কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় প্রায় ৬০ হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ হচ্ছে। এ ফসল ৯০ দিনের মধ্যেই উঠে যায়। বতর্মান বাজারে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে কুষ্টিয়া ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। এতে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।
দৌলতপুরে গ্রীষ্মে শীতের সবজি ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষ করে বাজারে দাম ভালো পেয়ে লাভবান হচ্ছেন কৃষকরা।
কৃষি কর্মকর্তার তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে দৌলতপুর ৬০ হেক্টর জমিতে চাষ হচ্ছে ফুলকপি ও বাঁধাকপি। কৃষিনির্ভর দৌলতপুর তিন বছর আগে পরীক্ষামূলকভাবে বছর জুড়ে চাষ শুরু হয়েছে শীতকালীন সবজি চাষের।
এই বছরের শুরুতে সফলতার মুখ দেখছেন চাষিরা। শীতকালীন সবজি গ্রীষ্মকালে চাষের ধারা অব্যাহত রাখতে কৃষকদের সহযোগিতা করে যাচ্ছে দৌলতপুর কৃষি কর্মকর্তা।
কৃষকরা জানান, ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিঘা প্রতি ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা খরচ করে দ্বিগুণের বেশি মুনাফা পাওয়া সম্ভব।
দৌলতপুর উপজেলার কৃষক জালাল উদ্দিন বলেন, ‘ফুলকপি ও বাঁধাকপি চাষে একটু খরচ বেশি হলেও বাজারে চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় লাভবান হওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কপি চাষ করতে ৩০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়।
‘তবে জমি থেকে জেলার বাইরের ব্যবসায়ীরা এসে ৬০ থেকে ৬৫ হাজার টাকায় কিনে নিয়ে যাচ্ছে। আর স্থানীয়ভাবে খুচরা বেচতে পারলে তা থেকে ৮০ থেকে ৯০ হাজার টাকা পযর্ন্ত পাওয়া সম্ভব।’
হোসেনয়াবাদ গ্রামের ফুলকপি চাষি আজমাইন হোসেন বলেন, ‘আমাদের এই মাঠে এবার বেশ কিছু জমিতেই শীতকালীন সবজি ফুলকপির চাষ হয়েছে। গত বছর আমি এক বিঘা জমিতে বাঁধাকপির চাষ করেছিলাম। তবে সেবার বৃষ্টিতে ফসল নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এবার খুব ভালো হয়েছে। তাছাড়া এবার বাজারে দাম ও বেশ ভালো।
‘এ বছর ছোট-বড় মিলিয়ে প্রতি পিস ফুল কপি পাইকারি বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা করে।
প্রাগপুর গ্রামের সবজি চাষি শাহারুল ইসলাম বলেন, ‘আমি দুই বিঘা জমিতে ফুলকপির চাষ করেছি। এর মধ্যে সপ্তাহ খানেক আগে ঢাকার এক পাটি এসে বিঘা প্রতি ৬০ হাজার টাকা হিসেবে কিনে নিয়ে গেছে। আমার টাকা দরকার থাকায় দ্রুত সব বিক্রি করে দিয়েছি।’
শশীদারপুর গ্ৰামে ফুলকপি চাষি তাহের উদ্দিন বলেন, ‘আমি ১০ কাঠা জমিতে ফুলকপির আবাদ করেছিলাম। সপ্তাহ খানেক হবে বাজারে এসে পাইকারদের কাছে তা বিক্রি করছি। স্থানীয় বাজারে প্রকারভেদে গড়ে ৪৫ টাকা থেকে ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করলাম।’
রিফাইত পুর সবজি বিক্রেতা সজীব উদ্দিন বলেন, ‘আমি প্রায় ১০ দিনের মতো হবে ফুলকপি বিক্রি করছি। শুরুতে ৮০ টাকা কেজি বিক্রি হলেও বতর্মানে দাম কিছুটা কমে ৪০ থেকে ৫০ টাকা পযর্ন্ত বিক্রি করছি।’
দৌলতপুর বাজারের সবজি বিক্রেতা জাকির বলেন, ‘আমরা বাজারে খুচরা সবজি বিক্রি করি। তাই বিভিন্ন জায়গায় দেখে যেখানে কম দামে পাই সেখান থেকে কিনি তারপর বিক্রি করি। বতর্মানে কারো কাছ থেকে ৪৫ টাকা কেজি,আবার কারো কাছ থেকে সবজির মান বিচারে ৫০ টাকা দরেও কিনি। বাজারে এসে গড়ে ৬০ টাকা করে বিক্রি করি।
দৌলতপুরে কৃষি কর্মকর্তা মোঃ নুরুল ইসলাম দৈনিক সময়ের আলো কে জানান,দৌলতপুরের মাটি প্রাকৃতিকভাবেই খুব উর্বর হওয়ায় এখানে বছর জুড়ে প্রায় সব ধরনের সবজি হয়ে থাকে। কুষ্টিয়া জেলার তিনটি উপজেলায় প্রায় ৬০হেক্টর জমিতে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাষ হচ্ছে। এ ফসল নব্বই দিনের মধ্যেই উঠে যায়।
‘এ ছাড়া বতর্মানে তারাগুনিয়া পাকারী বাজারে বাঁধাকপি ও ফুলকপির চাহিদা ও দাম ভালো থাকায় স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন বাজারে চলে যায়। এতে লাভবান হচ্ছে কৃষকরা।’
কৃষি কর্মকর্তার পক্ষ থেকে মাঠ পর্যায়ে চাষিদের সর্বদা পরামর্শ ও সহযোগিতা করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
প্রিন্ট