ঢাকা , সোমবার, ২১ এপ্রিল ২০২৫, ৭ বৈশাখ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত Logo লালপুরে ভুট্টা ক্ষেত থেকে কবিরাজের লাশ উদ্ধার Logo পুলিশ পরিচয়ে প্রতারণাকারী গ্রেফতার Logo শালিখার আড়পাড়া প্রাথমিক বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে মুগ্ধ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা Logo ভূমি অফিসের বিরুদ্ধে মিথ্যা সংবাদ প্রকাশের অভিযোগ Logo ফরিদপুরের ধর্ষণ মামলার আসামী সোহেল গ্রেপ্তার Logo পাংশায় শিক্ষা কল্যাণ ট্রাস্টের সাধারণ সভায় নতুন কমিটি Logo কুষ্টিয়ায় উলামা সম্মেলন-২০২৫ অনুষ্ঠিত Logo নির্বাচন ছাড়া কোন সরকার দীর্ঘদিন থাকলে ফ্যাসিবাদ, স্বৈরাচারেরা জন্ম নেয়ঃ -আব্দুস সালাম Logo ভেড়ামারায় মাজারে মাদকবিরোধী অভিযান, ভক্তদের হাতে লাঞ্ছিত ম্যাজিস্ট্রেট
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

মাগুরার মহম্মদপুরে নবগঙ্গায় ফসলের ঢেউ

মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নবগঙ্গা নদীটি নাব্য হারিয়ে মৃতপ্রায়। বালু ও পলি জমে ক্রমেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীটি পরিণত হয়েছে খালে। নদীর বুকে জেগে উঠছে বিস্তীর্ণ চর। স্থানীয়রা নদীর এই চর দখলে নিয়ে এখন চাষাবাদ করছেন। ফলে নদীটি রূপান্তরিত হয়েছে আবাদি ক্ষেতে। নদী হাজার হাজার একর জমিতে এ বছর আবাদ হয়েছে বোরো ধানসহ রকমারি ফসল।

নদীতীরবর্তী গ্রামবাসীরা জানান, এক সময় নদীতে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। তা দিয়ে নিয়মিত চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হতো। অনেকে নদীর পানি পানও করত। কিন্তু দীর্ঘদিন খনন না করায় নদীর তলদেশে পলি ও বালু জমে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর। অনেকে আবার নদীর এসব জমি ভরাট করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন। পানির অভাবে নদীতে মাছের বিচরণ ক্ষেত্র কমে যাওয়ায় তেমন মাছও পাওয়া যায় না। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার সহস্রাধিক জেলে পরিবারের অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ। বাধ্য হয়েই মৎস্যজীবীরা পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

প্রমত্ত নবগঙ্গা নদীর ঢেউয়ের বাঁধভাঙা স্রোতের মাতম এখন শুধুই স্মৃতি। প্রয়োজনীয় গভীরতা না থাকায় নৌ-চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্বাভাবিক পানির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেচকাজ। চাষাবাদে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। ব্যয়সাপেক্ষ হলেও নদীতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খননকাজ করে কৃষির এ বিপর্যয় রোধ করার দাবি এলাকাবাসীর দীঘ দিনের।

পরেশ মাঝি নামে স্থানীয় এক জেলে বলেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তবুও বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি।

স্থানীয় কৃষক জলিল শেখ বলেন, নদীতে চর পড়ায় আমরা পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেয়ে চাষাবাদ করে ভালো আছি।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান বলেন, নবগঙ্গা নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে খননকাজের জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের চিঠিও পেয়েছি। ধানকাটা শেষে হলেই খননকাজ শুরু হবে।

মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদার বলেন, নবগঙ্গা নদী খননের জন্য আমরা জাতীয় সংসদে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দও পাওয়া গেছে। শিগগিরই খননকাজ শুরু হবে।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

ফরিদপুরে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

error: Content is protected !!

