ফরিদপুরের বোয়ালমারীতে উপজেলা বিএনপির যৌথ কর্মীসভা পুলিশের বাধায় পণ্ড হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এসময় বিএনপির নেতাকর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল ছুঁড়লে পুলিশের সাথে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ঘটে। এতে বেশ কয়েকজন আহত হন। আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বিএনপি কর্মিসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারনে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হওয়ার আশঙ্কায় বিএনপির সভাটি বন্ধ করা হয়েছে বলে থানা পুলিশ জানিয়েছে। শুক্রবার (২৩ জুন) সকাল ১১ টায় পৌর সদরের পাঞ্জারী একাডেমি প্রাঙ্গনে এ ঘটনা ঘটে।
বোয়ালমারী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি খন্দকার রফিকুল ইসলাম কামাল মিয়ার সভাপতিত্বে কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার মাশুকুর রহমান (মাশুক)। বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির ফরিদপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক সেলিমুজ্জামান সেলিম, বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শাহ্ মো. আবু জাফর, সাবেক সংসদ সদস্য ও কেন্দ্রীয় কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম। প্রধান বক্তা ছিলেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির আহবায়ক অ্যাড. সৈয়দ মোদাররেস আলী ইছা। বিশেষ বক্তা ছিলেন ফরিদপুর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ. কে. এম কিবরিয়া স্বপন। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. সিরাজুল ইসলাম ও পৌর বিএনপির সভাপতি শেখ আফসার উদ্দিনের সঞ্চালনায় কর্মী সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছিল।
জানা যায়, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে নিরদলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধিনে নির্বাচনের দাবিতে যুগপৎ আন্দোলন গড়ে তোলার লক্ষ্যে ত্যাগী নেতাকর্মীদের নিয়ে কমিটি গঠনের উদ্দ্যেশ্যে এ কর্মী সমাবেশের আয়োজন করে দলটি। এ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় জেলা নেতৃবৃন্দদের উপস্থিতে সকাল ১০টায় কর্মীসভা শুরু হয়। এসময় পুলিশ সভাস্থলে পৌঁছে সভাটি বন্ধ করার জন্য নির্দেশ দেন। এতে আগত নেতাকর্মীরা ক্ষিপ্ত হয়ে উঠলে পুলিশ ১০ মিনিট সময় বেধে দেয়। এ নিয়ে পুলিশের সাথে নেতাকর্মীরা তর্ক-বিবাদে জড়িয়ে পড়লে পুলিশ মৃদু লাঠিচার্জ করে। এসময় সভার বাইরে থাকা দলটির অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা সরকার বিরোধী শ্লোগান দিতে থাকলে তাদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এ সময় নেতাকর্মীদের সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সে সময় পুলিশকে লক্ষ্যে করে ইট পাটকেল ছুঁড়লে কয়েকজন পুলিশ সামান্য আহত হয়। এসময় সভাস্থলে থাকা নেতাকর্মীদের উপর লাঠিচার্জ করে পুলিশ। লাঠিচার্জে বোয়ালমারী পৌরসভার সাবেক মেয়র আব্দুস শুকুর শেখ, যুবদল নেতা ইমরান হোসেনসহ বেশ কয়েজন নেতাকর্মীরা আহত হন। তাদের স্থানীয় একটি ক্লিনিকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে বলে জানান বিএনপি নেতা খন্দকার নাসিরুল ইসলাম।
সাবেক সংসদ সদস্য ও কৃষকদলের সদস্য খন্দকার নাসিরুল ইসলাম জানান, একটি দলের ইঙ্গিতে পুলিশ আমাদের উপর হামলা চালায়। যুগপৎ আন্দোলন তৈরির লক্ষ্যে একটি শক্তিশালী কমিটি গঠনের উদ্দ্যেশ্যে আমরা কর্মী সমাবেশের আয়োজন করেছিলাম।
এ ব্যপারে কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য শাহ্ মোহাম্মদ আবু জাফর বলেন, পুলিশের থেকে পূর্ব অনুমতি নেওয়ার পরেও আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে সরকারের লাঠিয়াল বাহিনী পুলিশ অতর্কিত হামলা চালিয়ে বন্ধ করে দিয়েছে। পুলিশের লাঠিচার্জে আমাদের নেতাকর্মীরা আহত হয়েছে।
- আরও পড়ুনঃ মাগুরায় বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৪ তম প্রতিষ্ঠা বার্ষিকী উপলক্ষ্যে বর্ণাঢ্য র্যালি ও আলোচনা সভা
বোয়ালমারী থানার ওসি মুহাম্মদ আব্দুল ওহাব বলেন, আওয়ামীলীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর দিনে বিএনপি কর্মিসভা করার সিদ্ধান্ত নেয়ার কারনে আইন শৃঙ্খলার অবনতি ঘটার আশঙ্কায় অনুষ্ঠান বন্ধ করতে বলা হলেও বিএনপির নেতাকর্মীরা অনুষ্ঠান চালিয়ে গেলে সভাটি বন্ধ করে দেয় পুলিশ। সেখানে কাউকে লাঠিপেটা করা হয়নি।
প্রিন্ট