বেসরকারী ক্লিনিকগুলোর অবস্থাও তথৈবচ। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিষ্ট মোঃ আরিফুল ইসলাম জানান, প্রতিদিন গড়ে ৮০/১০০ জন জ্বরের রোগীর রক্ত পরিক্ষা করছেন তারা। এর মধ্যে প্রায় ৩০/৩৫ পার্সেন্ট রোগীর শরীরে ডেঙ্গুর উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে আইডিয়াল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক মোঃ বেলাল হুসাইন বলেন, খরচ কম হওয়ায় ডেঙ্গু শনাক্তে বেশী পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। সেখানকার ভিড় টপকে রোগীর স্রোত আসছে ক্লিনিক গুলোতেও।
তার ক্লিনিকে প্রতিদিন গড়ে ৩০/৪০ জন জ্বরের রোগীর রক্ত পরিক্ষা হচ্ছে। এর মধ্যে শতকরা ৪০/৫০ পার্সেন্টই ডেঙ্গুতে আক্রান্ত বলে বেলাল হুসাইন দাবী করেন।
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা এম এম নাহিদ আল রাকিব বলেন, একটি উপজেলা শহরে যে হারে ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হচ্ছে তা অবশ্যই উদ্বেগজনক ও ভয়াবহ। শুধু পৌর শহর নয় গ্রাম থেকেও প্রচুর রোগী আসছে। তিনি জানান, জানুয়ারীতে এ উপজেলায় প্রথম ডেঙ্গু ধরা পড়ে।
এ মাসে দুজন রোগীর শরীরে ডেঙ্গুর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। এরপর আগস্ট পর্যন্ত আক্রান্তের হার স্বভাবিক মাত্রায় থাকলেও সেপ্টেম্বরে এসে তা হঠাৎ উর্ধমূখী হতে শুরু করে। গত ৬ মাসে দু’শতাধিক রোগী তার হাসপাতালে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। এর মধ্যে ১২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত হাসপাতালে ভর্তি ছিল ৩৮ জন। দু’দিন পর অর্থাৎ ১৪ সেপ্টেম্বর দুপুর ১ টা পর্যন্ত এ সংখ্যা এক লাফে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৯ জনে। হু-হু করে বাড়ছে ভর্তি রোগীর সংখ্যা। যাদের অবস্থা একটু বেশী খারাপ কেবল তাদেরকেই হাসপাতালে ভর্তি নেয়া হয়। বেড সংকুলান না হওয়ায় ফ্লোরে রোগী রাখতে হচ্ছে। এর বাইরে হাসপাতালের ব্যবস্থাপত্রে নিজ বাড়িতে থেকে চিকিৎসা নিয়েছেন এবং নিচ্ছেন বিপুল সংখ্যাক রোগী।
বেসরকারি সেবাখাত থেকেও অসংখ্য রোগী চিকিৎসা নিচ্ছেন বলে জানান তিনি।
স্বাস্থ্য কর্মকর্তা নাহিদ আল রাকিব আরো বলেন, বোয়ালমারীতে যে হারে ডেঙ্গু রোগী বাড়ছে সে তুলনায় মশক নিধন কার্যক্রমে তেমন কোনো সাড়া দেখতে পাচ্ছি না। মনে হচ্ছে এ ব্যাপারে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা অনেকটাই নির্বিকার। পরিস্থিতি সামলাতে তিনি দ্রুত মশক নিধন কার্যক্রম জোরদার করার জন্য পৌর মেয়র সহ সকল জনপ্রতিনিধিদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানান।
এ বিষয়ে পৌর মেয়র সেলিম রেজা লিপনের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি বলেন, ডেঙ্গু পরিস্থিতি নিয়ে পৌর কর্তৃপক্ষ যথেষ্ট সজাগ রয়েছে। শহর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে আমাদের কর্মীরা কাজ করছে। এ লক্ষ্যে জনসচেতনতা বৃদ্ধিতে প্রতি ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে সভা করা হচ্ছে ।
পৌর এলাকাজুড়ে প্রচুর মাইকিং, পোস্টারিং, লিফলেট বিতরণ করা হয়েছে। মশা দমনে পয়ঃনিষ্কাশন ড্রেনগুলো সহ মশার অন্যান্য উৎসস্থলে ঔষধ ছিটানো হয়েছে। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে পৌর কাউন্সিলরদের সতর্ক থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়ছে।
প্রিন্ট