ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২১ নভেম্বর ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
প্রতিনিধি নিয়োগ
দৈনিক সময়ের প্রত্যাশা পত্রিকার জন্য সারা দেশে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে প্রতিনিধি নিয়োগ করা হচ্ছে। আপনি আপনার এলাকায় সাংবাদিকতা পেশায় আগ্রহী হলে যোগাযোগ করুন।

ঈদে ঘুরে আসুন নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী

ভ্রমণের জন্য দ্বীপের মতো চমৎকার জায়গা খুব কমই আছে। মূলভূমি থেকে দূরে চারদিক কেবলই পানিতে ঘেরা, প্রকৃতি ও জীবনযাত্রার স্বকীয়তায় অনন্য দ্বীপ ‘নিঝুম দ্বীপ’। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর মনোরম দৃশ্যে ভরপুর নিঝুম দ্বীপই যেন নিজ মোহজালে কাছে টানে পর্যটকদের। সেই নিঝুম দ্বীপের সৌন্দর্য পুরো নোয়াখালীর পরিচয় তুলে ধরার কারণে জেলার ব্র্যান্ড করা হয়েছে ‘নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী’। নিঝুম দ্বীপ ছাড়াও বহু গুণী ব্যক্তির জন্মস্থান নোয়াখালীতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। ‘আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী রয়েল ডিস্টিক্ট ভাই। ফেনী, মাইজদী, চৌমুহনীর নাম কে হুনে নাই?’ হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ পর্যটনের মূল, নোয়াখালী না আসিয়া করিও না ভুল।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে অন্যতম জেলা নোয়াখালী। নোয়াখালী জেলার পূর্ব নাম ছিল ‘ভুলুয়া’। ইতিহাসবিদদের মতে একবার ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভয়াবহভাবে প্লাাবিত হয় ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ১৬৬০ সালে একটি বিশাল খাল খনন করা হয়, যা পানির প্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী থেকে রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল খালকে নোয়াখালীর ভাষায় ‘নোয়া (যার শাব্দিক অর্থ নতুন) এবং খাল’ বলা হতো। এর ফলে অঞ্চলটি একসময় নোয়াখালী হিসেবে মানুষের মুখে উচ্চারিত হতে থাকে। এক সময় নোয়াখালী, ল²ীপুর এবং ফেনী মহকুমা নিয়ে বিশাল এক জেলা ছিল ‘নোয়াখালী’। তারপর ল²ীপুর ও ফেনী আলাদা জেলা হিসেবে রূপ লাভ করে।
নোয়াখালী জেলার মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধের রণক্ষেত্রে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নোয়াখালী জেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। এ জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। মৎস্য চাষ আর মৎস্য আহরণ মূলত প্রধান পেশা। নোয়াখালীতে রয়েছে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক স্থান। এসব স্থানে ভ্রমণ করলে অনেকেরই মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। নদীর মিতালী, দ্বীপ, বনাঞ্চল আর চর-ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মনের খোরাক জোটাতে বদ্ধপরিকর।
নিঝুম দ্বীপ : নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট দ্বীপ হলেও এর সৌন্দর্য ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মনে দোলা দিয়ে যায়। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত নিঝুম দ্বীপ। এটি দ্বীপ বলে আখ্যায়িত হলেও মূলত এটি একটি ‘চর’। নিঝুম দ্বীপের নাম আগে ছিল ‘চর-ওসমান’। নিঝুম দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখতে পর্যটকরা প্রতিনিয়তই সেখানে ভিড় জমান। নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের জন্য রয়েছে কয়েকটি রিসোর্ট। সেখানে রয়েছে সাপ্লাই পানি এবং জেনারেটর। খাবারের জন্য রয়েছে স্থানীয় হোটেল। নিঝুম দ্বীপের মূল আকর্ষণ চিত্রা হরিণ। রয়েছে মহিষ ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এছাড়া শীতের সময় বিপুল পরিমাণ অতিথি পাখির মেলা বসে এই দ্বীপটিতে। দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুরো জেলার পরিচিতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। তাই দ্বীপটির নামে জেলার নামকরণ করা হয়েছে ‘নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী’।
