বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুর রহমান বলেছেন, শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হয়ে বিস্ময়কর উন্নয়ন দিয়ে বাংলাদেশের চিত্র পাল্টে দিয়েছেন।
বিশ্ববাসীকে তিনি তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। আজ ভূরাজনীতিতে শেখ হাসিনা গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন। সেই জায়গায় দাঁড়িয়ে তিনি একটি ধনী রাস্ট্রের প্রেসিডেন্টকে তাঁর মুখের উপরে বলে দিয়েছেন, আমি হাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী হই নাই, বাংলাদেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের শক্ত অবস্থান রয়েছে। আমাকে চোখ রাঙিয়ে লাভ নেই, বাংলার মানুষ সেই চোখ রাঙানোর জবাব দেবে ইনশাআল্লাহ।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময় এই দেশের ৩০ লক্ষ মানুষ জীবন দিয়েছে দুই লক্ষ মা-বোন ইজ্জত হারিয়েছে। সেই সমস্ত গনহত্যার প্রতিশোধ নিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতিকে একটি মজবুত কাঠামোর ওপর দাঁড় করিয়েছেন সরকার। তাই শেখ হাসিনার বিকল্প বাংলাদেশে আর কোন বিকল্প নেতৃত্ব আমাদের কাছে নাই।
আজ শনিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকেল সাড়ে ৫টায় ফরিদপুরের বোয়ালমারী উপজেলার সহস্রাইল বাজারে স্থানীয় আওয়ামী লীগসহ অঙ্গসংগঠনের আয়োজনে বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে শান্তি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আব্দুর রহমান এসব কথা বলেন।
বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে আব্দুর রহমান বলেন, একটি রাজনৈতিক দল শেখ হাসিনা সরকারকে ক্ষমতা থেকে নামাতে চায়। তারা অক্টোবরের মধ্যে সরকারকে বিদায় দেওয়ার ঘোষণা দেয়। সেই দল জঙ্গিবাদের মদদদাতা, সেই দল সন্ত্রাসের হুদা। সেই বিএনপি শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা থেকে নামাতে চায়। ক্ষমতা থেকে নামিয়ে কে তোমাদের প্রধানমন্ত্রী হবে? খালেদা জিয়া দন্ডিত আসামি, তারেক জিয়া পলাতক দন্ডিত আসামি। সেই দলের কে প্রধানমন্ত্রী হবে আগে সেটা বাংলার মানুষকে জানিয়ে নির্বাচনে আসো। বিএনপি নির্বাচন বন্ধ করতে চায়। নির্বাচন ভন্ডুল করার জন্য নানান ষড়যন্ত্র করছে। তারা ২০১৩ ও ২০১৪ সালে দেশে জ্বালাও পোড়াও করেছে। বিএনপিকে তিনি বলেন, নির্বাচন ছাড়া এদেশে ক্ষমতায় আসার কোন বিকল্প পথ নেই। ষড়যন্ত্রের নীলনকশা না করে আপনারা নির্বাচনে আসুন। এলিভেটেড এক্সপ্রেস, পদ্মা সেতুসহ বাংলাদেশের সকল পর্যায়ে শেখ হাসিনার উন্নয়ন দেখে বিএনপির মাথা নষ্ট হয়ে গেছে। অক্টোবরের মধ্যে কর্নফুলি ট্যানেল উদ্বোধন করবেন শেখ হাসিনা। এদেশের মানুষ আর বিএনপি-জামায়াতকে মেনে নিবেনা। বাংলাদেশের মানুষের আশ্রয় ও নিরাপত্তা একমাত্র শেখ হাসিনা সরকারই দিতে পারেন।
নির্বাচনী এলাকাবাসীর উদ্দেশ্য আব্দুর রহমান বলেন, আপনারা আমাকে ভোট দিয়েছিলেন আর আমি কথা দিয়েছিলাম আপনাদের সাথে বেইমানি করবো না। আপনাদের আমানতের খিয়ানত করি নাই। রেল চালু হয়েছে, চন্দনা-বারাশিয়া নদী খনন হয়ে কৃষক ভাইয়েরা সে সুফল ভোগ করছেন। ঘরে ঘরে শতভাগ বিদ্যুৎ চালু হয়েছে, তিন উপজেলায় ১১০০ কিলোমিটার কাঁচা রাস্তা পাকা হয়েছে। এলাকায় এমন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নাই যেখানে নতুন ভবন হয়নি। তিন উপজেলার হাসপাতালে ৫০ শয্যায় উন্নীত হয়েছে। বোয়ালমারী হাসপাতাল ১০০ শয্যায় আনুষ্ঠানিক ভাবে উদ্বোধন করা হবে। আলফাডাঙ্গা ও মধুখালীতে ১০০ শয্যায় উন্নীত হবে। আর যে কাজগুলি এই আসনে বাকি আছে, শেখ হাসিনাকে আগামী নির্বাচনে আপনারা আবারো ম্যান্ডেট দিন। আর আমি যদি শেখ হাসিনার পাশে থাকতে পারি তাহলে ফরিদপুর-১ আসনে আমি উন্নয়নের ভরে দিবো ইনশাআল্লাহ।
বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান মীরদাহ পিকুলের পরিচালনায় শান্তি সমাবেশে সম্মানিত অতিথির বক্তব্য জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামীম হক বলেন, আমার জানা মতে ফরিদপুরের ৪টি আসনে কে কে মনোনয়ন পাবেন সেটা শেখ হাসিনা ঠিক করে রেখেছেন। আর এই আসনে আব্দুর রহমানকে সবুজ সংকেত দিয়েছেন নেত্রী। আব্দুর রহমান এই জেলায় একজন প্রভাবশালী মন্ত্রী হবেন আশা করছি।
শান্তি সমাবেশে রূপাপাত ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি কোবাদ হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহ ইসতিয়াক আরিফ, সহসভাপতি শ্যামল ব্যানার্জি, আসাদুজ্জামান মিন্টু, প্রচার সম্পাদক নিয়াজ জামান সজিব, বোয়ালমারী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক সেলিম রেজা লিপন মিয়া, মধুখালী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল হক বকু, আলফাডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা আব্দুল আলীম সোজা, মধুখালী পৌর মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মোর্শেদ রহমান লিমন, আলফাডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক মেয়র সাইফুর রহমান, বোয়ালমারী উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন চৌধুরী, জেলা যুবলীগের সদস্য সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান শরীফ সেলিমুজ্জামান লিটু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি জহুরুল ইসলাম জনি, সাধারণ সম্পাদক ফয়সাল আহমেদ রবিন, জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি তামজিদুল রশিদ চৌধুরী রিয়ান, সাধারণ সম্পাদক ফাহিম আহমদ, উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ মৌতুজা আলী তমাল, সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত সিদ্দিকী প্রমুখ।
সমাবেশে দুপুরের পর থেকেই বিভিন্ন এলাকা থেকে মোটর সাইকেল, নসিমন, করিমনে মিছিল নিয়ে নেতাকর্মীরা দলে দলে যোগ দিতে থাকেন। শান্তি সমাবেশ আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুর রহমানের সমর্থনে প্রায় ৭ হাজার নেতাকর্মীর সমাগম ঘটে।
প্রিন্ট