ঢাকা , শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারী ২০২৫, ৩ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

কালুখালী পিআইও অফিসের অসম্ভব কেরামতি: মৃত প্রকল্প রাতারাতি জীবিত

রাতারাতি মৃত প্রকল্প জীবিত দেখিয়ে অসম্ভব কেরামতি দেখালেন সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। জাদুকরী এই প্রকৌশলী রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে কর্মরত আছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়।
পৃথক দুই  প্রকল্পের অধীনে গত জুন মাসে এই কাজ সম্পন্ন হবার কথা। কিন্তু প্রকল্পটির টাকা কতৃপক্ষ ফিরিয়ে নেওয়ায় কাজ বন্ধ ঘোষনা করেন পিআইও অফিসের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিআইও অফিসের একাধিক সুত্র জানায়, মৃগীর চৌমুখ গ্রামের সাদ আলীর বাড়ি হতে  আলম চৌধুরীর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য টিআর প্রকল্পের অধীনে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। এছাড়া কালিকাপুর ইউনিয়নের নলকাতরা জামে মসজিদ উন্নয়নের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। প্রকল্প দুটি মৃত ঘোষনা করে ওই প্রকল্পের টাকা সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছে।
ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রিকায় প্রকাশিত হলে টনক নড়ে শরিফুলের। সে রাতারাতি বক্তব্য পাল্টে ফেলেন। প্রকল্পের পিআইসিদের ম্যানেজ করে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
কাজ না করে টাকা উত্তোলন ও নিজের কাছে  রাখার কারন জানতে চাইলে  সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ সজিব ২ প্রকল্পের ৬ লক্ষ টাকা আমার কাছে  রাখতে বলায় আমি টাকাগুলো রেখেছি। সামনের মৌসুমে ইটের ভাটায় নতুন ইট বের হলে কাজ করা হবে। শ্রমিক সংকটের কারনে মৃগি ইউনিয়ন এর কাজ হয়নি। ধান মৌসুমের পর শ্রমিক পাওয়া গেলে রাস্তার কাজও করার ইচ্ছা আছে।
মৃগি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন জানায়, মৃগীর চৌমুখ গ্রামের সাদ আলীর বাড়ি হতে  আলম চৌধুরীর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য টিআর প্রকল্পের অধীনে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও তা আমাকে জানানো হয়নি। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমি জনরোষে পরেছি। ইতোমধ্যে ওই প্রকল্প এলাকায় ভিন্ন একটি প্রকল্পের সারে ৩ লক্ষ টাকা মাটির কাজ করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।
জানা গেছে,মাজবাড়ির কুষ্টিয়াপাড়া হরেন কুমারের বাড়ি হতে ইউসুফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজ ব্যক্তিগত টাকায় সম্পন্ন করেন ইমরান নামের এক এলাকাবাসী। এখানেও ভূয়া ভুয়া প্রকল্পের দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেছে সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম।
স্থানীরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

কালুখালী পিআইও অফিসের অসম্ভব কেরামতি: মৃত প্রকল্প রাতারাতি জীবিত

আপডেট টাইম : ০৫:৩৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৩
সাহিদা পারভীন, কালুখালী (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি :
রাতারাতি মৃত প্রকল্প জীবিত দেখিয়ে অসম্ভব কেরামতি দেখালেন সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম। জাদুকরী এই প্রকৌশলী রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার অফিসে কর্মরত আছে। তথ্য অনুসন্ধানে জানা গেছে, ২০২২-২৩ অর্থ বছরে গ্রামীন অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ কর্মসূচির আওতায় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলায় ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়।
পৃথক দুই  প্রকল্পের অধীনে গত জুন মাসে এই কাজ সম্পন্ন হবার কথা। কিন্তু প্রকল্পটির টাকা কতৃপক্ষ ফিরিয়ে নেওয়ায় কাজ বন্ধ ঘোষনা করেন পিআইও অফিসের সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পিআইও অফিসের একাধিক সুত্র জানায়, মৃগীর চৌমুখ গ্রামের সাদ আলীর বাড়ি হতে  আলম চৌধুরীর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য টিআর প্রকল্পের অধীনে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। এছাড়া কালিকাপুর ইউনিয়নের নলকাতরা জামে মসজিদ উন্নয়নের জন্য ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। প্রকল্প দুটি মৃত ঘোষনা করে ওই প্রকল্পের টাকা সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম সমুদয় টাকা আত্মসাত করেছে।
ঘটনাটি বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও পত্রিকায় প্রকাশিত হলে টনক নড়ে শরিফুলের। সে রাতারাতি বক্তব্য পাল্টে ফেলেন। প্রকল্পের পিআইসিদের ম্যানেজ করে তাদের টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার আশ্বাস দেন।
কাজ না করে টাকা উত্তোলন ও নিজের কাছে  রাখার কারন জানতে চাইলে  সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম জানান, সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহ মোঃ সজিব ২ প্রকল্পের ৬ লক্ষ টাকা আমার কাছে  রাখতে বলায় আমি টাকাগুলো রেখেছি। সামনের মৌসুমে ইটের ভাটায় নতুন ইট বের হলে কাজ করা হবে। শ্রমিক সংকটের কারনে মৃগি ইউনিয়ন এর কাজ হয়নি। ধান মৌসুমের পর শ্রমিক পাওয়া গেলে রাস্তার কাজও করার ইচ্ছা আছে।
মৃগি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মতিন জানায়, মৃগীর চৌমুখ গ্রামের সাদ আলীর বাড়ি হতে  আলম চৌধুরীর বাড়ী পর্যন্ত রাস্তা সংস্কারের জন্য টিআর প্রকল্পের অধীনে ৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হলেও তা আমাকে জানানো হয়নি। এ ঘটনা নিয়ে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় আমি জনরোষে পরেছি। ইতোমধ্যে ওই প্রকল্প এলাকায় ভিন্ন একটি প্রকল্পের সারে ৩ লক্ষ টাকা মাটির কাজ করে বিল উত্তোলন করা হয়েছে।
জানা গেছে,মাজবাড়ির কুষ্টিয়াপাড়া হরেন কুমারের বাড়ি হতে ইউসুফ মাস্টারের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজ ব্যক্তিগত টাকায় সম্পন্ন করেন ইমরান নামের এক এলাকাবাসী। এখানেও ভূয়া ভুয়া প্রকল্পের দেখিয়ে টাকা উত্তোলনের চেষ্টা করেছে সহকারী প্রকৌশলী শরিফুল ইসলাম।
স্থানীরা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্তসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

প্রিন্ট