প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অশুভ শক্তির হাত থেকে বাংলাদেশকে রক্ষার জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, বিএনপি নির্বাচন চায় না। বরং দেশে অস্বাভাবিক পরিস্থিতি সৃষ্টির অপেক্ষায় রয়েছে। তারা (বিএনপি) বাংলাদেশকে আবার অস্থিতিশীল পরিস্থিতির দিকে ঠেলে দিতে চায়। তাই সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।
ইতালিতে মঙ্গলবার প্রবাসী বাংলাদেশীদের আয়োজিত এক কমিউনিটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি। বাসস
প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা আগামী সাধারণ নির্বাচনে আবারো তার দলের নির্বাচনী প্রতীক ‘নৌকা’য় ভোট চান। তিনি বলেন, ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ গড়তে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আসতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নির্বাচন অবশ্যই সংবিধান অনুযায়ী হবে। বিএনপি জানে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। তাই বিএনপি দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। ভোট কারচুপির কারণে যারা বিতাড়িত হয়েছে, জনগণ তাদের ভোট দিতে যাবে কেন? অগ্নিসংযোগের মাধ্যমে মানুষ হত্যার পর কিভাবে তারা ভোট চায়? তিনি বলেন, তারা (বিএনপি) নির্বাচন চায় না। তারা তাদের কিছু বিদেশী প্রভুর পা চাটে এবং তারা চায় দেশের মানুষ তাদের (বিদেশী প্রভুদের) দ্বারা কষ্ট ভোগ করুক। তারা দেশের চলমান উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতে চায়। বিএনপি কখনো দেশবাসীর কল্যাণ চায় না। বরং তারা বাংলাদেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায়। তাদের (বিএনপি) উদ্দেশ্য হলো ঘোলা পানিতে মাছ শিকার করা। তাই তাদের লক্ষ্য বাংলাদেশের অগ্রগতি ব্যাহত করা।
র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নের (র্যাব) কয়েকজন কর্মকর্তার ওপর নিষেধাজ্ঞা এবং যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা বিধিনিষেধের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে, তাদের দ্বারা আমরা সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমন করেছি। আমরা এর রহস্য বুঝতে পারছি না।
যারা স্বাধীনতা যুদ্ধে সমর্থন করেনি তারা এখন বাংলাদেশের সাথে বিভিন্নভাবে খেলা খেলতে চায় উল্লেখ করে তিনি বলেন, খেলোয়াড়দের খেলতে দেয়া যাবে না। যেকোনো অসৎ উদ্দেশ্য নস্যাৎ করতে দেশের জনগণকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
বৈধ উপায়ে রেমিট্যান্স পাঠানোর জন্য প্রবাসী বাংলাদেশীদের প্রতি আহ্বান জানান শেখ হাসিনা। বাংলাদেশে বিশেষ করে আইসিটি খাত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প এবং ক্ষুদ্র শিল্পে বিনিয়োগের জন্য বিদেশী অংশংীদারদের সন্ধান করার জন্যও তাদের অনুরোধ করেন। তিনি প্রবাসীদের যে দেশে তারা থাকছে সে দেশের আইন মেনে চলার জন্য এবং বিদেশে চাকরি প্রার্থীদের অবৈধ চ্যানেলের মাধ্যমে অন্য দেশে পাড়ি জমাতে নিরুৎসাহিত করার আহ্বান জানান।
প্রধানমন্ত্রী বর্তমান বৈশ্বিক পরিস্থিতির মধ্যে খাদ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য প্রবাসীদের তাদের পরিবার এবং আত্মীয়দের এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি না রাখতে উৎসাহিত করতে বলেছেন। তিনি বলেন, তার সরকার খাদ্য সংরক্ষণ ব্যবস্থার উন্নতির জন্য পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন খাতে তার সরকারের সাফল্য এবং ২০০৯ সাল থেকে দেশের অর্জিত অগ্রগতির কথাও তুলে ধরেন।
দেশের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রীর রোম ত্যাগ : এ দিকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসঙ্ঘের খাদ্যব্যবস্থা সামিট+২ স্টকটেকিং মোমেন্টে যোগদানে ইতালিতে তিন দিনের সরকারি সফর শেষে গতকাল দেশের উদ্দেশে রওনা হন।
কাতার এয়ারওয়েজের একটি নিয়মিত ফ্লাইট প্রধানমন্ত্রী এবং তার সফরসঙ্গীদের নিয়ে স্থানীয় সময় সকাল ৯টা ৪৫ মিনিটে (বাংলাদেশ সময় বেলা ১:৪৫) রোম ফিউমিসিনো বিমানবন্দর ত্যাগ করে।
ফ্লাইটটি কাতারের দোহায় হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে এক ঘণ্টার বেশি যাত্রা বিরতির পর বাংলাদেশ স্থানীয় সময় আজ বুধবার রাত ২টা ৫ মিনিটে ঢাকার হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে।
প্রিন্ট