গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ে সেবা নিতে আসা সাধারণ মানুষদের সাথে খারাপ আচরণ, ভোগান্তিতে ফেলে ঘুষ দাবি করার অভিযোগে পাওয়া গেছে।
ওই দপ্তরের তিন নারী ডাক্তারের ওপর অভিযোগ তোলা বোড়াশী ইউনিয়নের মর্জিনা বেগম সাংবাদিকদের জানান, গত কয়েক সপ্তাহ আগে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ে ঘুর ঘুর করেও একটা প্রতিবন্ধী সনাক্তকরণ প্রত্যয়ন নিতে পারেনি। যতবার ওই হাসপাতালে গিয়েছি তারা আমার সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করেছে। ভুক্তভোগী মর্জিনা বেগম আরো বলেন, তিন বছর বয়সের জায়ান আহমেদ নামের একটি জন্মগত শারীরিক প্রতিবন্ধী নাতির ডাক্তারি প্রত্যয়ন আনতে উপজেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ে পৌঁছে ওই হাসপাতালের প্রতিবন্ধী শনাক্তকরণের দায়িত্বে থাকা ৪২ তম বিসিএস ডাক্তারদের রুমে যাই, তারা আমার নাতির জন্ম নিবন্ধন, সমাজসেবা অফিসের আবেদন ফরমসহ অন্যান্য কাগজপত্র ও প্রতিবন্ধী নাতিকে দেখে। একপর্যায়ে আমাকে বলে একে প্রত্যয়ন দেওয়া যাবে না।তখন তাদের অনুরোধ করলে তারা আমাকে ধমক দেয়।
পরে সুচিতা আক্তার নামের ডাক্তার ১০ হাজার টাকা দাবি করে। আমি টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় আমাকে রুম থেকে বের করে দেয় এবং বলে ভাতা খাওয়ার এত লোভ কেন। এর পরেও আমি আমার এলাকার চৌকিদার নিয়ে হাসপাতালে তাই, তারা আবারও আমাদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করে। আমরা কি মানুষ না কি পশু? আমিতো সঠিক প্রত্যয়ন চেয়েছি। কেন তারা টাকা চাইলেন, টাকা দিতে না পারায় খারাপ ব্যবহার করলেন। এবিষয়ে ভুক্তভোগী মর্জিনা বেগম স্বাস্থ্য বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বরাবরে অভিযোগ করবেন বলে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
এবিষয়ে জানতে ওই স্বাস্থ্য কার্যালয় সরজমিন পরিদর্শন করে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। পাশাপাশি ওই তিন ডাক্তারকে সেবা গ্রহীতাদের বাহিরে দাঁড় করে রেখে মোবাইল চাপাচাপি করে সময় কাটাতে দেখা গেছে। তথ্য সংগ্রহে যাওয়া গোপালগঞ্জ প্রেস ক্লাব (জিপিসি)’র সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে উপজেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত ৪২তম বিসিএস স্বাস্থ্যের তিন ডাক্তার সহকারী সার্জন ডঃ সুচিতা আক্তার, ডঃ তামান্না শবনম জ্যোতি ও ডাঃ জাকিয়া সুলতানা অভিযোগ কারি মর্জিনা বেগম ও সেবা নিতে আসা অন্যান্য সাধারণ মানুষদের সাথে খারাপ আচরণ করেন। সাংবাদিকেরা সেবা গ্রহীতাদের সাথে খারাপ আচরণ করার বিষয়ে জানতে চাইলে তাদের ওপরও চড়াও হয় ওই তিন নারী চিকিৎসক।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কার্যালয়ের (ইউএইচএফপিও) ডাক্তার নিপা বেপারী তার দপ্তরে সংগঠিত অপরাধ কর্মকাণ্ডের অভিযোগগুলো এড়িয়ে গিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, ঘটনার মসময় আমি কার্যালয়ে উপস্থিত ছিলাম না, তাদের এমন আচরণের জন্য আমি ক্ষমা প্রার্থী।
এ বিষয়ে সিভিল সার্জন নিয়াজ মোহাম্মদ বলেন, কোন সেবা গ্রহীতার সাথে ডাক্তারদের খারাপ আচরণ করার সুযোগ নেই। সুনির্দিষ্টভাবে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রিন্ট