নোয়াখালী দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় ডেঙ্গু প্রতিরোধ ও পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যু হ্রাস সংক্রান্ত গণসচেতনতা মূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকালে উপজেলা পরিষদ সভা কক্ষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ কায়সার খসরুর সভাপতিত্বে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
উক্ত সভায় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান এডভোকেট কেফায়েত উল্লাহ, উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি গোলাম সরওয়ার,হাতিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ওসি আমির হোসেন, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এমবিবিএস ডা: তাহমিনা, উপজেলা কৃষি অফিসার আব্দুল বাজেদ সবুজ, প্রকল্প বাস্তব কর্মকর্তা আবু বক্কর সিদ্দিক, চরইশ্বর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলা উদ্দিন আজাদ, সোনাদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহেদী হাসান, জাহাজমারা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মাসুম বিল্লাহ, চরকিং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নাঈম আহমেদ, বুড়িচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ফখরুল ইসলাম, ও উপজেলা বিভিন্ন পর্যায়ের সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তা বৃন্দ।
ডা: তাহমিনা আক্তার বক্তব্য বলেন হাতিয়ায় ২০২৩ সালে জুলাই মাস পর্যন্ত মোট ৫০ টি শিশু পানিতে পড়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা হয় তার মধ্যে আমরা ৩৫ জন কে সুস্থ করতে সক্ষম হয়েছেন, এবং হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের ১৫ জন শিশু পানিতে পড়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
সভার শেষ পর্যায়ে উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা বলেন, এডিস মশা কিংবা ডেঙ্গু জ্বর সংক্রান্ত বিপদটি সম্পূর্ণ নিজের/ব্যক্তিগত, তাই ডেঙ্গু নিধনে সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষকেও এগিয়ে আসতে হবে। এডিস মশা আক্রমন থেকে রক্ষা পেতে প্রত্যেকের বাড়ির চারদিকের সব জায়গা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। ময়লা-আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলা যাবে না। মনে রাখতে হবে জীবন আপনার এবং আপনাকেই প্রথমে এগিয়ে আসতে হবে। কোনো সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ এগিয়ে না এলে সরকারের পক্ষে একা সমস্যা উত্তরণ পাওয়া কঠিন। সরকার ও জনগণের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় দেশের ডেঙ্গু সমস্যা দূর হবে, এই প্রত্যাশা করি। এ ছাড়া পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর অন্যতম কারণ হলো সঠিক তত্ত্বাবধান ও শিক্ষার অভাব। একটি শিশুকে সাঁতার শেখানোর সঠিক বয়স পাঁচ বছর। কিন্তু সাঁতার শেখানোর পর্যাপ্ত বয়সেও একটা শিশুকে সাঁতার শেখানো হচ্ছে না, ফলে একটি শিশুর সাঁতার শেখার পর্যাপ্ত বয়স থাকা সত্ত্বেও পানিতে ডুবে অকালে প্রাণ হারাচ্ছে।
বাড়ির পাশে অপ্রয়োজনীয় ডোবা বা জলাশয় থাকাটাও শিশুমৃত্যুর অন্যতম প্রধান কারণ। তাই আমরা একটি শিশুর অকালমৃত্যু ঠেকাতে বেশ কিছু প্রতিরোধব্যবস্থা নিতে পারি। আর এ প্রতিরোধব্যবস্থার মাধ্যমে পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
পানিতে ডুবে শিশুমৃত্যুর হার কমিয়ে আনার প্রথম ধাপ হলো বাবা-মায়ের সচেতন হওয়া। একটা শিশু হাঁটা শেখার পর তাকে চোখে চোখে রাখতে হবে এবং বাড়ির পাশের পুকুর বা জলাশয়ের দিকে যেন না যায়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। বাড়ির পাশের পুকুর বা জলাশয়ের চারদিকে বেড়া দিতে হবে এবং অপ্রয়োজনীয় পুকুর বা গর্ত-ডোবা থাকলে বন্ধ করে দিতে হবে।
এ ছাড়া একটা শিশুর পাঁচ বছর বয়স হওয়ার পর অবশ্যই সাঁতার শেখার গুরুত্ব দিতে হবে। সাঁতার শেখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে একটি শিশুকে অবগত করতে হবে। একজন শ্রেণিশিক্ষকও এ ক্ষেত্রে অনেক ভূমিকা পালন করতে পারেন। তিনি সাঁতার শেখার শারীরিক প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের বুঝিয়ে সাঁতার শিখতে উদ্বুদ্ধ করতে পারেন।
- আরও পড়ুনঃ খোকসায় বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গমাতা প্রাথমিক বিদ্যালয় গোল্ডকাপ ফুটবল টুর্নামেন্ট ২০২৩ এর শুভ উদ্বোধনী
এ ছাড়া বেশ কিছুদিন আগে থেকে পানিতে ডুবে শিশুর মৃত্যুর হার কমাতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে। যদি এই পদক্ষেপগুলো সঠিকভাবে কার্যকর করা হয়, তাহলে সরকার ও সর্বসাধারণের প্রচেষ্টায় শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব।
প্রিন্ট