পাবনার- ঈশ্বরদীর জয়নগর মোকাম ঘুরে জানাগেছে এক সপ্তাহের ব্যবধানে চালের দাম কেজিতে ২-৮ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। এর প্রভাব গিয়ে পড়েছে স্থানীয় খুচরা বাজারে।
খুচরা বাজারেও চালের দাম কেজিতে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন প্রান্তিক মৌসুমে নতুন ধান ওঠার সময়। নতুন ধান বাজারে এলে দাম কমবে। দুই-একটি জাত ছাড়া আমন মৌসুমে বেশির ভাগই মোটা চালের ধানের আবাদ হয়। কিন্তু বাজারে বোরো মৌসুমে ওঠা বাসমতি, নাজিরশাইল, মিনিকেট, আটাশ ধানের চালের দাম বেড়েছে। এসব চালের দাম বাড়ার বিষয়ে সচেতন চাল ব্যবসায়ীরা বলছেন, অসদুদ্দেশ্যে এক শ্রেণীর অতি মুনাফাখোররা প্রান্তিক সময়ের সুযোগ ও দেশের চলমান রাজনৈতিক অবস্থার কারণে ধান ও চালের দাম বাড়িয়েছে।
জানা গেছে, বোরো মৌসুমে বাসমতি, নাজিরশাইল, মিনিকেট, আটাশ ধানের চালের বেশি আবাদ হয়। এগুলো চিকন চাল বলে পরিচিত। আর চলমান আমন মৌসুমে স্বর্ণা, গুটি স্বর্ণা, ৪৯, ৫১, বিনা-৭ ও কাটারি (সম্পা বা টুম্পা কাটারি) ধানের আবাদ হয়। এর মধ্যে বিনা-৭ ও কাটারি (সম্পা বা টুম্পা কাটারি) চিকন চালের ধান।
বুধবার সকালে জয়নগর মোকামে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, এ মূহূর্তে কিছু কিছু ৪৯ ও ৫১ ছাড়া বাজারে মোটা চাল নেই। উনত্রিশ জাতের চালের ৫০ কেজির বস্তা দাম ২ হাজার ৩০০ থেকে বেড়ে ২ হাজার ৬০০ টাকা, ৫০ কেজির মিনিকেট ৩ হাজার টাকা থেকে ৩ হাজার ৪০০ টাকা, বাসমতি ৩ হাজার ২০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ৬০০ টাকা হয়েছে। খুচরা বাজারে ৪৯ ও ৫১ জাতের চাল ৪৬-৪৮ টাকা কেজি ও ৬৮ টাকা কেজির নাজিরশাইল ৭৪-৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের খুচরা বিক্রেতা রেজাউল ইসলাম বলেন, দশ দিনের মধ্যে হঠাৎ করেই সব ধরণের চালের দাম বেড়ে গেছে। আমন মৌসুমে সরকার খাদ্যগুদামে চাল সংগ্রহের জন্য সম্প্রতি ৪২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৪ টাকা কেজি দরে কিনবে বলে ঘোষণা করেছে। এরপর হতেই দাম বাড়ছে।
জয়নগর মোকামের সম্পদ ট্রেডার্সের চাতাল মালিক মঞ্জুরুল আলম বলেন, আমন ধান ওঠার এ সময়কে প্রান্তিক সময় বলা হয়। বিভিন্ন হাটেও ধানের দাম হঠাৎ করেই বেড়েছে। যে কারণে চালের দামও বেড়েছে।
ঈশ্বরদী চালকল মালিক সমিতির সভাপতি জুলমত হায়দার বলেন, ‘কী কারণে ধান-চালের দাম বেড়েছে বুঝতে পারছি না। এখন ধান ওঠার মৌসুম। এই প্রান্তিক সময়ে মোটা জাতের ধান উঠবে। চিকন চালের দাম তো বাড়ার কথা নয়। চিকন জাতের ধান বিপুল পরিমাণে মজুদ রয়েছে। নির্বাচনের সময় কী হবে না হবে দেশে। নির্বাচন হয়তো হবেই না, সামরিক সরকার আসবে। এসব নানা চিন্তা-ভাবনা করে ব্যবসায়ীরা যার কাছে যা আছে, তা আটকে রেখেছে। বাজার অস্থিতিশীল রেখে দাম বাড়িয়ে সুযোগ গ্রহন করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। বেশির ভাগ সুযোগসন্ধানী ব্যবসায়ী দেশের কথা চিন্তা করে না। ব্যক্তিগত লাভের জন্য ধান-চাল মজুদ করে রেখে দাম বাড়িয়েছে।’
প্রিন্ট