কিভাবে যাবেন নিঝুম দ্বীপে : ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী, কমলাপুর থেকে সোনাপুরগামী বাসে যেতে হবে সোনাপুর। ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় চেয়ারম্যানঘাট। এরপর ট্রলারে চেপে যেতে হবে নলচিরা ঘাট। এরপরই নিঝুম দ্বীপ ঘাট থেকে নামার বাজার (নিঝুম দ্বীপ)। সময়ের বিবর্তনে যাতায়াতে ভাড়ার তারতম্য থাকতে পারে। তাই যাতায়াতে ভাড়া দর করে নিন। এখন বর্ষার মৌসুম, তাই নিঝুম দ্বীপে এখন যেতে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গান্ধী আশ্রম : গান্ধী আশ্রম নোয়াখালীর একটি দর্শনীয় স্থান । স্থানটি দেখতে পর্যটকের ভিড় পড়ে যায় প্রায় সময়। নোয়াখালী জেলার মাইজদী কোর্ট থেকে প্রায় ২৫ কিমি. উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলায় অবস্থিত গান্ধী আশ্রম। তৎকালীন জমিদার হেমন্ত কুমার ঘোষের বাড়িতে ওই গান্ধী আশ্রমটি স্থাপিত হয়। বর্তমানে গান্ধী আশ্রম একটি সেবামূলক সংগঠন হিসেবে নোয়াখালীসহ দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস উপার্জন করেছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের শেষ ভাগে সারা ভারতবর্ষে সা¤প্রদায়িক বিবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে। তখন পশ্চিমবঙ্গের সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার প্রভাব বাংলা দেশের নোয়াখালীতে ও দেখা দেয়। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ তাণ্ডবলীলা চলতে থাকে নোয়াখালীতে। তখন শান্তি মিশনের অগ্রদূত হয়ে নোয়াখালীতে আসেন মহত্মা গান্ধী। একপর্যায় ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ গ্রামে, জেলার প্রথম ব্যারিস্টার হেমন্তকুমার ঘোষ জনকল্যাণে মহাত্মা গান্ধীর নামে দান করেন। সে থেকে এটি গান্ধী আশ্রম নামেই পরিচিত। নোয়াখালী জেলায় আরো রয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এসব দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা মন কেড়ে নেয় দর্শনার্থীদের।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখিয়ে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নৌ-বাহিনীর আর্টিফিসার শহীদ রুহুল আমিনের স্মৃতিকে আগলে রেখে নির্মিত হয় শহীদ মো. রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিল, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ও শহীদ ব্যক্তিত্ব সার্জেন্ট জহুরুল হক, নিউক্লিয়াস প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান এর জন্মস্থানও নোয়াখালী।
ড্রিী ওয়ার্ল্ড পার্ক, শহীদ মিনার নোয়াখালী, জেলা জামে মসজিদ নোয়াখালী, বজড়া শাহী মসজিদ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, মূছাপুর ক্লোজার, বেগমগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর, স্বর্ণদ্বীপের মতো পর্যটনের স্থান রয়েছে নোয়াখালীতে। রয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববদ্যিালয়। জেলার সোনাপুরে ১০১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাই নোয়াখালী আসুন, এই পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে নোয়াখালীর চিত্তাকর্ষক স্থাপনাগুলো ভ্রমণ করে মনের প্রশান্তি দূর করুন।

