ঢাকা , বুধবার, ১৫ মে ২০২৪, ১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ভেড়ামারায় ৭০০ টাকা কেজি! কমছে না মরিচের দাম

টানা বর্ষণে নষ্ট হওয়া ও ঈদের ছুটিতে সরবরাহ বন্ধের কারণ দেখিয়ে ৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৭০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়।

বেশ কিছুদিন ধরেই লাগামহীন দেশের কাঁচা মরিচের বাজার। এতে বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ২৫ জুন সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়। তবুও কমছে না মরিচের দাম।

চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমের অজুহাতে ভেড়ামারাতে আবারও ২দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে তিনগুন হয়েছে। ২দিন আগেও মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল তা এখন বেড়ে ৭০০ টাকা দাঁড়িয়েছে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

রবিবার ( ২ জুলাই ) সকালে সরেজমিন ভেড়ামারা কলেজ বাজার,পৌর মাকের্ট এ কাঁচা বাজার গুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের অধিকাংশ দোকানেই কাঁচা মরিচ মিলছে না। দু-একটি দোকানে অল্প পরিমাণে কাঁচা মরিচ বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। বাড়তি দামের কারণে দোকানিরা কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন না। তেমনি ক্রেতাদেরও কাঁচা মরিচ কেনা থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।

মরিচ চাষি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এপ্রিল ও মে মাসে খরার পর হঠাৎ অতিবৃষ্টিতে বেশির ভাগ মরিচগাছ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে অধিকাংশ গাছে ফলন নেই বললেই চলে। এর ওপর টানা বৃষ্টিতে মরিচ সংগ্রহের কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত যশোর, পাবনা সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলাতেও কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

কলেজ বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা ফারাকপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাজারে কাঁচা মরিচের যে ঝাঁঝ তাতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। কাঁচা মরিচের দামে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যেভাবে পারছে দাম বাড়িয়েই চলছে। ঈদের আগে যে কাঁচা মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে গেলাম, ঈদের পরদিন তার দাম বেড়ে তিনগুন হয়ে গেছে। বর্তমানে ৭০০ টাকা কেজি দরে ভেড়ামারায় কাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আসা বিনা আক্তার বলেন, একে তো নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়ছে। আমাদের মতো মানুষের সংসার চালাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। আগে যেখানে কাঁচা মরিচ এক কেজি বা হাফ কেজি কিনতাম, এখন তা দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে ১২৫ গ্রাম কিনছি। তারপরেও চিন্তায় আছি, দাম বাড়তে থাকলে হয়তো খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।

ভেড়ামারা পৌর বাজারের সবজি বিক্রেতা লিটন বলেন আমদানি বন্ধ থাকলেও দেশি কাঁচা মরিচ দিয়েই দেশের বাজারে সাধারণ মানুষের চাহিদা মিটছিল। কাঁচা মরিচের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মধ্যেই ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে চলা অতিরিক্ত গরমের কারণে পানি উঠায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার শুরু ঝড়-বৃষ্টি। বাজারে কাঁচা মরিচের যে চাহিদা সেই তুলনায় সরবরাহ কমের কারণেই দাম বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, মোকামে প্রায় প্রতিদিনই কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে। আমরা যখন যে দামে কিনছি সেই মোতাবেক বাজারে বিক্রি করছি। আমরা ঈদের আগে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজিতে কিনে বাজারে বিক্রি করেছিলাম ২৪০থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। আজ সেই কাঁচা মরিচ মোকামেই ৬৫০ টাকা কেজি পড়লো। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। নষ্টসহ অন্যান্য কিছু মিলিয়ে ৭০০টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি।

 

 

তবে আবহাওয়া ভালো হলে কাঁচা মরিচের সরবরাহ যদি বাড়ে সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কমতে পারে। এছাড়া ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হলেও এর প্রভাব পড়েনি বাজারে। এ দিকে মরিচের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শসা ও টমেটোর দাম।

Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

error: Content is protected !!

ভেড়ামারায় ৭০০ টাকা কেজি! কমছে না মরিচের দাম

আপডেট টাইম : ০৭:২২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ জুলাই ২০২৩

টানা বর্ষণে নষ্ট হওয়া ও ঈদের ছুটিতে সরবরাহ বন্ধের কারণ দেখিয়ে ৫০ টাকা কেজির কাঁচা মরিচ ৭০০টাকায় বিক্রি হচ্ছে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায়।

বেশ কিছুদিন ধরেই লাগামহীন দেশের কাঁচা মরিচের বাজার। এতে বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ২৫ জুন সরকার কাঁচা মরিচ আমদানির অনুমতি দেয়। তবুও কমছে না মরিচের দাম।

চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কমের অজুহাতে ভেড়ামারাতে আবারও ২দিনের ব্যবধানে কাঁচা মরিচের দাম বেড়ে তিনগুন হয়েছে। ২দিন আগেও মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল তা এখন বেড়ে ৭০০ টাকা দাঁড়িয়েছে। এদিকে কাঁচা মরিচের দাম বাড়ায় বিপাকে পড়েছেন নিম্ন আয়ের মানুষজন। সরবরাহ বাড়লে দাম কমে আসবে বলেও জানিয়েছেন বিক্রেতারা।

রবিবার ( ২ জুলাই ) সকালে সরেজমিন ভেড়ামারা কলেজ বাজার,পৌর মাকের্ট এ কাঁচা বাজার গুলো ঘুরে দেখা গেছে, বাজারের অধিকাংশ দোকানেই কাঁচা মরিচ মিলছে না। দু-একটি দোকানে অল্প পরিমাণে কাঁচা মরিচ বিক্রির জন্য রাখা হয়েছে। বাড়তি দামের কারণে দোকানিরা কাঁচা মরিচ বিক্রি করছেন না। তেমনি ক্রেতাদেরও কাঁচা মরিচ কেনা থেকে বিরত থাকতে দেখা গেছে।

মরিচ চাষি ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য বলছে, এপ্রিল ও মে মাসে খরার পর হঠাৎ অতিবৃষ্টিতে বেশির ভাগ মরিচগাছ মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সে কারণে অধিকাংশ গাছে ফলন নেই বললেই চলে। এর ওপর টানা বৃষ্টিতে মরিচ সংগ্রহের কাজটি কঠিন হয়ে পড়েছে। ফলে মরিচ উৎপাদনের এলাকা হিসেবে পরিচিত যশোর, পাবনা সাঁথিয়া ও বেড়া উপজেলাতেও কাঁচা মরিচের দাম আকাশ ছুঁয়েছে।

কলেজ বাজারে কাঁচা মরিচ কিনতে আসা ফারাকপুর গ্রামের আব্দুর রাজ্জাক বলেন, বাজারে কাঁচা মরিচের যে ঝাঁঝ তাতে হাত দেওয়া যাচ্ছে না। কাঁচা মরিচের দামে কোনও নিয়ন্ত্রণ নেই। যে যেভাবে পারছে দাম বাড়িয়েই চলছে। ঈদের আগে যে কাঁচা মরিচ ২৫০ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে গেলাম, ঈদের পরদিন তার দাম বেড়ে তিনগুন হয়ে গেছে। বর্তমানে ৭০০ টাকা কেজি দরে ভেড়ামারায় কাচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে।

বাজারে আসা বিনা আক্তার বলেন, একে তো নিত্যপ্রয়োজনীয় সব পণ্যের দাম বাড়ছে। আমাদের মতো মানুষের সংসার চালাতে গিয়ে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে। আগে যেখানে কাঁচা মরিচ এক কেজি বা হাফ কেজি কিনতাম, এখন তা দুঃস্বপ্ন হয়ে গেছে। বর্তমানে ১২৫ গ্রাম কিনছি। তারপরেও চিন্তায় আছি, দাম বাড়তে থাকলে হয়তো খাওয়া ছেড়ে দিতে হবে।

ভেড়ামারা পৌর বাজারের সবজি বিক্রেতা লিটন বলেন আমদানি বন্ধ থাকলেও দেশি কাঁচা মরিচ দিয়েই দেশের বাজারে সাধারণ মানুষের চাহিদা মিটছিল। কাঁচা মরিচের দাম সাধারণ মানুষের হাতের নাগালের মধ্যেই ছিল। কিন্তু গত কয়েক দিন ধরে চলা অতিরিক্ত গরমের কারণে পানি উঠায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে কাঁচা মরিচের ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। এখন আবার শুরু ঝড়-বৃষ্টি। বাজারে কাঁচা মরিচের যে চাহিদা সেই তুলনায় সরবরাহ কমের কারণেই দাম বাড়ছে।

তিনি আরও বলেন, মোকামে প্রায় প্রতিদিনই কাঁচা মরিচের দাম বাড়ছে। আমরা যখন যে দামে কিনছি সেই মোতাবেক বাজারে বিক্রি করছি। আমরা ঈদের আগে কাঁচা মরিচ ২০০ টাকা কেজিতে কিনে বাজারে বিক্রি করেছিলাম ২৪০থেকে ২৫০ টাকা কেজি দরে। আজ সেই কাঁচা মরিচ মোকামেই ৬৫০ টাকা কেজি পড়লো। এর সঙ্গে পরিবহন খরচ রয়েছে। নষ্টসহ অন্যান্য কিছু মিলিয়ে ৭০০টাকা কেজি দরে কাঁচা মরিচ বিক্রি করছি।

 

 

তবে আবহাওয়া ভালো হলে কাঁচা মরিচের সরবরাহ যদি বাড়ে সেক্ষেত্রে দাম কিছুটা কমতে পারে। এছাড়া ভারত থেকে কাঁচা মরিচ আমদানি শুরু হলেও এর প্রভাব পড়েনি বাজারে। এ দিকে মরিচের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শসা ও টমেটোর দাম।