ঝিনাইদহের হাটবাজারগুলোতে উঠতে শুরু করেছে নতুন হালি পেঁয়াজ। তবে এক সপ্তাহের ব্যবধানে মনপ্রতি দাম কমেছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। এতে কৃষকরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। কৃষকদের দাবি, পেঁয়াজ ওঠার মৌসুমে যেন বিদেশ থেকে আমদানি বন্ধ করা হয়। তা না হলে আরও দরপতনে তাদের লোকসান হবে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ঝিনাইদহ জেলা অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি রবি মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ১০ হাজার ৪৭২ হেক্টর জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। তার মধ্যে শৈলকুপা উপজেলায়ই ৭ হাজার ৮৯০ হেক্টরে চাষ হয়েছে। শৈলকুপা উপজেলা দেশের মধ্যে অন্যতম পেঁয়াজ উৎপাদনকারী এলাকা। গত বছর এ উপজেলায় ৬ হাজার ৭৮০ হেক্টরে পেঁয়াজ চাষ হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছিল ১ লাখ ২২ হাজার টন পেঁয়াজ। পর পর দুই বছর পেঁয়াজের চড়া দাম পেয়ে জেলার কৃষকরা পেঁয়াজ চাষে ঝুঁকেছে।
শৈলকুপার দামুকদিয়া গ্রামের প্রকৌশলী এইচ এম আসাদুজ্জামান জানান, করোনার কারণে চাকরি ছেড়ে বাড়িতে এসে চাষাবাদ শুরু করেছেন। ১৪ বিঘা জমিতে পেঁয়াজ চাষ করেছেন। লালতীর হাইব্রিড চাষে বিঘাতে ফলন হচ্ছে ১২০ মণ, লাল তীর কিং বিঘাপ্রতি ৮০ মণ এবং তাহেরপুরি জাতের ফলন পেয়েছেন ৭০ মণ করে। বাজারে প্রতি মণ ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ৪০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করেছেন। নাগপাড়া গ্রামের চাষি সেলিম মন্ডল বলেন, হাইব্রিড পেঁয়াজ ১২০ মণ পর্যন্ত ফলন হচ্ছে। কয়েক দিন পর ভরা মৌসুম শুরু হবে। এ সময় বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আমদানি করলে দরপতন হবে। এতে কৃষক লোকসানে পড়বে।
এদিকে গত মঙ্গলবার শৈলকুপার হাটে প্রচুর পেঁয়াজ ওঠে। আর প্রতি মণ ১ হাজার ১০০ থেকে ১ হাজার ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হয় বলে ব্যবসায়ী মশিউর রহমান জানান। শৈলকুপা হাটে পেঁয়াজের দাম মনপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা কমেছে। প্রতি মণ পেঁয়াজ ৯০০ থেকে ১ হাজার ৫০ টাকা দরে বিক্রি হয়।
পাইকপাড়া গ্রামের চাষি আকমল হোসেন বলেন, এ সময় ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানির কারণে দাম কমেছে। দাম আরও কমলে কৃষকের লোকসান হবে। ঝিনাইদহ জেলার অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, গত বছরের চেয়ে এবার ১ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে পেঁয়াজ চাষ হয়েছে। ফলনও ভালো হচ্ছে। তবে তিনি বলেন, এ সময় বিদেশ থেকে পেঁয়াজ আনলে দাম পড়ে যাবে।
প্রিন্ট