ঢাকা , বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম
Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক পৃথক স্থানে বজ্রপাতে ৩ জন নিহত Logo নাগরপুরে জব্বার হত্যা: মূল আসামি এখনও পলাতক, দোষীদের গ্রেফতারের দাবীতে এলাকাবাসীর বিক্ষোভ Logo কুষ্টিয়ায় ডাম্প ট্রাক-মোটরসাইকেল সংঘর্ষ, নিহত ২ Logo শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষে রূপগঞ্জে দিনব্যাপী কর্মশালা অনুষ্ঠিত Logo নরসিংদী পুলিশের অভিযানে অস্ত্র, গুলিসহ একজন গ্রেপ্তার Logo চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে চীনে এক লাখ ২০ হাজার টন আম রপ্তানির উদ্যোগ Logo কালাইয়ে শিক্ষার গুণগতমান উন্নয়ন শীর্ষক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত Logo গোদাগাড়ীতে ফিরে আসছে মাইড়্যার চাষ Logo প্রতিনিয়ত যাচ্ছে প্রাণ, তবুও থেমে নেই মাদারীপুরে মানবপাচার চক্র Logo লালপুরে আবারো প্রকাশ্যে গুলিবর্ষণ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠ নামছে ভোক্তা অধিদপ্তর

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত দামের বাইরে এবং ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পাকা রসিদ ছাড়া ডিম বেচাকেনা করা যাবে না। খামারি থেকে খুচরা পর্যন্ত সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে এ নির্দেশনা মানতে হবে। নির্দেশনা উপেক্ষা করে কেউ ডিম বিক্রি করলে শুধু জরিমানা নয়, প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। বুধবার থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোরভাবে মাঠে নামবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান সংস্থার মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, এফবিসিসিআইর প্রতিনিধি, ডিম উৎপাদনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র খামারি, পাইকারি ও খুচরা ডিম বিক্রেতাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিটি খাতের প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব ক্রয়-বিক্রয়ের ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

সভায় প্রতিটি ডিম নির্ধারিত ১২ টাকার বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করা যাবে না এমন কঠোর অবস্থান ও ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে উৎপাদন ব্যয় সাড়ে ১০ টাকা হওয়ার পর উৎপাদক, ডিলার, পাইকারের হাত ঘুরে খুচরা পর্যায়ে কীভাবে ১২ টাকা দর বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কোনো কিছু বলা হয়নি। ফলে ব্যবসায় কে কত মুনাফা করবে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা থেকে গেছে।

সফিকুজ্জামান বলেন, ‘খুচরা ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে ডিম কেনার রসিদ সংগ্রহ করে দোকানে রাখতে হবে। একইভাবে পাইকারদের রাখতে হবে উৎপাদক থেকে ডিম কেনার রসিদ। এর বাইরে কোনোভাবেই ডিম বিক্রি করা যাবে না। একই সঙ্গে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কত টাকা দরে পাইকারদের কাছে ডিম বিক্রি করছে, প্রতিদিন সে তথ্য পাঠাতে হবে ভোক্তা অধিদপ্তরে। খুচরা থেকে উৎপাদনকারী একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এই ব্লেম গেম চলবে না।’ প্রতি ডিমে তিন থেকে চার টাকা বাড়িয়ে দুষ্টচক্র মাত্র ১০ দিনে ১২০ থেকে ১৬০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। কারা এ অর্থ তুলে নিলু এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।

মহাপরিচালক আরও বলেন, খামারিদের সুরক্ষা দিতে সরকার ডিম আমদানি করছে না। কিন্তু এই সুবিধার বিনিময়ে বাজারে কারসাজি করলে ভোক্তার স্বার্থে আমদানির অবস্থানে যাবে সরকার।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. শাহিনুর আলম হিসাব কষে জানান, ভোক্তা পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে খামারিদের সুরক্ষা দরকার। গুটিকয়েক গোষ্ঠীর কারণে বাজার অস্থিতিশীল। ডিম-মুরগির বাজারে শৃঙ্খলা আনতে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নির্ধারিত দামকে সমর্থন জানিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, বাজার অস্থির করলে কেউ পার পাবে না। বেশ কয়েকটি মামলা আগে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নতুন করে আরও মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে অস্থিতিশীল বাজারের দায় কোনোভাবেই নিতে রাজি নন উৎপাদকরা। তারা বলছেন, বড় খামারিদের একটি ডিম উৎপাদনে ব্যয় হচ্ছে ১০ দশমিক ৩১ টাকা এবং ছোটদের খরচ হচ্ছে ১০ দশমিক ৮৫ টাকা। সাড়ে ১০ টাকায় উৎপাদিত ডিম তারা বিক্রি করছেন মাত্র ১ টাকা লাভে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ টাকায়। পোলট্র্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, খামারিরা এত কষ্ট করে ডিমপ্রতি মাত্র ৫০ পয়সা লাভ করবে, আর ব্যবসায়ীরা কোনো পরিশ্রম না করেই শুধু বিনিয়োগ করে দেড় থেকে ২ টাকা মুনাফা করবে; এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

চাঁপাইনবাবগঞ্জে পৃথক পৃথক স্থানে বজ্রপাতে ৩ জন নিহত

error: Content is protected !!

