ফরিদপুরের আলফাডাঙ্গায় এখন শোকের মাতম। উপজেলার কুচিয়াগ্রামের সেনা সদস্য মাহামুদুল হাচান রনির ৪র্থ শ্রেণির স্কুল পড়ুয়া মেধাবী ছাত্র মুস্তাফিজুর রহমান রেফাত ওরফে মেহেদী ও তার স্ত্রী বিউটি পারভিন নিহতের ঘটনায় শোকে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন পিতাসহ গোটা এলাকাবাসী। মাহামুদুল হাচানের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। সান্তনা দিতে আসা প্রতিবেশীরাও অশ্রুসিক্ত। শনিবার রাতে ছেলে-স্ত্রীর মরদেহ বাড়িতে আসার পর কান্নার রোল উঠেছিল বাড়িতে। উপজেলার সালেহা একাডেমীর ৪ র্থ শ্রেণিতে ক্লাসে মেহেদী প্রথম হয়েছিল।
জানা যায়, নিহত রিফাতের নানী অসুস্থ তছলিাম বেগমকে রাজধানীর ন্যাশনাল ইনষ্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সস ও হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে রিফাতের মা বিউটি বেগমসহ নানা ও খালা বাড়ির ৮ জন সদস্য ঢাকা থেকে এ্যাম্বুলেন্স রওনা হলে শনিবার সকাল ১১ টার দিকে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সেপ্রেসওয়ের ভাঙ্গার মালিগ্রাম এলাকায় এ্যাম্বুলেন্সটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রাস্তার ডিভাইডারে ধাক্কা লেগে উল্টে যায়। ঘটনাস্থলে দগ্ধ হয়ে মারা যায় তাছলিমার বেগমসহ সাতজন। অন্য পাঁচ সদস্যর বাড়ি বোয়ালমারীতে হলেও মুস্তাফিজুর রহমান মেহেদী ও তার মাতা বিউটি পারভিনের বাড়ি আলফাডাঙ্গা উপজেলার গোপালপুর ইউনিয়নের কুচিয়াগ্রামে।
প্রতিবেশী এমদাদুল হক জানান, মেহেদী অনেক মেধাবী ছিলেন, ছাত্র ভালো থাকায় উপজেলার একটি স্কুলে পড়ালেখা করাতেন। তার মা বিউটি বেগম সাথে নিয়ে যেতেন। দুইজনের মৃত্যুর কথা সুনে গতকাল থেকে রাতে ঘুমাতে পারছিনা। মেহেদীর পিতা মাহামুদুল হাচান রনি সেনা বাহিনীতে চাকুরী করে। সে এখন কথা বলতে পারছেনা, বোবা হয়ে গেছে। আমরা তাদের অনেক শান্তনা দিচ্ছি।
সালেহা একাডেমির প্রধান শিক্ষক নজরুল ইসলাম বলেন, আমাদের বিদ্যালয়েল ৪ র্থ শ্রেনির মেধাবী ছাত্র মুস্তাফিজুর রহমান রিফতা তার মা ডাকতেন মেহেদী। গত বছর তার মা-বাবা আমাদের বিদ্যালয়ে ভর্তি করেন। তার মা বিদ্যালয়ে নিয়ে আসতেন। তাদের স্বপ্ন ছিল ছেলেকে বড় অফিসার বানাবেন। আমাদের বিদ্যালয়ের একজন মেধাবী ছাত্রকে অকালে হারালাম। সুনেছি তার মাসহ সাতজন এ্যাম্বুলেন্স আগুনে পুড়ে মারা গেছে। আমাদের বলার কোনো ভাষা নেই। আমাদের স্কুলে শোকের ছায়া নেমে এসেছে।
ছেলে ও মায়ের লাশ শনিবার রাত ১০ টার দিকে কুচিয়াগ্রামের বাড়িতে আনা হয়। রোববার সকালে কুচিয়াগ্রাম কবরস্থানে তাদের লাশ দাফন করা হয়।
প্রিন্ট