বৃহস্পতিবার দুপুরে কাশিয়ানী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ে করোনাভাইরাস পরিস্থিতি মোকাবেলায় আয়োজিত জরুরি সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ইউএনও রথীন্দ্রনাথ রায় জানিয়েছেন।
পূর্ণব্রহ্ম শ্রীশ্রী হারচাঁদ ঠাকুরের জম্মতিথি উপলক্ষ্যে স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা আগামী ৯ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। গত বছরও করোনাভাইরাসের কারণে এই স্নানোৎসব ও বারুণী মেলা হয়নি।
স্থানীয়রা জানান, ২১০ বছর ধরে শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্মতিথি উপলক্ষে ওড়াকান্দিতে স্নানোৎসব ও তিন দিনব্যাপী বারুণীর মেলা হয়ে আসছে। এই স্নানে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, আসাম, মধ্যপ্রাচ্য এবং বাংলাদেশের বিভিন্ন স্থান থেকে পূণ্যার্থীরা আংশ নেন।স্থানীয় সাংবাদিক সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, ১২১৮ বঙ্গাব্দে কাশিয়ানী উপজেলার সাফলীডাঙ্গা গ্রামে হরিচাঁদ ঠাকুরের জন্ম। পরে পার্শ্ববর্তী ওড়াকান্দি গ্রামে আবাস গড়েন। নিম্নবর্ণের হিন্দু ও পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠীকে তিনি সংগঠিত করেছেন। হরিচাঁদ ঠাকুর মতুয়াবাদ প্রচার করেছিলেন।
ওড়াকান্দি বারুণী মেলা আয়োজক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ক্ষিরোদ রঞ্জন বিশ্বাস বলেন, “স্নান ও বারুণী মেলা হওয়া না হওয়ার ব্যাপারে প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের কিছু জানানো হয়নি। তবে করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর স্নান ও বারুণী মেলা না হওয়ারই সম্ভাবনা।”
কাশিয়ানী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও ঠাকুর পরিবারের সদস্য সুব্রত ঠাকুর হিল্টু বলেন, “যেভাবে করোনা সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তাতে আমরা ভীষণ শঙ্কিত। স্নানোৎসবে দেশ ও দেশের বাইরে থেকে লাখ লাখ ভক্ত এই ওড়াকান্দির ঠাকুর বাড়িতে আসেন।”তবে মেলা ও অন্যান্য সকল কার্যক্রম বন্ধ রেখে সীমিত পরিসরে সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে শুধু ধর্মীয় রীতিতে স্নান করার অনুমতি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।
গোপালগঞ্জ জেলা প্রশাসক শাহিদা সুলতানা বলেন, “মন্ত্রণালয় থেকে নির্দেশনা এসেছে করোনা পরিস্থিতি মোকাবেলায় সব ধরনের সামাজিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় জনসমাগম, সভা-সমাবেশ বন্ধ রাখতে হবে। করোনাভাইরাস সংক্রমণ বিস্তাররোধে নির্দেশনাগুলো বাস্তবায়ন করতে কাজ করে যাচ্ছি। সে ক্ষেত্রে ওড়াকান্দি স্নান ও বারুণী মেলা হওয়ার কোনো সুযোগ নেই।”