ডিমের দাম নিয়ন্ত্রণে মাঠ নামছে ভোক্তা অধিদপ্তর

আপডেট টাইম : ১১:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৩
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা ডেস্ক :

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের প্রস্তাবিত দামের বাইরে এবং ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে পাকা রসিদ ছাড়া ডিম বেচাকেনা করা যাবে না। খামারি থেকে খুচরা পর্যন্ত সব পর্যায়ের ব্যবসায়ীকে এ নির্দেশনা মানতে হবে। নির্দেশনা উপেক্ষা করে কেউ ডিম বিক্রি করলে শুধু জরিমানা নয়, প্রয়োজনে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হতে পারে। বুধবার থেকে এ নির্দেশনা বাস্তবায়নে কঠোরভাবে মাঠে নামবে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর।

সোমবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান সংস্থার মহাপরিচালক এ এইচ এম সফিকুজ্জামান। এ সময় প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, বাংলাদেশ প্রতিযোগিতা কমিশন, কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ, এফবিসিসিআইর প্রতিনিধি, ডিম উৎপাদনকারী করপোরেট প্রতিষ্ঠান, ক্ষুদ্র খামারি, পাইকারি ও খুচরা ডিম বিক্রেতাদের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রতিটি খাতের প্রতিনিধিরা তাদের নিজস্ব ক্রয়-বিক্রয়ের ফিরিস্তি তুলে ধরেন।

সভায় প্রতিটি ডিম নির্ধারিত ১২ টাকার বেশি দামে খুচরা বাজারে বিক্রি করা যাবে না এমন কঠোর অবস্থান ও ক্রয়-বিক্রয়ের রসিদ রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে উৎপাদন ব্যয় সাড়ে ১০ টাকা হওয়ার পর উৎপাদক, ডিলার, পাইকারের হাত ঘুরে খুচরা পর্যায়ে কীভাবে ১২ টাকা দর বাস্তবায়ন হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো কোনো কিছু বলা হয়নি। ফলে ব্যবসায় কে কত মুনাফা করবে, সে বিষয়ে অস্পষ্টতা থেকে গেছে।

সফিকুজ্জামান বলেন, ‘খুচরা ব্যবসায়ীদের অবশ্যই পাইকারি বিক্রেতাদের কাছ থেকে ডিম কেনার রসিদ সংগ্রহ করে দোকানে রাখতে হবে। একইভাবে পাইকারদের রাখতে হবে উৎপাদক থেকে ডিম কেনার রসিদ। এর বাইরে কোনোভাবেই ডিম বিক্রি করা যাবে না। একই সঙ্গে করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলো কত টাকা দরে পাইকারদের কাছে ডিম বিক্রি করছে, প্রতিদিন সে তথ্য পাঠাতে হবে ভোক্তা অধিদপ্তরে। খুচরা থেকে উৎপাদনকারী একে অপরকে দোষারোপ করছেন। এই ব্লেম গেম চলবে না।’ প্রতি ডিমে তিন থেকে চার টাকা বাড়িয়ে দুষ্টচক্র মাত্র ১০ দিনে ১২০ থেকে ১৬০ কোটি টাকা ভোক্তার পকেট থেকে হাতিয়ে নিয়েছে। কারা এ অর্থ তুলে নিলু এমন প্রশ্নও তোলেন তিনি।

মহাপরিচালক আরও বলেন, খামারিদের সুরক্ষা দিতে সরকার ডিম আমদানি করছে না। কিন্তু এই সুবিধার বিনিময়ে বাজারে কারসাজি করলে ভোক্তার স্বার্থে আমদানির অবস্থানে যাবে সরকার।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পরিচালক ড. শাহিনুর আলম হিসাব কষে জানান, ভোক্তা পর্যায়ে একটি ডিমের দাম ১২ টাকার বেশি হওয়া উচিত নয়। তবে খামারিদের সুরক্ষা দরকার। গুটিকয়েক গোষ্ঠীর কারণে বাজার অস্থিতিশীল। ডিম-মুরগির বাজারে শৃঙ্খলা আনতে নীতিমালা প্রণয়নের কাজ চলছে।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের নির্ধারিত দামকে সমর্থন জানিয়ে প্রতিযোগিতা কমিশনের সদস্য হাফিজুর রহমান বলেন, বাজার অস্থির করলে কেউ পার পাবে না। বেশ কয়েকটি মামলা আগে হয়েছে। গোয়েন্দা সংস্থার মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। নতুন করে আরও মামলা করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।

এদিকে অস্থিতিশীল বাজারের দায় কোনোভাবেই নিতে রাজি নন উৎপাদকরা। তারা বলছেন, বড় খামারিদের একটি ডিম উৎপাদনে ব্যয় হচ্ছে ১০ দশমিক ৩১ টাকা এবং ছোটদের খরচ হচ্ছে ১০ দশমিক ৮৫ টাকা। সাড়ে ১০ টাকায় উৎপাদিত ডিম তারা বিক্রি করছেন মাত্র ১ টাকা লাভে সর্বোচ্চ সাড়ে ১১ টাকায়। পোলট্র্রি ইন্ডাস্ট্রিজ সেন্ট্রাল কাউন্সিলের সভাপতি শামসুল আরেফিন খালেদ বলেন, খামারিরা এত কষ্ট করে ডিমপ্রতি মাত্র ৫০ পয়সা লাভ করবে, আর ব্যবসায়ীরা কোনো পরিশ্রম না করেই শুধু বিনিয়োগ করে দেড় থেকে ২ টাকা মুনাফা করবে; এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।


প্রিন্ট