মাগুড়া জেলার মহম্মদপুর উপজেলায় গত একমাসে পৃথক ১৯টি অগ্নিকান্ডে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, বসত ঘর, গোয়াল গর, গবাদি খামার, ঘরের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র, ধান পাট ও নগদ অর্থ পুড়ে প্রায় ১০ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।
অগ্নিকান্ডের ঘটনায় অনেক অসহায় পরিবার ও ব্যবসায়ীরা মানবেতর জীবন যাপন করছেন। অন্যদিকে করোনা সংক্রমন ঠেকাতে সরকার ঘোষিত লকডাউনে নতুন করে ব্যবসা বানিজ্য শুরু করতে না পারায় ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা বিপাকে পড়েছে।
৬ এপ্রিল মঙ্গলবার রাতে উপজেলার ধোয়াইল গ্রামের কৃষক ইমরান শেখের বাড়িতে অগ্নিকান্ডে একটি বসত ঘর ও একটি গোয়ালঘরে আগুন লেগে ৩টি গরু, ১টি ছাগল ও ঘরের মধ্যে থাকা প্রয়োজনীয় মালামাল পুড়ে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত হয় বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
৪ এপ্রিল রবিবার রাতে উপজেলার রাজাপুর বাজারের তালুকদার ক্রোকারিজ এ্যান্ড ফার্ণিচারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে পুরো ব্যবসা প্রতিষ্ঠানটি ভষ্মিভুত হয়ে প্রায় ৩০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। খবর পেয়ে মহম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের দু’টি ইউনিট ও মাগুরা ফায়ার সার্ভিসের একটি ইউনিট ঘটনাস্থলে এসে আগুন নিয়ন্ত্রনে আনে। ততক্ষনে প্রতিষ্ঠানের সমস্ত মালামাল পুড়ে ছাই হয়ে যায়। দোকান মালিক মো. হেকায়েত উল্লাহ তালুকদার বলেন, আমার সব শেষ হয়ে গেছে। ব্যংক ও এনজিও থেকে আমার ২০ লাখ টাকা লোন নেওয়া সেই টাকা লোন নেওয়া সেই টাকা পরিশোধ করার মত আমার কোন সামর্থ নাই।
২১ মার্চ বুধবার উপজেলার রাজাপুর বাজারের সাহা মার্কেটে ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে ১১টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভষ্মিভুত হয়ে প্রায় কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। ৫ মার্চ শুক্রবার গভীর রাতে মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বাবুখালী বাজারে আগুন লেগে ৪টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভষ্মিভূত হয়ে প্রায় ৫০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়। এ সময় আরো ২টি দোকান আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়। বাজারের কাপড়পট্রি এলাকায় এই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। এ সময় অনেক ব্যবসায়ী কে আগুনের ভয়ে ঘর থেকে মালামাল সরিয়ে নিয়ে রাস্তায় বসে রাতভর পাহারা দিতে দেখা গেছে। বিদ্যুতের সর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ও স্থানীয় লোকজনের সহায়তায় দুই ঘন্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রনে আনতে সক্ষম হয়। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীরা হলেন, স্বর্ণ ব্যবসায়ী টেইলার ব্যবসায়ী, নাজির মিয়া ও নজরুল ইসলাম ও কাপড় ব্যবসায়ী সাহাদৎ হোসেন এ ছাড়া উপজেলার প্রত্যন্ত অ লের বিভিন্ন এলাকায় একাধিক অগ্নিকান্ডে ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া গেছে।
অগ্নিকান্ডে ফায়ার সার্ভিসের ভূমিকা সম্পর্কে পরস্পর বিরোধী বক্তব্য পাওয়া গেছে। অধিকাংশ ক্ষতিগ্রস্থরা বলেছেন অগ্নিকান্ডের সাথে সাথে খবর দেওয়া হলে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা আসে আগুন নিভে যাওয়ার পর। এ বিষয়ে মহম্মদপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নুরুল ইসলাম বলেন, প্রায় প্রতিটি অগ্নিকান্ডের খবর পেয়ে আমরা যথা সময়ে ঘটনাস্থলে পৌছে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়েছি।
তবে প্রত্যন্ত অ লের কিছু এলাকার দুরত্ব ফায়ার সার্ভিস স্টেশন থেকে অনেক দুরে হওয়ায় আমরা পৌছানোর আগেই এলাকাবাসির চেষ্টায় আগুন নেভানো হয়েছে। উপজেলা চেয়ারম্যান আবু আব্দুল্লাহেল কাফী ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার রামানন্দ পাল বলেন, অগ্নিকান্ডে ক্ষতিগ্রস্থদের খাদ্য ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এবং সব সময় আমরা তাদের খোঁজ খবর রাখছি।
প্রিন্ট