হলেও অর্থ সংকটের কারণে সৃষ্ট মানসিক অস্থিরতাও কম ভয়ংকর নয়।
এদিকে, বুধবার (২১ এপ্রিল) বোয়ালমারী  বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কাঁচাবাজারে আলু, উচ্ছে, ঢেড়ঁস, শাক-সবজিসহ বিভিন্ন পন্যের দামও লকডাউনের অজুহাতে বেড়ে গেছে। লকডাউনের আগে আলুর কেজি ছিল ১৫ টাকা, তা এখন বেড়ে ২০ টাকা; শসার কেজি ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা; বেগুন ২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩০ টাকা হয়েছে। অন্যান্য সবজির দামও বাড়তি।
উপজেলার ঠাকুরপুর বাজারের এক দুধ বিক্রেতা বলেন, বড় বিপদে আছি। সংসার চালাতে যুদ্ধ করতে হচ্ছে। আগামী দিনগুলোতে কিভাবে যে সংসার চলবে ভাবলেই দিশেহারা হয়ে পড়ছি।

প্রিন্ট