প্রিন্ট
Tag :
এই অথরের আরো সংবাদ দেখুন

জনপ্রিয় সংবাদ
error: Content is protected !!

ঈদে ঘুরে আসুন নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী

আপডেট টাইম : ০২:৪৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৮ জুন ২০২৩
হানিফ উদ্দিন সাকিব, হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি :
ভ্রমণের জন্য দ্বীপের মতো চমৎকার জায়গা খুব কমই আছে। মূলভূমি থেকে দূরে চারদিক কেবলই পানিতে ঘেরা, প্রকৃতি ও জীবনযাত্রার স্বকীয়তায় অনন্য দ্বীপ ‘নিঝুম দ্বীপ’। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য আর মনোরম দৃশ্যে ভরপুর নিঝুম দ্বীপই যেন নিজ মোহজালে কাছে টানে পর্যটকদের। সেই নিঝুম দ্বীপের সৌন্দর্য পুরো নোয়াখালীর পরিচয় তুলে ধরার কারণে জেলার ব্র্যান্ড করা হয়েছে ‘নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী’। নিঝুম দ্বীপ ছাড়াও বহু গুণী ব্যক্তির জন্মস্থান নোয়াখালীতে রয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। ‘আঙ্গো বাড়ি নোয়াখালী রয়েল ডিস্টিক্ট ভাই। ফেনী, মাইজদী, চৌমুহনীর নাম কে হুনে নাই?’ হাতিয়ার নিঝুম দ্বীপ পর্যটনের মূল, নোয়াখালী না আসিয়া করিও না ভুল।
বাংলাদেশের ৬৪ জেলার মধ্যে অন্যতম জেলা নোয়াখালী। নোয়াখালী জেলার পূর্ব নাম ছিল ‘ভুলুয়া’। ইতিহাসবিদদের মতে একবার ত্রিপুরার পাহাড় থেকে প্রবাহিত ডাকাতিয়া নদীর পানিতে ভুলুয়ার উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভয়াবহভাবে প্লাাবিত হয় ও ফসলি জমির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়। এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণের জন্য ১৬৬০ সালে একটি বিশাল খাল খনন করা হয়, যা পানির প্রবাহকে ডাকাতিয়া নদী থেকে রামগঞ্জ, সোনাইমুড়ী ও চৌমুহনী হয়ে মেঘনা এবং ফেনী নদীর দিকে প্রবাহিত করে। এই বিশাল খালকে নোয়াখালীর ভাষায় ‘নোয়া (যার শাব্দিক অর্থ নতুন) এবং খাল’ বলা হতো। এর ফলে অঞ্চলটি একসময় নোয়াখালী হিসেবে মানুষের মুখে উচ্চারিত হতে থাকে। এক সময় নোয়াখালী, ল²ীপুর এবং ফেনী মহকুমা নিয়ে বিশাল এক জেলা ছিল ‘নোয়াখালী’। তারপর ল²ীপুর ও ফেনী আলাদা জেলা হিসেবে রূপ লাভ করে।
নোয়াখালী জেলার মানুষ মহান মুক্তিযুদ্ধের রণক্ষেত্রে পাকিস্তানি সেনাদের বিরুদ্ধে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। নোয়াখালী জেলার বেশির ভাগ মানুষ কৃষি কাজের সঙ্গে জড়িত। এ জেলার অর্থনীতি কৃষিনির্ভর। মৎস্য চাষ আর মৎস্য আহরণ মূলত প্রধান পেশা। নোয়াখালীতে রয়েছে অনেকগুলো চিত্তাকর্ষক স্থান। এসব স্থানে ভ্রমণ করলে অনেকেরই মন ভালো হয়ে যাওয়ার কথা। নদীর মিতালী, দ্বীপ, বনাঞ্চল আর চর-ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মনের খোরাক জোটাতে বদ্ধপরিকর।
নিঝুম দ্বীপ : নিঝুম দ্বীপ বাংলাদেশের একটি ছোট দ্বীপ হলেও এর সৌন্দর্য ভ্রমণপিয়াসী মানুষের মনে দোলা দিয়ে যায়। নোয়াখালী জেলার হাতিয়া উপজেলার অন্তর্গত নিঝুম দ্বীপ। এটি দ্বীপ বলে আখ্যায়িত হলেও মূলত এটি একটি ‘চর’। নিঝুম দ্বীপের নাম আগে ছিল ‘চর-ওসমান’। নিঝুম দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য দেখতে পর্যটকরা প্রতিনিয়তই সেখানে ভিড় জমান। নিঝুম দ্বীপে পর্যটকদের জন্য রয়েছে কয়েকটি রিসোর্ট। সেখানে রয়েছে সাপ্লাই পানি এবং জেনারেটর। খাবারের জন্য রয়েছে স্থানীয় হোটেল। নিঝুম দ্বীপের মূল আকর্ষণ চিত্রা হরিণ। রয়েছে মহিষ ও বিভিন্ন প্রজাতির পাখি। এছাড়া শীতের সময় বিপুল পরিমাণ অতিথি পাখির মেলা বসে এই দ্বীপটিতে। দ্বীপের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য পুরো জেলার পরিচিতি তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছে। তাই দ্বীপটির নামে জেলার নামকরণ করা হয়েছে ‘নিঝুম দ্বীপের দেশ নোয়াখালী’।
