নোয়াখালীর ভাসানচর থানা এলাকায় রোহিঙ্গা হত্যাকান্ডের দুই দিনের মধ্যে রহস্য উদঘাটন ও আসামী কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
বুধবার (০৫ জুলাই ) নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ শহীদুল ইসলাম, পিপিএম (বার) এর দিক-নির্দেশনায় ও অফিসার ইনচার্জ, ভাসানচর থানার সার্বিক তত্ত্বাবধানে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই (নিরস্ত্র) সুদীপ্ত নাথ দীপ্ত মামলাটি তদন্তকালে অভিযান পরিচালনা করিয়া এজাহার নামীয় আসামী রোহিঙ্গা ইছাক (৩০) ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী রোহিঙ্গা নুর হোসেন (২৪) কে গ্রেফতার করা হয়।
তাদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, ঘটনার পূর্বে ভিকটিম মৃত সায়েদুল ইসলাম (৩০) তাহার লোকজন নিয়ে অত্র মামলার এজাহার নামীয় আসামী ইব্রাহিমকে অপহরণ করে নিয়ে যায় ও মুক্তিপণ দাবি করে এবং এক পর্যায়ে ইব্রাহিমকে ছেড়ে দেয়। বর্ণিত বিষয়টি এজাহার নামীয় আসামীরা প্রকাশ না করে তাহাদের মধ্যে ভিকটিমের প্রতি ক্ষোভের বহি প্রকাশ ঘটে। পূর্ব পরিকল্পনা মতে এজাহার নামীয় আসামী রোহিঙ্গা ইছাক (৩০), ও তদন্তে প্রাপ্ত আসামী নুর হোসেন প্রকাশ কালা ডাক্তার (২৪), এজাহার নামীয় রোহিঙ্গা মোঃ আনাস প্রকাশ আনিস (২৫), এজাহার বর্হিভূত আসামী নুরুল আমিন (৪০), জলিল (৩৫) এবং বারা প্রকাশ বুড়া ভিকটিমকে ক্লাস্টার নং-৫৫ এর সামনে পাকা রাস্তার উপর পাইয়া হত্যার উদ্দেশ্যে লাঠি, দা দিয়ে গুরুতর জখম করিয়া মৃত্যু নিশ্চিত করার জন্য পায়ে রশি বাঁধিয়া ক্লাস্টার নং- ৫৫ এর সামনে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে আসামীরা পালিয়ে যায় মর্মে ধৃত আসামীদ্বয় স্বীকার করে। হত্যাকান্ডে ব্যবহৃত ০১ (এক) টি রশি উদ্ধার পূর্বক জব্দ করা হয়েছে । ঐদিন ভিকটিমকে পুলিশ ও এপিবিএন সংবাদ পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থল হইতে মুর্মূষু অবস্থায় উদ্ধার করিয়া ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে চিকিৎসাধীণ অবস্থায় ভিকটিম মৃত্যবরণ করে। মামলাটি তদন্ত অব্যহত আছে এবং গ্রেফতারকৃত আসামীদের দেওয়া তথ্য মতে অপরাপর পলাতক আসামীদের গ্রেফতারের লক্ষ্যে অভিযান চলমান। প্রাথমিক তদন্তকালে এজাহারনামীয় আসামীরা ও এজাহার বর্হিভূত আসামীরা পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ক্ষোভের আক্রোশে ভিকটিমকে ঘটনার দিন হত্যা করে মর্মে প্রাথমিকভাবে প্রতীয়মান হয়।
প্রকাশ থাকে যে, গত ০২ জুলাই তারিখ বাদী রোহিঙ্গা সিরাজুল ইসলাম (৪২), পিতা- মৃত ইমাম হোসেন, মাতা- মৃত আসমা খাতুন, ক্লাস্টার- ১১, রুম নং- বি/১১-১২, এফসিএন নং- ২৩০৫৪৯, ভাসানচর আশ্রয়ন-০৩ প্রকল্প, থানা- ভাসানচর, জেলা- নোয়াখালী থানায় হাজির হইয়া এজাহার দায়ের করেন যে, বাদীর ভাই ভিকটিম মৃত সায়েদুল ইসলাম (৩০) তাহার প্রথম স্ত্রী হোসনে আরা (২৫) এর ক্লাস্টার-৫৩ (বাসা) হইতে রাত ০১:৩০ ঘটিকার সময় তাহার দ্বিতীয় স্ত্রী সাজিদা (২৬) এর ক্লাস্টার-৫৬ (বাসায়) যাওয়ার সময় ক্লাস্টার- ৫৫ এর সামনে উৎপেতে থাকা আসামীগণ আনুমানিক রাত ০২.৩০ হইতে ০৩ঃ৩০ ঘটিকার মধ্যে যে কোন সময় ভাসানচর আশ্রয়ন প্রকল্প -০৩ এর ক্লাস্টার নং- ৫৫ এর সি হাউজ এর সামনে পাকা রাস্তার উপর বাদীর ভাই ভিকটিম সায়েদুল ইসলাম (৩০) কে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে ১। রোহিঙ্গা ইছাক (৩০), ২। রোহিঙ্গা মোঃ আনাস প্রকাশ আনিস (২৫), ৩। রোহিঙ্গা মোঃ ইব্রাহিম (২৬), ৪। রোহিঙ্গা মোঃ আয়ুব (৪০), সহ আরো অজ্ঞাতনামা ০৮/১০ জন একই উদ্দেশ্যে বাদীর ভাই ভিকটিম সায়েদুল ইসলাম (৩০) ধারালো দা দিয়ে মাথায় গুরুতর জখম করিয়া এবং শরীরের বিভিন্ন স্থানে এলোপাতারি মারধর করিয়া ক্লাস্টার- ৫৫ এর সি হাউজের সামনের রাস্তার উপর বাদীর ভাই ভিকটিম মৃত সায়েদুল ইসলাম (৩০) কে রশি দিয়ে দুই পা বাধা রক্তাক্ত অবস্থায় ফেলে যাওয়ার সময় তাহার চিৎকার শুনতে পাইয়া আশপাশের রোহিঙ্গারা আসতে থাকিলে বর্ণিত আসামীগন ঘটনাস্থল হইতে পালিয়ে যায়। পরবর্তীতে এপিবিএন ও ভাসানচর থানা পুলিশ রাত সাড়ে ৩ঘটিকায় সংবাদ প্রাপ্ত হইয়া ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয় এবং রোহিঙ্গাদের সহায়তায় বাদীর ভাই ভিকটিম সায়েদুল ইসলাম (৩০) কে চিকিৎসার জন্য দ্রুত ভাসানচর ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে নিয়ে গেলে হাসপাতালে চিকিৎসাধীণ থাকা অবস্থায় বাদীর ভাই মৃত্যুবরণ করে।
নোয়াখালী জেলা পুলিশ সুপার (এসপি) মোঃ শহীদুল ইসলাম, পিপিএম (বার) জানান, গ্রেফতারকৃত আসামীদের কে আদালতে প্রেরণ প্রক্রিয়াধীন।
প্রিন্ট