হাতিয়ায় পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে কোরবানির পশু জবাই ও গোশ্ত কাটার হাতিয়ার তৈরি ও মেরামতের কর্মব্যস্ততা বেড়েছে। এখানকার কামারের দোকানগুলোতে সারাদিন টুং-টাং শব্দ বিরাজ করছে।এখানে কোরবানির ঈদে ছুরি, দা, কুড়াল তৈরি ও মেরামতের কাজে ব্যস্ত থাকছে কামাররা।অন্যান্য স্থানের সঙ্গে কামারদের এ কর্মব্যস্ততা দেখা গেছে, হাতিয়া উপজেলার জাহাজমারা বাজার, চরচেঙ্গা বাজার, মাইজদী বাজার, সাগরিয়া বাজারে, চৌহমুনী বাজার, তমরদ্দি বাজার, খাসের বাজার, আফাজিয়া বাজার, ওছখালী বাজার । এসব বাজারের গুলোর মধ্যে কামারের দোকানে দেখা গেছে কর্মব্যস্ততা।
দেখা গেছে, কামারের দোকানে কেউ কাঠের কয়লায় আগুন দিয়ে সেই আগুনে লোহা গলাতে ভাতি টানছেন। আবার কেউ গলে যাওয়া লোহায় বাড়ি দিয়ে হাতিয়ার তৈরির উপযোগী করছেন। কেউবা কোরবানির পশু জবাই করার ছুরি ধার করছেন।এখানে কোরবানির পশু জবাই ও গোশ্ত কাটার ব্যবহৃত হাতিয়ারগুলোর মধ্যে রয়েছে বড় ছুরি, চামড়া সরানোর জন্য ছোট ছুরি, গোশ্ত কাটতে বঁটি, হাড্ডি কাটার ছোট-বড় দা ও কুড়াল। একটি হাতিয়ার তৈরি করতে লোহা অনুযায়ী দাম নেওয়া হচ্ছে।
পাকা লোহার তৈরি হাতিয়ার ধারালো হওয়ায় এ লোহা থেকে তৈরি ছুরি, দা বা কুড়ালের আকারভেদে ১০০, ২৫০, ৫০০, ১০০০ এমনকি ১ হাজার ৫,০০০ টাকা পর্যন্ত মূল্য নেওয়া হচ্ছে। তবে একটি পুরাতন হাতিয়ার মেরামত ও ধারালো করতে নেওয়া হচ্ছে ৭০ থেকে ১০০ টাকা করে।স্থানীয় মসজিদের ইমাম হাফেজ আলহাজ্ব ইব্রাহীম খলিল জানান, ছুরি দিয়ে কোরবানির পশু জবাই করার সময় অসাবধানতাবশত ছুরি হাড়ে লাগাই। এতে ছুরির ধারালো অংশটি ভেঙে বা বেঁকে যায়। এটি মেরামতের জন্য আমাদের কামারদের শরণাপন্ন হতে হয়। এ সময়ে তারাই আমাদের ভরসা।
অপর ইমাম আব্দুল রহমান জানান, আমাদেরকে কোরবানির পশু জবাই করার জন্য ধারালো ছুরি ব্যবহার করতে হয়। কোরবানির ঈদের আগে অনেক সময় ছুরির মুখ কান্দে নিতে অর্থাৎ আরও ধারালো করতে কামারের কাছে যেতে হয়। আমাদের এ কাজ করতে আমরা কামারদেরকে উপযুক্ত পারিশ্রমিক দেই।
ওছখালী পৌর বাজারে কামার বিধান মজুমদার জানান, কামারের ব্যবসা আগের মতো নেই। এখন কাঠের কয়লার দাম বেড়ে যাওয়ায় হাতিয়ার তৈরিতে ও মেরামত তেমন লাভ হচ্ছে না। তবে কোরবানির ঈদে আমরা গ্রাহক তুলনামূলক বেশি পাচ্ছি। এতে হাতিয়ার তৈরি ও মেরামতে খরচ বেড়ছে।
চৌহমুনী বাজারে কামার বিকাশ চন্দ্র মজুমদার জানান, কলেজ পর্যায়ে লেখাপড়া করে বাপ-দাদার কামারি ব্যবসায় মনোনিবেশ করেছি। এ ব্যবসা থেকে বাবা, মাসহ ৫ সদস্যের ভরণপোষণ করছি। পবিত্র ঈদুল আজহা সামনে রেখে তার দোকানে কর্মব্যস্ততা বেড়েছে।
হাতিয়া উপজেলার চরচেঙ্গা বাজারে দা-ছোরা কিনতে আসা দেলোয়ার বলেন, কোরবানি ঈদে পশু জবাই ও মাংস কাটার জন্য একটা দা ৩২০ টাকা ও একটা ছোরা ১৩০ টাকা দিয়ে কিনলাম।
প্রিন্ট