কিভাবে যাবেন নিঝুম দ্বীপে : ঢাকার সায়েদাবাদ, মহাখালী, কমলাপুর থেকে সোনাপুরগামী বাসে যেতে হবে সোনাপুর। ভাড়া ৫০০-৫৫০ টাকা। সেখান থেকে সিএনজি অটোরিক্সায় চেয়ারম্যানঘাট। এরপর ট্রলারে চেপে যেতে হবে নলচিরা ঘাট। এরপরই নিঝুম দ্বীপ ঘাট থেকে নামার বাজার (নিঝুম দ্বীপ)। সময়ের বিবর্তনে যাতায়াতে ভাড়ার তারতম্য থাকতে পারে। তাই যাতায়াতে ভাড়া দর করে নিন। এখন বর্ষার মৌসুম, তাই নিঝুম দ্বীপে এখন যেতে একটু সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
গান্ধী আশ্রম : গান্ধী আশ্রম নোয়াখালীর একটি দর্শনীয় স্থান । স্থানটি দেখতে পর্যটকের ভিড় পড়ে যায় প্রায় সময়। নোয়াখালী জেলার মাইজদী কোর্ট থেকে প্রায় ২৫ কিমি. উত্তরে সোনাইমুড়ী উপজেলায় অবস্থিত গান্ধী আশ্রম। তৎকালীন জমিদার হেমন্ত কুমার ঘোষের বাড়িতে ওই গান্ধী আশ্রমটি স্থাপিত হয়। বর্তমানে গান্ধী আশ্রম একটি সেবামূলক সংগঠন হিসেবে নোয়াখালীসহ দেশের মানুষের আস্থা ও বিশ্বাস উপার্জন করেছে।
ইতিহাস থেকে জানা যায়, ১৯৪৬ সালের শেষ ভাগে সারা ভারতবর্ষে সা¤প্রদায়িক বিবাষ্প ছড়িয়ে পড়ে। তখন পশ্চিমবঙ্গের সা¤প্রদায়িক দাঙ্গার প্রভাব বাংলা দেশের নোয়াখালীতে ও দেখা দেয়। ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেয়াসহ তাণ্ডবলীলা চলতে থাকে নোয়াখালীতে। তখন শান্তি মিশনের অগ্রদূত হয়ে নোয়াখালীতে আসেন মহত্মা গান্ধী। একপর্যায় ১৯৪৭ সালের ২৯ জানুয়ারি তিনি সোনাইমুড়ী উপজেলার জয়াগ গ্রামে, জেলার প্রথম ব্যারিস্টার হেমন্তকুমার ঘোষ জনকল্যাণে মহাত্মা গান্ধীর নামে দান করেন। সে থেকে এটি গান্ধী আশ্রম নামেই পরিচিত। নোয়াখালী জেলায় আরো রয়েছে দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। এসব দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা মন কেড়ে নেয় দর্শনার্থীদের।
বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে অসামান্য বীরত্ব দেখিয়ে দেশের সর্বোচ্চ সম্মান বীরশ্রেষ্ঠ উপাধিতে ভূষিত হওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধা নৌ-বাহিনীর আর্টিফিসার শহীদ রুহুল আমিনের স্মৃতিকে আগলে রেখে নির্মিত হয় শহীদ মো. রুহুল আমিন গ্রন্থাগার ও স্মৃতি জাদুঘর। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি জাতীয় নেতা আবদুল মালেক উকিল, আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলার অন্যতম আসামী ও শহীদ ব্যক্তিত্ব সার্জেন্ট জহুরুল হক, নিউক্লিয়াস প্রতিষ্ঠাতা সিরাজুল আলম খান এর জন্মস্থানও নোয়াখালী।
ড্রিী ওয়ার্ল্ড পার্ক, শহীদ মিনার নোয়াখালী, জেলা জামে মসজিদ নোয়াখালী, বজড়া শাহী মসজিদ, শহীদ ভুলু স্টেডিয়াম, মূছাপুর ক্লোজার, বেগমগঞ্জ মুক্তিযুদ্ধের জাদুঘর, স্বর্ণদ্বীপের মতো পর্যটনের স্থান রয়েছে নোয়াখালীতে। রয়েছে নোয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববদ্যিালয়। জেলার সোনাপুরে ১০১ একর জমির ওপর প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়টি। তাই নোয়াখালী আসুন, এই পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটিতে নোয়াখালীর চিত্তাকর্ষক স্থাপনাগুলো ভ্রমণ করে মনের প্রশান্তি দূর করুন।

প্রিন্ট