আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ১৩৩ বছর পর এসে লালনের বাণী দিয়ে আমাদের মূল্যায়ন করার সময় এসেছে। সমাজ ও রাষ্ট্রকে পরিবর্তন করতে হলে আমাদের লালনের আদর্শ ও বাণীকে অন্তরে ধারণ করতে হবে।
মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় কুষ্টিয়া লালন একাডেমির আয়োজনে এবং সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় ও জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহর ১৩৩তম তিরোধান দিবসের ৩ দিনব্যাপী আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
হানিফ বলেন, বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে দীর্ঘ সময় লড়াই সংগ্রাম করে একটি আদর্শ প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধ করেছিলাম নয় মাস। পাকিস্তানকে পরাজিত করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম। ধর্ম নিয়ে হানাহানি, মারামারি ও বিভাজন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কখনও চাননি।
তিনি বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতাকে হত্যার মধ্যে দিয়ে আমাদের রাষ্ট্রের মধ্যে একটি বিভাজন তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। যে বিভাজনের কারণে বাংলাদেশের মানুষ এখনও এক হতে পারে না। বঙ্গবন্ধু হত্যার সঙ্গে জড়িত সেই বেনিফিশিয়ারি দল বিএনপি-জামায়াত উগ্র, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী হিসেবে চিহিৃত হয়ে সমাজকে বিভক্ত করেছে। সেই বিভাজনের কারণেই এ দেশে জঙ্গিবাদের উত্থান ঘটেছিল। যার কারণে আমাদের সমাজে এখনও আঘাত আসে।
তিনি আরও বলেন, ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ির কারণে ২০০১ সাল থেকে উগ্র মৌলবাদী সংগঠনগুলো প্রকাশ্যে রাজপথে মিছিল করেছে। সারা দেশে একসঙ্গে সিরিজ বোমা হামলা ঘটিয়েছিল। দেশটাকে মৌলবাদী দেশ হিসেবে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল। সেখান থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সেসব মৌলবাদীদের কঠোর হস্তে দমন করে বাংলাদেশকে অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে সক্ষম হয়েছি।
জেলা প্রশাসক মো. এহেতেশাম রেজার সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন কুষ্টিয়া-১ (দৌলতপুর) আসনের সংসদ সদস্য আ. কা. ম. সরওয়ার জাহান, পুলিশ সুপার এ এইচ এম আবদুর রকিব, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহজ সদর উদ্দিন খান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আজগর আলী।
আলোচনা সভা শেষে মঞ্চে শুরু হয় লালন একাডেমি ছাড়াও দেশের খ্যাতনামা লালন শিল্পীদের অংশগ্রহণে লালন সঙ্গীতের আসর। এছাড়া, কালী গঙ্গা নদীর তীরে বসেছে গ্রামীণ মেলা। এদিকে ৩ দিনব্যাপী অনুষ্ঠানে যোগ দিতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে ছুটে এসেছেন হাজারও লালন ভক্তানুরাগী।
প্রিন্ট