অবশেষে নিখোঁজের পাঁচদিন পর আটলান্টিক মহাসাগরে টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছে মিলেছে ডুবোযান টাইটানের ধ্বংসাবশেষ। এ ঘটনায় আরোহী পাঁচজনেরই মৃত্যুর আশঙ্কা করা হচ্ছে। এদের মধ্যে রয়েছেন পাকিস্তানি টাইকুন শাহজাদা দাউদ (৪৮) ও তার ছেলে সুলেমান (১৯)।
এই অভিযানে অংশ নেওয়া অন্য আরোহীরা হলেন- ব্রিটিশ ব্যবসায়ী হামিশ হার্ডিং (৫৮), টাইটান প্রস্তুতকারী কোম্পানি ওশনগেটের শীর্ষ নির্বাহী স্টকটন রাশ (৬১) এবং সাবমেরিনটির চালক ও ফরাসি নৌবাহিনীর সাবেক কর্মকর্তা পল হেনরি নারগিওলেট (৭৭)। ডুবোযানটির পাইলট ছিলেন স্টকটন রাশ নিজেই। তবে এ অভিযানে অংশ নেওয়া প্রত্যেক অভিযাত্রীর মাথাপিছু ব্যয় হয়েছে আড়াই লাখ ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় ২ কোটি ৭১ লাখ টাকা)।
বিলাসী এ ভ্রমণে দুর্ঘটনার পর আলোচনায় উঠে এসেছেন পাকিস্তানি ধনকুনের ও তার ছেলে। অনেকের মধ্যে জানার কৌতূহল তৈরি হচ্ছে- কে এই শাহজাদা দাউদ ও সুলেমান দাউদ?
ব্রিটিশ গণমাধ্যম ইন্ডিপেন্ডেন্টের খবরে বলা হয়, ৪৮ বছর বয়সি ব্রিটিশ ব্যবসায়ী শাহজাদা দাউদ পাকিস্তানের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিদের একজন। যিনি ব্রিটিশ দাতব্য সংস্থা প্রিন্স ট্রাস্ট ইন্টারন্যাশনালের বোর্ডের একজন ব্যবসায়িক উপদেষ্টা ছিলেন।
১৯৯৮ সালে বাকিংহাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে অধ্যয়ন করেন শাহজাদা দাউদ। এরপর ২০০০ সালে ফিলাডেলফিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে টেক্সটাইল মার্কেটিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।
ইন্ডিপেন্ডেন্ট আরও জানিয়েছে, শাহজাদা দাউদের বাবা ৭৯ বছর বয়সী হুসেন দাউদ পাকিস্তানি সার ফার্ম এনগ্রো করপোরেশনের চেয়ারম্যান। এ কোম্পানির ভাইস চেয়ারম্যান পদেও রয়েছেন শাহজাদা। এর পাশাপাশি তিনি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ছিলেন।
একসঙ্গে ভাই ও ভাইয়ের ছেলেকে হারিয়ে অনেকটা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন শাহজাদার ভাই আজমি দাউদ। তিনি বলেছেন, ‘আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। এটি একটি অবাস্তব পরিস্থিতি।’
‘আমার মনে হচ্ছে আমি খুবই ভয়াবহ ছবিতে আটকে গেছি। একটি গণনার সঙ্গে। কিন্তু আপনি জানেন না আপনি কি গণনা করছেন। ব্যক্তিগতভাবে যখন আমি তাদের কথা চিন্তা করি আমার শ্বাস নিতে কষ্ট হয়।’
এদিকে দীর্ঘ ৭২ ঘণ্টার উদ্ধার অভিযান শেষে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ড স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) জানায়, ছোট ডুবোযান টাইটান সমুদ্রে ডুব দেওয়ার পরই বিস্ফোরিত হয়। এরপর এটি ছিন্নভিন্ন হয়ে যায়। যার ধ্বংসাবশেষ সমুদ্রের নিচে টাইটানিক জাহাজের পাশে গিয়েই পড়ে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার (২২ জুন) বোস্টন শহরে এক সংবাদ সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের কোস্টগার্ডের রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মুগের বলেন, তারা টাইটানিক জাহাজের ধ্বংসাবশেষের কাছেই অপর একটি ধ্বংসাবশেষের খোঁজ পান। সেখানে ডুবোযান টাইটানের পাঁচটি বড় অংশ পাওয়া যায়। আর এসব অংশ দেখে নিশ্চিত হওয়া গেছে, পানির নিচে যাওয়ার পর এতে বিস্ফোরণ হয়েছিল।
প্রিন্ট