মাগুরার মহম্মদপুরে নবগঙ্গায় ফসলের ঢেউ

আপডেট টাইম : ১১:৫২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১০ এপ্রিল ২০২১
শফিকুল ইসলাম জীবন, মহম্মদপুর (মাগুরা) প্রতিনিধিঃ :
মাগুরার মহম্মদপুর উপজেলার বুক চিরে বয়ে যাওয়া ঐতিহ্যবাহী নবগঙ্গা নদীটি নাব্য হারিয়ে মৃতপ্রায়। বালু ও পলি জমে ক্রমেই ভরাট হয়ে যাচ্ছে নদীর তলদেশ। পানির প্রবাহ কমে যাওয়ায় নদীটি পরিণত হয়েছে খালে। নদীর বুকে জেগে উঠছে বিস্তীর্ণ চর। স্থানীয়রা নদীর এই চর দখলে নিয়ে এখন চাষাবাদ করছেন। ফলে নদীটি রূপান্তরিত হয়েছে আবাদি ক্ষেতে। নদী হাজার হাজার একর জমিতে এ বছর আবাদ হয়েছে বোরো ধানসহ রকমারি ফসল।

নদীতীরবর্তী গ্রামবাসীরা জানান, এক সময় নদীতে পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ ছিল। তা দিয়ে নিয়মিত চাষাবাদ করার পাশাপাশি নিত্যপ্রয়োজনীয় কাজে ব্যবহার করা হতো। অনেকে নদীর পানি পানও করত। কিন্তু দীর্ঘদিন খনন না করায় নদীর তলদেশে পলি ও বালু জমে বিস্তীর্ণ এলাকাজুড়ে জেগে উঠেছে বিশাল চর। অনেকে আবার নদীর এসব জমি ভরাট করে বসতবাড়ি গড়ে তুলেছেন। পানির অভাবে নদীতে মাছের বিচরণ ক্ষেত্র কমে যাওয়ায় তেমন মাছও পাওয়া যায় না। ফলে বেকার হয়ে পড়েছেন উপজেলার সহস্রাধিক জেলে পরিবারের অসংখ্য খেটে খাওয়া মানুষ। বাধ্য হয়েই মৎস্যজীবীরা পেশা পরিবর্তন করে অন্য পেশায় চলে যাচ্ছেন।

প্রমত্ত নবগঙ্গা নদীর ঢেউয়ের বাঁধভাঙা স্রোতের মাতম এখন শুধুই স্মৃতি। প্রয়োজনীয় গভীরতা না থাকায় নৌ-চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। স্বাভাবিক পানির অভাবে ব্যাহত হচ্ছে সেচকাজ। চাষাবাদে দেখা দিয়েছে বিপর্যয়। ব্যয়সাপেক্ষ হলেও নদীতে ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে খননকাজ করে কৃষির এ বিপর্যয় রোধ করার দাবি এলাকাবাসীর দীঘ দিনের।

পরেশ মাঝি নামে স্থানীয় এক জেলে বলেন, নদীর পানি কমে যাওয়ায় আর আগের মতো মাছ পাওয়া যায় না। তবুও বাপ-দাদার পেশা ধরে রেখে পরিবার-পরিজন নিয়ে কোনোমতে বেঁচে আছি।

স্থানীয় কৃষক জলিল শেখ বলেন, নদীতে চর পড়ায় আমরা পৈতৃক সম্পত্তি ফিরে পেয়ে চাষাবাদ করে ভালো আছি।

মাগুরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সরোয়ার জাহান বলেন, নবগঙ্গা নদীর নাব্য ফিরিয়ে আনতে খননকাজের জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। আমরা মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দের চিঠিও পেয়েছি। ধানকাটা শেষে হলেই খননকাজ শুরু হবে।

মাগুরা-১ আসনের এমপি সাইফুজ্জামান শিখর ও মাগুরা-২ আসনের এমপি বীরেন শিকদার বলেন, নবগঙ্গা নদী খননের জন্য আমরা জাতীয় সংসদে কথা বলেছি। মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দও পাওয়া গেছে। শিগগিরই খননকাজ শুরু হবে।


প্রিন্ট