ফরিদপুরের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুছায়া ফাউন্ডেশনের সভাপতি খালিদ মাহমুদ সজিবের বিরুদ্ধে নারী কেলেঙ্কারীর অভিযোগ পাওয়া গেছে। প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বী এক তরুণীর সাথে দিনের পর দিন শারীরিক সম্পর্ক করে আসছিলেন সজিব; এমন অভিযোগ উঠেছে তার বিরুধ্যে।
অভিযুক্ত সজিব ফরিদপুর পৌরসভার রঘুনন্দনপুর এলাকার মো. টুটুল মোল্লার ছেলে। তিনি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন তরুছায়া ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন ওই সংগঠনের রাজেন্দ্র কলেজ শাখার এ্যাম্বাসেডর। ওই তরুণী সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের অনার্স তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও মাদারীপুর জেলা সদরের বাসিন্দা।
লিখিত বক্তব্যে অভিযোগকারী ওই শিক্ষার্থী বলেন, ফরিদপুরে পড়ালেখার সুবাদে সজিবের সাথে আমার পরিচয় হয়। এরপর তরুছায়া ফাউন্ডেশন আমাকে সরকারি রাজেন্দ্র কলেজের এ্যাম্বেসেডর করে। তখন থেকেই আমাদের সম্পর্ক শুরু। আমাদের সম্পর্ক দুই বছরের বেশী সময় যাবৎ ভালোই চলছিলো।
তিনি আরো বলেন, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে ফরিদপুর শহরের কমলাপুরের ডিআইবি বটতলা এলাকায় আমাকে একটি বাসা ভাড়া করে দেয়। সেখানে আমি ৪ মাস অবস্থান করি। এই ৪ মাসে বিয়ে ও নানা প্রলোভন দেখিয়ে নিয়মিতভাবে আমার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করে সজিব। আমি সজিবকে এতটাই ভালোবাসতাম যে, অন্য ধর্মের হয়েও ওকে বিয়ে করতে চেয়েছিলাম।
প্রতারণার শিকার মেয়েটি আরও বলেন, এরপর তাকে আমি বিয়ের কথা বললে, সে বলে আমার পরিবার অনেক সমস্যায় আছে। এসব কথা বলে চুপ করিয়ে দেয়। এভাবে ৪ মাস অতিক্রম করার পরে আমাকে বিয়ে না করার বিভিন্ন অযুহাত দেখায়। এ নিয়ে আমাদের মাঝে ঝগড়া হয়। ঝগড়া হলে আমার সব কিছু নিয়ে বাসা থেকে গ্রামের বাড়িতে চলে আসি। এক পর্যায়ে বলে আমাকে সে বিয়ে করতে পারবে না এবং আমার নামে নানান মিথ্যা অভিযোগ রটায়।
এসব বিষয়ে আমি আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার কথা এবং সাংবাদিকদের জানানোর কথা বললে, আমাকে নানা ধরনের হুমকি দেয় এবং আমার নামে মানহানি মামলা করবে-এ ধরনের হুমকি দিচ্ছে এখনও। সজিব আমার সাথে যে প্রতারণা করেছে, এর জন্য আমি প্রশাসনের কাছে বিচার চাই। ওর এমন বিচার চাই যে, ভবিষ্যতে যেন আর কোনো মেয়ে ওর প্রতারণার শিকার হয়ে জীবন নষ্ট না হয়। ওর হুমকির জন্য বর্তমানে আমার ফরিদপুর যাওয়া বন্ধ হয়ে গেছে। আমি এখন মাদারীপুরে আমার বাড়িতে রয়েছি। ফরিদপুরে ওর অনেক লোকজন আছে, আমাকে মেরেও ফেলতে পারে।
তিনি অভিযোগ করে বলেন, সজিবের কোনো ইনকাম সোর্স নেই। ও স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের নামে টাকা এনে লুটে-পুটে খায়। এই টাকা দিয়ে সজিব আয়েসী জীবন-যাপন করে যাচ্ছে। স্বেচ্ছাসেবীর নামে দুর্নীতি করে যাচ্ছে, দেশের ক্ষতি করতেছে। এছাড়া এই নারী আরো অভিযোগ করে বলেন, এই সজিবের সাথে অতিতেও আরো মেয়ের সাথে অবৈধ সম্পর্ক ছিলো।
জানা যায়, তরুছায়া (সংগঠনের রেজিঃ ৯৪৩) স্কুল-কলেজে পড়ুয়া তরুণ-তরুণীদের নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। ২০১৮ সালে ইয়াং বাংলা কর্তৃক আয়োজিত সামাজিক ক্যাটাগরিতে জয় বাংলা ইয়ুথ এ্যাওয়ার্ড পায় সংগঠনটি। এই সুবাদে সংগঠনের কর্মসূচী হিসেবে বিভিন্ন সামাজিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে তারা। খালিদ মাহমুদ সজিব এই সংগঠনের সভাপতি হওয়ার সুবাদে সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের কর্তা ব্যাক্তিদের সান্নিধ্যে যাওয়ার সুযোগ পায়।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত খালিদ মাহমুদ সজিব মেয়েটির সাথে তার শারীরিক সম্পর্কের কথা স্বীকার করে বলেন, ও টাকা চেয়েছিলো, আমি দেইনি বলে আমার বিরুদ্ধে হুমকী দেওয়ার অভিযোগ করছে। আমি ওকে বিয়ে করতে রাজি সেটা ওর মা-বাবাকেও বলেছি। মেয়েটি আমার ফরিদপুরের অভিভাবকদের কাছেও নালিশ করেছে। আমার নামে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছে। ও কি কারনে এসব করছে আমি জানি না।
প্রিন্ট